ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

ত্রিপুরায় প্রথমবার হবে বন্য হাতির সংখ্যা জরিপ

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৬ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২০
ত্রিপুরায় প্রথমবার হবে বন্য হাতির সংখ্যা জরিপ ফাইল ছবি

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা রাজ্যের বন্য হাতির সংখ্যার জরিপ এবং তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া আবাস পুনরায় তৈরির লক্ষ্যে বন দফতর বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে। এজন্য অন্য রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হবে হাতি বিশেষজ্ঞ দল।

বাংলানিউজকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা জানালেন ত্রিপুরা সরকারের বন ও জনজাতি কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া।

প্রায় ৬৫ শতাংশের বেশি বনভূমিত ও পাহাড়ি এলাকায় ঘেরা উত্তরপূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের জঙ্গলে অন্যান্য বন্যপ্রাণীর সঙ্গে রয়েছে বন্য হাতিও। রাজ্যের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অনেকেই এখন পাহাড়ি এলাকায় ঘর-বাড়ি তৈরি করে বসবাস ও চাষবাস করছেন। এর ফলে বন্য হাতির প্রাকৃতিক বিচরণ ভূমি নষ্ট হয়েছে। তাই খাদ্যের খোঁজ করে প্রায়শই বন্য হাতি জনপদে চলে আসে এবং আক্রমণ চালায় বাড়ি-ঘরসহ ফসলের ক্ষেতে। ফলে হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

এমন ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে রাজ্যের খোয়াই জেলার অন্তর্গত কল্যাণপুর ঘিলাতলী, চেবরী, মহারানীসহ আশেপাশের বিভিন্ন জনপদে। মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই জেলার আঠারোমুড়া পাহাড় এবং তার আশেপাশের বনভূমিতে বন্য হাতিদের প্রাকৃতিক বিচরণ ক্ষেত্র রয়েছে। কিন্তু এই সকল এলাকায় এখন জনবসতি গড়ে ওঠায় হাতিদের বিচরণসহ খাবারের সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই বন্য হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসে। দীর্ঘকাল ধরে এই সমস্যা চলছে।

বন্য হাতি ও মানুষের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে তা দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে ত্রিপুরা সরকারের বন দফতর। কী করে হাতিদের প্রাকৃতিক আবাসকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা যায় এবং রাজ্যে বর্তমানে কতগুলো বন্য হাতি রয়েছে তা গণনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই প্রেক্ষিতে বন দফতর পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থান থেকে হাতি বিশেষজ্ঞ আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে এই দুই রাজ্যের অভিজ্ঞ বেশ কয়েকজন হাতি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে সরকার কথা বলেছে বলেও জানান মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বন্য হাতির গণনাসহ কী করে আবার হাতিদের প্রাকৃতিক আবাস ফিরিয়ে দেওয়া যায় সেই বিষয়ে কাজ শুরু হয়ে যেত। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে এই প্রক্রিয়া কিছুটা পিছিয়ে গেছে। তবে আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে বহিঃরাজ্যের বিশেষজ্ঞের একটি দল রাজ্যে এসে হাতি গণনা এবং আবাস সংক্রান্ত জরিপ শুরু করবে। এবারে প্রথম ত্রিপুরা রাজ্যের হাতি জরিপের কাজ করা হবে।

ত্রিপুরা রাজ্যের আঠারোমুড়া পাহাড়ের এলিফ্যান্ট করিডর তথা বন্য হাতির অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে চলে গেছে ৮ নম্বর জাতীয় সড়ক, যা আসাম হয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সড়কপথে ত্রিপুরাকে সংযুক্ত করেছে। এলিফ্যান্ট করিডোরের উপর দিয়ে চলে যাওয়া সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের নিরাপত্তায় বন দফতর থেকে ইতোমধ্যে করিডোরের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির গতিসীমা নিয়ন্ত্রণসহ সতর্কতা সম্বলিত সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২০
এসসিএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।