ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৯
পশ্চিমবঙ্গজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী পশ্চিমবঙ্গজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে জামাইষষ্ঠী শনিবার (৮ জুন)। এইদিনে শাশুড়িমায়েররা তার মেয়ে-জামাই ও আত্মীয়-স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেন। জামাইষষ্ঠীতে ঘরে ঘরে চলে জামাই আদর। এই প্রথা একদিকে যেমন মঙ্গলজনক অন্যদিকে প্রথাটির সঙ্গে জুড়ে আছে লোকায়ত সংস্কার এবং ঐতিহ্য।

জামাইষষ্ঠীর সূচনা কিভাবে? তথ্য বলছে, প্রাচীনকাল থেকেই জামাইকে আপন করার চেষ্টা চালিয়ে যান শাশুড়িমায়েররা। জামাইয়ের হাতেই মেয়ের ভবিষ্যৎ।

তাই মেয়ে যাতে সুখে-শান্তিতে সংসার করতে পারে। পাশাপাশি দূর-দূরান্তে থাকা বিবাহিত মেয়েরা বছরে এইদিনটায় বাপের বাড়ি আসতেন জামাই সমেত। আর কিছু প্রথা মিলিয়ে দিনটি উদযাপন করা হয়। তবে বছরের এই একটি দিন জামাই বাড়ির ছেলে হয়। তারই চিহ্ন স্বরূপ হলুদ-দইয়ে ছোপানো সুতো তার হাতে বেঁধে দেওয়া হয়। ভেজানো পাখা দিয়ে জামাইকে বাতাস করা হয়। তারপরেই জামাইকে তুষ্ট করতে জ্যৈষ্ঠ মাসের আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের থালা তার হাতে তুলে দেওয়া। আর উপঢৌকন হিসেবে দেওয়া হয় উপহার।

যদিও আধুনিক নারীবাদীরা এই ব্যাখ্যা শুনে রে রে করে উঠতে পারেন, অভিযোগ করতে পারেন সমাজের চূড়ান্ত পুরুষতান্ত্রিকতার, তবুও একটি দিনের জন্য সেই অভিযোগ না হয় একটু এড়িয়ে যাওয়া যেতেই পারে। কারণ সবকিছুর পরেও জামাইষষ্ঠী পারিবারিক মিলনমেলার উৎসব।

জামাইষষ্ঠীর এই নিয়ম সম্পর্কে পুরাণ বলছে, ধান হলো বহু সন্তান-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্যের প্রতীক। একইসঙ্গে দূর্বা তারুণ্য আর সুস্বাস্থ্যের প্রতীক। তাই জামাইয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা করেই নাকি শাশুড়িমায়েররা সবশেষে ধান-দুব্বো দিয়ে দোয়া করতেন জামাইকে। ভেজা পাখার বাতাস করা হতো, যাতে জামাইয়ের শরীর ঠাণ্ডা হয়। তখন তো আর এসির ব্যবস্থা ছিলো না। আর হলুদ-দই মঙ্গল বা শুভ শক্তির প্রতীক। বাকি ফলের থালা। পাঁচ ধরনের ফল জামাইয়ে হাতে তুলে দেওয়ার অর্থ ফলবান হোক জামাই। তবে সে যাক আজ এতো সব রীতিনীতি মানে না বঙ্গবাসী। তবু রীতি অনুযায়ী দিনটায় জামাইয়েরা হানা দেবেন শ্বশুরবাড়িতে। শুধু কিছু নিয়ম থাকে জামাইয়ের পক্ষ থেকে। জামাইদের বছরেরর অন্যান্য উৎসবে শ্বশুরবাড়ির উপহার বাধা ধরা থাকলেও এইদিনে খালি হাতে প্রবেশ নিষেধ। শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য উপহারসহ আরও কিছু ক্রিয়াচার থাকে জামাইদের।

তবে দু’পক্ষের আদর সমাদরে লাভ হয় বিক্রেতাদের। দিনটাতে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আগুন। এর নির্যাস, সকাল থেকেই বাজারে ভিড়। কলকাতার প্রতিটি বাজারে তিল ধারণের জায়গা নেই। সাধ্যের মধ্যেই জামাই আদরের আয়োজন চলছে। মাছ, মাংস থেকে ফল, সবকিছুরই দাম একেবারে ঊর্ধ্বমুখী। আছে জামাইষষ্ঠী স্পেশাল মিষ্টি। তবে এর মধ্যেও ঘরে ঘরে বেজে উঠছে শাঁখের আওয়াজ। এই বিশেষ দিনে পারিবারিক মিলনমেলায় পশ্চিমবঙ্গে চলছে জামাইষষ্ঠী উৎসব।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৯
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।