ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

‘নো ভ্যাকসিন, নো স্কুল’, দাবি ভারতীয় অভিভাবকদের

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৮ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২০
‘নো ভ্যাকসিন, নো স্কুল’, দাবি ভারতীয় অভিভাবকদের

কলকাতা: ভারতে চলছে পঞ্চম দফার লকডাউন। তবে অনেকটাই শিথিল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশ। খুলেছে অফিস-কাছারি, দোকানপাঠসহ অনেক কিছু। পথে নেমেছে সরকারি-বেসরকারি বাসও। এরইমধ্যে ফের স্কুলগুলো খোলার বিষয়েও জল্পনা শুরু হয়ে গেছে রাজ্যের শিক্ষামহলে।

ঠিক কবে থেকে স্কুলের গেট খুলবে, এখনও তা ঠিক হয়নি। তবে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, এ বছরের জুলাই থেকে ফের স্কুলগুলো খুলে যেতে পারে।

এমন সম্ভাবনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র আপত্তি জানাতে শুরু করেছে দেশটির অভিভাবক মহলের একাংশ। তাদের দাবি, ‘করোনা সংক্রমণের হার যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন স্কুলে সন্তান পাঠানো মানে আগুনে ঘি ঢালার সমান’।

ফলে দেশজুড়ে অভিভাবকদের একটি সংগঠন তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিসহ দেশটির একাধিক রাজ্যের অভিভাবকরা মিলিত হচ্ছেন এই সংগঠনে। সংগঠনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’।

ওই সংগঠন সম্প্রতি দেশজুড়ে অনলাইনে অভিনব প্রচার শুরু করেছে। তাদের দাবি, এমন অবস্থায় কোনোভাবেই জুলাই থেকে স্কুল খোলা যাবে না। পরিবর্তে যেরকম ভার্চ্যুয়াল ক্লাস বা ডিজিটাল ক্লাস চলছে, সেরকমই চলুক। তাদের দাবি স্লোগান, ‘নো ভ্যাকসিন, নো স্কুল। ’ অর্থাৎ যতদিন না ভ্যাকসিন বের হবে, ততদিন স্কুল খোলা যাবে না।

গত ০১ জুন থেকে এই প্রচারের পক্ষে ভারতজুড়ে অনলাইনে জনমত গড়ছেন উদ্যোক্তারা। এই ক’দিনে প্রায় সাড়ে চার লাখ অভিভাবক তাদের দলে নাম লিখিয়েছেন।

এই সংগঠনের অন্যতম উদ্যোক্তা রাজীব রাঠোরের কথায়, ‘অনলাইন ক্লাস বা ই-লার্নিং পদ্ধতির সঙ্গে শিক্ষার্থীরা মানিয়ে নিয়েছে। এ অবস্থায় আচমকা স্কুল খোলার কোনো অর্থ নেই। শুধু গত ১৫ দিনে প্রায় এক লাখ মানুষ দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফ সর্বত্রই ঊর্ধ্বমুখী। স্কুলে আমাদের সন্তানরা অবাধে মেলামেশা করবে। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল। আগুন নিয়ে খেলার ভাবনা বন্ধ হোক। ’

এই সংগঠনে কলকাতারও অনেক অভিভাবক যোগ দিয়েছেন। শুভেন্দু মাইতি নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘কোনো অবস্থাতেই সন্তানদের জীবন নিয়ে কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে পারি না। গত তিনমাস সর্বত্রই অনলাইন ক্লাস চলেছে। আগামীতেও কিছুদিন তাই চলুক। ’

প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশনে কলকাতার এক সদস্য স্পষ্টতই সরকারের বিরোধীতা করে বলেছেন, ‘আগে সরকার সংসদ খুলুক। ঝুঁকি নিয়ে বসুক পাশাপাশি। তারপর আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর কথা ভাববেন। আমাদের সন্তানরা কেউ গিনিপিগ নয়। ’

তবে রাজ্য সরকারের শিক্ষাপর্ষদের এক কর্তার কথায়, ‘সরকারিভাবে এখনই স্কুল খোলার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। চীনসহ কিছু দেশে স্কুল খুলেছে। তবে চরম সতর্কতা অবলম্বন করেই ক্লাস হচ্ছে ওই সব দেশে। এখানেও তেমনই করার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে তা সরকারি পর্য়ায়ে। বেসরকারি স্কুল নিয়ে ওইসব স্কুলের কর্তৃপক্ষরাই ভাববেন। ’

রাজ্য সরকার পক্ষ থেকে এহেন দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্যের পাশাপাশি এ বিষয়ে কিছুটা দোলাচলে আছে কেন্দ্রীয় সরকারও। ফলে করোনাকালে দিন দিন ভারতজুড়ে দানা বাঁধছে প্যারেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২০
ভিএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।