ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বুদ্ধদেবের উপস্থিতিতে মোদি-মমতাকে হটানোর ডাক বামদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
বুদ্ধদেবের উপস্থিতিতে মোদি-মমতাকে হটানোর ডাক বামদের বামদের ব্রিগেড সমাবেশ

কলকাতা: একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদী। দুই দিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে, রোববার(৩ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সভা থেকে ঘুরে দাঁড়াবার শপথ নিলো পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম সহ বামদলগুলো। যদিও ভোটের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ এবং গোটা দেশেই ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে বামেরা। তথাপি ভারতের লোকসভা (জাতীয় নির্বাচন) নির্বাচনের আগে কলকাতার বিগ্রেডের জনসভায় বিপুল জনসমাগম তাদের পালে কিছুটা হাওয়া দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি রোববারের জনসভা থেকে বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দুই জুলুমবাজ সরকার। এরা একে অপরের সহযোগী।

 

এছাড়া বামেদের ব্রিগেড থেকে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে একযোগে আক্রমণ করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র৷ বক্তব্যের শুরুতেই তার কথায় ১৯ জানুয়ারী তৃণমূলের ব্রিগেডের প্রসঙ্গ উঠে আসে৷ তিনি বলেন এখানে একটা ব্রিগেড হয়েছিল, তাতে প্রায় ২৩জন বক্তা ছিলেন৷ আজ একটা ব্রিগেড, যেখানে ৯ জন বক্তা৷ কিন্তু শোনার লোক দ্বিগুণেরও বেশি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোপন বিজেপি প্রীতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেন সূর্যকান্ত মিশ্র৷ এছাড়া তিনি বলেন, ধ্বংসের পথে পশ্চিমবঙ্গ৷ এর থেকে যদি নিজেদের বাঁচাতে হয়, মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে৷ এটা জনগণের ব্রিগেড৷ 

৩৪ বছরের বাম জামানার পতন তার আমলেই৷ তবুও বামেদের অস্তিত্ব রক্ষার ব্রিগেডের সেরা আকর্ষণ হয়ে উঠলেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ লাল পতাকা আবৃত মাঠে দুধ সাদা অ্যামবাসাডার প্রবেশ করতেই লাল সেলামে মুখরিত হল ব্রিগেড ময়দান৷ গাড়ি ঘিরে উপচে পড়ল ভিড়৷ ঠিক যেন নতুন অক্সিজেনের সন্ধান পেলেন হতোদ্যম বাম নেতা-কর্মীরা৷ গাড়ির মধ্যে থেকেই হাত নাড়লেন বছর ৭৪-এর বুদ্ধবাবু৷ চারদিকে করতালি৷ সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে একবারের জন্য ছুঁয়ে দেখার ভিড়৷

মেঠো পথ পেরিয়ে বুদ্ধদেবের গাড়ি ক্রমশ এগিয়ে আসছে মঞ্চের দিকে৷ আনন্দের জোয়ার সর্বত্র৷ তাকে স্বাগত জানাতে হাজির  সুজন চক্রবর্তী, ফুয়াদ হালিম, মহম্মদ সেলিমের মত বাম নেতৃত্বরা৷ চারদিকে আওয়াজ একটাই৷ লাল সেলাম, লাল সেলাম৷ 

মানুষ তখন ছুটছে বুদ্ধ দর্শনে৷ কিন্তু না৷ সবার সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি৷ গাড়ির চারপাশে পার্টির কর্মীদের দেখে আবেগ তাড়িত মধ্য সত্তরের মানুষটিও৷ হাত নাড়লেন গাড়ির মধ্যে থেকেই৷ ভরসা দিলেন তিনি আছেন লড়াইতে, মেহনতি মানুষের পাশে৷ কে বলবে ২০১১ সালে এই মানুষটিকেই দায়ী করা হয়ছিল ৩৪ বছরের বাম সাম্রাজ্য পতনের জন্য৷ কঠিন সময়ে সে কথা মনে করতে রাজি নয় কেউ৷

তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে গাড়ি থেকে নামেননি সাবেক মুখ্যমন্ত্রী৷ ভাষণ শুনেছেন গাড়িতে বসেই৷ প্রায় ঘন্টাখানেকের উপস্থিতির পর তিনি ফিরে যান বাড়িতে৷ তবে তার উপস্থিতি এখনো যে বাম নেতা, কর্মীদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ রোববারের ব্রিগেডের জনসভা তা ফের প্রমাণ করলো৷

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।