আগরতলা (ত্রিপুরা, ভারত): ঈদের খাদ্য তালিকার অপরিহার্য এক উপাদান হচ্ছে সেমাই। ঈদে প্রায় প্রতি ঘরেই থাকে এই খাবার।
আগরতলার আমতলী-খয়েরপুর বাইপাস রোডের নাগাছড়া এলাকার একটি কারখানায় গিয়ে দেখা যায় সেমাই তৈরির কাজে ব্যাস্ত সবাই। কেউ সেমাই তৈরির প্রধান উপাদান ময়দা প্রস্তুত করছেন, আবার কেউ কেউ মেশিনে এই ময়দাগুলি দিয়ে সেমাই তৈরি করছেন।
মেশিন থেকে ধবধবে সাদা রঙের চিকন সুতার মত সেমাই তৈরি হয়ে বেরিয়ে আসছে। সদ্য তৈরি কাঁচা এই সেমাইগুলি নিপুণ দক্ষতায় মেশিন থেকে সংগ্রহ করে মুহূর্তেই ছড়িয়ে দিচ্ছেন স্টিকের মধ্যে অনেকে। এরপর সেগুলিকে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন। আবার কয়েক জন নারী শ্রমিক এই শুকাতে দেওয়া সেমাইগুলি নেড়ে দিচ্ছেন এবং যেগুলো পুরোপুরি শুকিয়েছে বুঝতে পারছেন সেগুলোকে পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সব শেষে তৈরি হওয়া সেমাই ওজন করে প্যাকেটে ভরে সিল করে নিচ্ছেন দোকানে পাঠানোর জন্য। আবার ট্রাকে ভরে আসছে সেমাই তৈরির মূল উপাদান ময়দা।
মালিক তনয় সাহা বলেন, তার কারখানায় সেমাই, চাউমিনসহ অন্যান্য পণ্য তৈরি হচ্ছে। তবে সব চেয়ে বেশি তৈরি হচ্ছে সেমাই। অন্য সময় এর খুব চাহিদা থকে না। সারা বছরে যে পরিমাণ সেমাই তৈরি হয় তার চেয়ে অনেক বেশি তৈরি করা হয় ঈদের আগে। কারণ তখন সারা রাজ্যেই এর চাহিদা বেড়ে যায়। তাই এ সময় কারখানায় বেশি সময় কাজ হয় এবং শ্রমিকদের সংখ্যাও বাড়াতে হয়। এখন নারী¬পুরুষ মিলে তার কারখানায় মোট ২৫ জন কাজ করছেন। ঈদকে সামনে রেখে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক বেশি রাখতে হয়। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০কেজি পর্যন্ত সেমাই উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কারখানার বয়স ১২বছর হয়েছে। কোনো রকম রং ও কেমিক্যাল ছাড়াই স্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা কিছুটা প্রভাবিত হয়েছিল। তবে এবছর আবার চাহিদা বেড়েছে। আগামী দিনে আরও নতুন কিছু পন্যণ্য তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই কারখানায় প্রায় ১০বছর ধরে কাজ করছেন নারী শ্রমিক নীলু রায়। তিনি বলেন, এখানে কাজ করেই পরিবার চালাচ্ছি। বাড়ির পাশে কারখানা হওয়ায় অনেক সুবিধা হয়েছে। এখানে সারা বছর পাপড়, চাউমিন ইত্যাদি তৈরি হলেও ঈদ উপলক্ষে এখন সবচেয়ে বেশি তৈরি হচ্ছে সেমাই, কারণ এর চাহিদা বেশি। তাই একটু বেশি সময় কাজ করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল, ২০২২।
এসসিএন/এমএমজেড