ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ওপারের পাঠকের নজর বাংলাদেশি বইয়ে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
ওপারের পাঠকের নজর বাংলাদেশি বইয়ে

সল্টলেক (কলকাতা) থেকে: ২০১৪ সালে যখন প্রথম কবিগুরুর স্মৃতিধন্য শান্তি নিকেতনে পা রাখি, তখন বাংলাদেশ ভবন হয়নি। যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও, সময়ের স্বল্পতায় শান্তি নিকেতনমুখী হওয়া সম্ভব নয়। তবে শান্তি নিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের দেখা হয়ে গেল কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা প্রাঙ্গণে। 

এবারের মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ ভবনের আদলে। যেখানে মূর্ত হয়ে আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় পা রেখেই প্রথম গন্তব্য ছিল বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। ছুটির সেই সন্ধ্যায় দারুণ ভিড় জমেছিলো সেখানে। সোমবারও (০৩ ফেব্রুয়ারি) একই দৃশ্য।

মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে পৌঁচ্ছে মন ভালো হয়ে গেল। এ যেন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলমান অমর একুশে গ্রন্থমেলার ‘বনসাই’। ক্ষুদ্র পরিসরে বিশাল আয়োজন।  

আগেই জানিয়েছি, প্যাভিলিয়নটি তৈরি করা হয়েছে শান্তি নিকেতনে অবস্থিত বাংলাদেশ ভবনের আদলে। যেখানে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের আয়োজনের ক্ষণগণনার ঘড়িটিও।

বাংলাদেশি বইয়ের স্টলে পাঠক-দর্শনার্থীদের ভিড়।  ছবি: বাংলানিউজখবর নিয়ে জানা গেল, তিন হাজার ৬০০ বর্গফুট এলাকা নিয়ে এবারের বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন তৈরি করা হয়েছে। প্যাভিলিয়নের ভেতর ৪১টি স্টল। যাতে আটটি সরকারি ও ৩৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মিলিয়ে মোট ৪৩টি প্রকাশনা সংস্থা কলকাতা বইমেলায় অংশ নিয়েছে।  

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে দাঁড়িয়ে কথা হচ্ছিল নিউ টাউনের বাসিন্দা অরুনাভ রায়ের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বই সব সময়ই পাওয়া যায়। মেলা থেকে না কিনতে পারলে কলেজ স্ট্রিটে ঢুঁ মারলে সহজেই কেনা যায়। কিন্তু বাংলাদেশি লেখকদের বই পাওয়া কঠিন। সেজন্য প্রতিবারই মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন থেকে বই কিনি।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন স্টলে ঘুরতে দেখা হয়ে গেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শফি আহমেদের সঙ্গে। তিনি বললেন, এখানে এসেছি অন্য একটা কাজে। কিন্তু বইমেলা চলছে, এমন সময় এখানে তো আসতেই হয়। আর এসে মনটা ভালো হয়ে গেল। পশ্চিমবঙ্গের মানুষের বাংলাদেশের বইয়ের প্রতি এত আগ্রহ। এটা আসলে সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মূল সুর।

বাংলাদেশি বইয়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে কলকাতায়- এমন তথ্য জানালেন মেলার আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশু শেখর দে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, প্রতি বছরই বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নকে ঘিরে পাঠকের চাহিদা থাকে। এবারেও তেমনটি হচ্ছে।

‘পশ্চিমবঙ্গের লেখকদের বই যেমন বিক্রি হচ্ছে, বাংলাদেশি লেখকদের বইও কিন্তু দারুণ বিক্রি হচ্ছে। বাংলাদেশের অভিধানের প্রতি সব সময়ই কলকাতার মানুষের আগ্রহ থাকে। ’

তিনি বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ, হাসান আজিজুল হক, আল মাহমুদ, আনিসুল হক, শামসুর রহমানের বই দারুণ বিক্রি হয় বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর লেখা বই ও তাকে নিয়ে লেখা বইয়ের প্রতি নজর রেখেছেন কলকাতার পাঠকেরা। ’

 সুধাংশ শেখর জানালেন, মেলার সমাপনী দিনে, অর্থাৎ ৯ ফেব্রুয়ারি মেলা প্রাঙ্গণে পালন করা হবে বাংলাদেশ দিবস। এদিন ‘মুজিববর্ষে বদলে যাওয়া বাংলাদেশকে চিনুন’ শিরোনামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। যাতে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
ডিএন/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।