পিকে একজন পেশাদার কনসালট্যান্ট। আসন্ন ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ফের ক্ষমতা ধরে রাখতে এই পিকে’র সাহায্যই নিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমুল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে শেষবার ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বারের মতো দিল্লি দখল করেছিলেন কেজরিওয়াল। সেবার ৭০ আসনের মধ্যে ৬৭টিই পেয়েছিল তার দল। কিন্তু তারপরই দিল্লির পৌরসভা ভোটে বিজেপির কাছে ভয়ঙ্করভাবে পরাজিত হয় কেজরিওয়ালের আম আদামি পার্টি। এমনকি ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে দিল্লির সাতটি কেন্দ্র জয় করে বিজেপি। পড়তি এই অবস্থা থেকে কেজরিওয়ালের দলকে টেনে তুলেছেন পিকে ওরফে প্রশান্ত কিশোর।
পিকের পরামর্শেই ভোটের আগে আম আদমি পার্টি নিজেদের সব ক্যাম্পেইনেই কেজরিওয়ালকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা চালায়। পাশাপশি প্রশান্তর পরামর্শ ছিল, সব ব্যাপারে সংঘাতে যাওয়ার মানসিকতা ছাড়তে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টার্গেট করা চলবে না। তাতে বরং মোদীরই প্রচার বাড়বে। মোদীর বিরুদ্ধে সুর না চড়ালে লোকসভা ভোটে যারা মোদীকে ভোট দিয়েছিলেন, বিধানসভায় তাদের একাংশের ভোট যেতে পারে আম আদমি পার্টির ঝুলিতে। সম্ভাব্য সেই ভোটারদের মোদীর বিরুদ্ধে কথা বলে রুষ্ট করা চলবে না। আম আদমি পার্টির নির্বাচনী প্রচারণাতেও তাই দেখা যায় মোদীর বিরুদ্ধে স্বর চড়াননি কেজরিওয়াল।
এছাড়া নিরাপত্তার সূত্রে সিসিটিভি ব্যবস্থাপনা, বিনামূল্যে বাসে যাতায়াতের প্রতিশ্রতিসহ এ দলকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণের পরামর্শ দিয়েছিল পিকে। পিকের উপদেশ ছিল প্রধানমন্ত্রীর মতোই আইকন হিসেবে তুলে ধরতে হবে কেজরিওয়ালকে। এবং ভোটের প্রচারে বিজেপির হিন্দুত্বের রাজনীতির পাল্টা উন্নয়ন ও বিকাশ নিয়ে প্রচার চালাতে হবে।
পিকের এসব পরামর্শের সুফল পেয়েছে আম আদামি পার্টি। ফলে সদ্য সমাপত নির্বাচনে ৬২ আসন নিয়ে দিল্লির ক্ষমতায় ফিরেছেন কেজরিওয়াল।
প্রশান্ত কিশোরের হাতে সামনে আরও দুই রাজ্যে তেলেসমাতি দেখানোর দায়িত্ব পড়েছে। এর একটি পশ্চিমবঙ্গ, অন্যটি তামিলনাড়ু।
২০২১ সালে আসছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন। এরই মধ্যে এ রাজ্যে বিজেপির অবিশ্বাস্য উত্থান হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে ক্ষমতাসীন তৃণমূলের জন্য। রাজ্যে বিজেপির সংসদ সংখ্যা ২ থেকে এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮তে। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের ১২টি আসন কমে গিয়ে হয়েছে ২২। পাশাপাশি তৃনমূল দলে ভাঙনও ধরেছে। সার্বিক প্রেক্ষাপটে ফের ক্ষমতায় যেতে নতুন করে দাবার চাল চালতে হবে মমতার তৃণমূলকে। আর সেই লক্ষ্যেই মমতা পিকের শরণাপন্ন হয়েছেন। যদিও প্রকাশ্যে এ নেত্রী এসব কথা বলে বেড়ান না।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
ভিএস/এইচজে