কলকাতা: প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে কলকাতার বাজারগুলোতে। গত সোমবার সন্ধ্যায় বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আসে বাংলাদেশের ইলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টম্বর) মহালয়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পূজার মৌসুম শুরু হলো। আর ইতোমধ্যে কলকাতার বাজারে পৌঁছে গেছে ৬ টন ইলিশ। ফলে করোনাকালকে উপেক্ষা করে উৎসবের আমেজে ভাতের পাতে ইলিশ পেতে তড়িঘড়ি করছেন কলকাতার বাঙালিরা। বাংলাদেশি রুপালি ফসলে আপ্লুত তারা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীতে ইলিশের জোয়ার এলেও পশ্চিমবাংলায় এবারও ইলিশের আকাল। ফলে রাজ্যের ইলিশ কলকাতাবাসীর চোখেই পড়েনি। আর তাই শহরবাসী অপেক্ষার প্রহর গুণছিল কবে মিলবে বাংলাদেশি ইলিশ। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনীতি যে জায়গায় গেছে তাতে সাধ আর সাধ্য দুটোকে এক জায়গায় বসানো যাবে না। চুম্বকের দুই মেরুর মতো তারা বিরাজ করছে একে অপরের থেকে।
কলকাতার বাজারে বাংলাদেশের যে ইলিশ এসেছে তার সাইজ ১ কেজি ২০০ গ্রাম থেকে ২ কেজি ওজনের। কেজি প্রতি দাম ১৭শ’ থেকে দুই হাজার রুপি। যা বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেকেরই সামর্থ্যের বাইরে।
তবুও কলকাতার বাজারে মিলছে বাংলাদেশের ইলিশ, একবার স্বাদ নিতে মধ্যবত্তিরা খুব একটা পিছপা হচ্ছেন না। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাট বাজারে ইলিশ কিনতে এসেছিলেন রজতাভ রায়। তার কথায়, বাংলাদেশের ইলিশ বলেই একবার কিনতে এসেছি, সবসময় ক্ষমতায় কুলাবে না।
গৃহিণী জয়ী বসু বলেন, পূজার মৌসুমে বাংলাদেশের ইলিশ এসেছে বলেই কিনছি। তবে যা দাম তাতে সবদিন কেনা সম্ভব হবে না। রোজ মাছ না খেলেও চলে। কিন্তু গৃহস্থর রোজ পেঁয়াজ লাগে, তার দাম কেন কমছে বলতে পারেন!
একইভাবে চিন্তিত পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বিমল সাহা। তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধ হলে পেঁয়াজের দর নামবে শুনলাম। কিন্তু নামছে কই?
বর্তমানে কলকাতার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ রুপি দরে। বলা হয়েছিল, সীমান্ত বন্ধ হলে আগের দামে চলে আসবে পেঁয়াজের মূল্য। অর্থাৎ ১৮ থেকে ২০ রুপি। কিন্তু এখনও দাম কমেনি। উল্টো ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দাম।
গত বছরও দুর্গা পূজার ঠিক আগে ৫০০ টন ইলিশ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। তখন কলকাতার বাজারে সেভাবে দেখা মেলেনি বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় এই মাছের। এবার ধাপে ধাপে আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত আসতে থাকবে ১৫শ’ টন ইলিশ। আর তাতেই বাংলাদেশের এই উপহার চোখে পড়ছে কলকাতার বাজারগুলোতে। যা পূজার মৌসুমে একবার হলেও কলকাতার বাঙালিরা হেঁশেলে তুলতে চান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০
ভিএস/এমজেএফ