ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ফণীর কারণে মমতার জনসভা বাতিল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
ফণীর কারণে মমতার জনসভা বাতিল খড়গপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর দিকে নজর রাখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: উড়িষ্যা লণ্ডভণ্ড করে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। বিকেলে কলকাতায় আছড়ে পড়বে শক্তিশালী এ ঝড়। ফণীর জেরে সব রাজনৈতিক সভা বাতিল করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দফায় দফায় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি।

লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চম দফার আগে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী শুক্রবার (০৩ মে) ও শনিবার (০৪ মে) দুই মেদিনীপুরে একাধিক জনসভা করার কথা ছিলো তার।

 

শুক্রবার তারকা প্রার্থী দেবের সমর্থনে ঘাটালে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা করার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাতিল হয়েছে শনিবারের মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের সভাও। ফণীর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোর মধ্যে মেদিনীপুরেই ক্ষতির সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

বর্তমানে মেদিনীপুর জেলার খড়গপুরে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই ‘ফণী’ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তিনি। বেশ কয়েকদিন ধরে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি।  

পরিস্থিতি অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, তাদের নির্বাচনী সভাগুলোও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে বাতিল না হয় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।  

এদিকে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে একই পথে হেঁটেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও।

রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, খড়গপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় জেলাগুলোর দিকে নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় নজর রাখছেন পৌরমন্ত্রী মেয়র ফিরহাদ হাকিম।  

সূত্র জানায়, ‘ফণী’ মোকাবিলায় জোরদার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জারি করা হয়েছে একাধিক সতর্কবার্তা। সরকারি স্কুলগুলোতে ইতোমধ্যে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে তৈরি রয়েছে কন্ট্রোল রুম। বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেনের সূচি। দমদম বিমানবন্দরে বাতিল হয়েছে সব ফ্লাইট। নজিরবিহীন ভাবে কলকাতায় বন্ধ করা হয়েছে ট্রাম চলাচলও।

কলকাতার বেশ কয়েকটি পুরনো বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের বের করে আনা হয়েছে।  

শুক্রবার (০৩ মে) সকাল থেকেই কলকাতার রাস্তাঘাটে যানবাহন কিছুটা কম চলছে। সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ে হাজিরা স্বাভাবিক থাকলেও যানবাহন কম থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকেই।  

দূরপাল্লার বেশ কিছু ট্রেনের সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে লোকাল ট্রেনের সূচিও। ফলে অন্যান্য দিনের থেকে অনেকটাই ফাঁকা হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন।

খড়গপুর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সবাই সতর্ক থাকুন। এ দু’টি দিন রাজনীতির নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই একমাত্র কাজ। ভয় পাবেন না। বিপর্যয় মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।  

রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, গুজবে কান দেবেন না, খবরের দিকে নজর রাখুন। প্রকৃতির বিরুদ্ধে কিছু করা যায় না। তবু ঝড়ে একজনও যেনো মারা না যান সেদিকে রাজ্য সরকারের নজর আছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে ইতোমধ্যে উড়িষ্যায় ছয়জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এর পাশাপাশি আতঙ্ক বাড়িয়েছে ভূমিকম্প। শুক্রবার সকালে হিমাচল প্রদেশে ভূমিকম্প হয়েছে। তবে রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার এ ভূমিকম্পে প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।