সোমবার (২৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে রংপুরের তামাক চাষি ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবসায়ীদের আয়োজিত মহাসম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সম্মেলনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মতো বাংলাদেশেও বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা নির্ধারণসহ বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি ছাড়া তামাক চাষ কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না।
এরআগে গত ৩১ মার্চ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের কাছে ‘তামাক ও সিগারেট উৎপাদন বন্ধকরণ’ শিরোনামে একটি চিঠি লিখেছেন। চিঠিতে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিড়িশিল্প বন্ধ ও সিগারেট শিল্প বন্ধ করতে ২২ বছর সময় দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন। অর্থমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে আয়োজিত এ মহাসম্মেলনে তাদের দাবি উপস্থাপন এবং দাবি মেনে নেওয়া না হলে রাজধানীর রাজপথে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এছাড়া এর আগেও অর্থমন্ত্রীর বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সারাদেশে বিড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের তীব্র আন্দোলনের মুখে তিনি পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানায় বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, রংপুরের বেশিরভাগ চাষি তামাক চাষের সঙ্গে জড়িত। আর এই তামাক বিড়ি শিল্পের কাচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সেখানকার মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় তামাক ছাড়া অন্য কোনো ফসলের ভালো ফলন হয় না। তাই এসব চাষিদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া এই শিল্প বন্ধ করে দিলে আবার সেই মঙ্গা পরিস্থিতি ফিরে আসবে। তাছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অভিযোগ রয়েছে ২০০৯-১০ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত সিগারেট কোম্পানিগুলো ১৯২৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া বিগত ৮ বছরে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো ১৩ হাজার কোটি টাকার মতো পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারপরও তাদেরকে কোন যুক্তিতে ২২ বছর অতিরিক্ত সময় দিয়ে এ বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে?
নিলফামারী জেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হামিদুল হকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- রংপুর তামাক চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম তুহিন, সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম ফকির, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বিড়ি-সিগারেটের বৈষম্যমূলক শুল্কনীতি ও ভারত বাংলাদেশের বিড়ি শুল্কের তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপনের মাধ্যমে ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- বাংলাদেশে সিগারেট যতদিন থাকবে, বিড়ি শিল্পও ততদিন থাকবে। ভারতের ন্যায় বিড়ি শিল্পকে কুটির শিল্প হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। ভারতের ন্যায় প্রতি হাজার বিড়িতে শুল্ক ১৪ টাকা করতে হবে। যে সব বিড়ি ফ্যাক্টরি ২০ লাখ শলাকার কম উৎপাদন করে তাদের কাছ থেকে শুল্ক নেওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
এমএএম/জিপি