ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বহিরাগত, ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২১
অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বহিরাগত, ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরে

কলকাতা: একঝাঁক টলিউড তারকা যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত দলের প্রার্থী তালিকায় দেখা গেছে প্রায় প্রত্যেকেই টিকিট পেয়েছেন বিধানসভা নির্বাচনে।

বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে টিকিট পেয়েছেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, এতেই ক্ষোভ বেড়েছে দলের অন্দরে।

২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই দলের প্রার্থী তালিকায় স্থান না পেয়ে ক্ষুব্ধ বাঁকুড়ার বিদায়ী বিধায়ক শম্পা দরিপা। শম্পা সমর্থকরা ভিড় করে তার বাড়ির সামনে। অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিরাগত বলে উল্লেখ করেছেন শম্পা। ক্ষোভ অভিমান উগরে দিয়েছেন তারা। দলের হয়ে কাজ না করার হুমকিও দিয়েছেন।

তবে এর আগে মমতা জানিয়েছিলেন এলাকায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যাদের আছে তারাই এবার টিকিট পাবেন। তাতেই এবার বাদ পড়েছেন ৬৪ জন বিধায়ক। আর এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে তৃণমূলের অন্দরে। এদের মধ্যে আবার বেশ কয়েকজন তো পুরনো দল ছেড়ে বিজেপিতে ভেড়ার চেষ্টাও শুরু করে দিয়েছেন। ফলে ভিড় বাড়ছে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের বাড়িতে।

নির্বাচনের টিকিট না পেয়ে শুক্রবার (০৫ মার্চ) সন্ধ্যাতেই দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন নলহাটির বিদায়ী তৃণমূল বিধায়ক মইনউদ্দিন শামস। শনিবার এই প্রবণতা আরও জোরালো হয়েছে। তৃণমূল ছাড়ছেন পুরশুড়ার বিধায়ক মহম্মদ নূরউজ্জামান। সাঁকরাইলের বিধায়ক শীতল সর্দারও। তবে একদা দাপুটে নেতা কলিমুদ্দিনের ছেলে মইনউদ্দিন শামস কোন দলে যোগ দেবেন তা স্পষ্ট করেননি।

প্রার্থী না করায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পুরশুড়ার বিধায়ক মহম্মদ নূরউজ্জামান ও সাঁকরাইলের বিদায়ী বিধায়ক শীতল সর্দার। সময় যত গড়াচ্ছে সেই তালিকা আরও লম্বা হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার কিছু পরই তৃণমূলের হিন্দিভাষী ভোটারদের দায়িত্বে থাকা দীনেশ বাজাজও দল ছেড়েছেন। সরাসরি জানান, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন তিনি।

পুরনো দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দীনেশ বলেছেন, পার্টি যখন আমায় টিকিট দেবে না, তখন আমি কি বসে থাকব! দলের দুর্দিনে আমি বিধায়ক ছিলাম। আর এখন আমিই টিকিট পাচ্ছি না। তিনি (মমতা) হিন্দিভাষীদের বহিরাগত বলছেন। এসবের পর আর তৃণমূলে থাকা যায় না।

মূলত মমতা হিন্দিভাষী বহিরাগত বলতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরই টার্গেট করেছিলেন। কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার পর সেই বহিরাগত এবং হিন্দিভাষী বহিরাগত ইস্যুই এখন বুমেরাং হয়েছে নেত্রীর দিকে। প্রসঙ্গত রাজ্যে প্রায় হিন্দিভাষী ভোটার আছেন ১৭ শতাংশ এবং মুসলিম সংখ্যালঘু ভোটার আছে ২৭ শতাংশের কিছুটা বেশি। যদি হিন্দিভাষী ভোট বিজেপিতে এবং সংখ্যালঘু ভোট বাম-কংগ্রেসে ঘুরে যায় তাহলে মমতার জন্য কঠিন হবে এবারের লড়াই। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখে যতই বলুক ‘খোলা হবে, জেতা হবে’ অথবা এবারের নির্বাচন স্মাইলি ইলেকশন। কিন্তু, আদপে যে কঠিন লড়াই তা তিনিও ভালো করে জানেন। আর সে কারণেই হয়তো হাজার পরিকল্পনা করে এবারের দলের প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এহেন পরিস্থিতে মুচকি হাসতে শুরু করেছে বিজেপি। তবে শেষ হাসি কারা হাসবে তা বোঝা যাবে ২ মে ভোট গণনার দিন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২১
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।