শনিবার (১৯ মে) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বিড়ি শ্রমিকদের প্রতিনিধি সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন নেতারা। গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভ এবং বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি’র সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ফজলুল হক, জাসদ দলীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল, সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমকে বাঙালী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, গবেষণা ও উন্নয়ন কালেকটিভের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস এ জান্নাত প্রমুখ।
সংসদ সদস্য ফজলুল হক বলেন, বিড়ি শিল্পের সঙ্গে একদম নিম্ন আয়ের মানুষ জড়িত। অর্থমন্ত্রী এই গরীব মানুষদের কেনো জানি হিংসার চোখে দেখেন। তিনি সিগারেটকে সুবিধা দিয়ে বিড়িকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না। যতো দিন এই দেশে সিগারেট থাকবে ততোদিন বিড়িও থাকবে। এই দাবি আমরা সংসদে উত্থাপন করব।
নাজমুল হক প্রধান বলেন, বিড়ির মালিকরা অবশ্যই কর দিতে চান। তবে সেই কর কোনোভাবেই বৈষম্যমূলক হলে চলবে না। বিড়ি বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করলে এই বিড়ি শ্রমিকরাই আগামী দুই বছরের মধ্যে অর্থমন্ত্রীকে বিদায় করবে। তাই বিড়ি বন্ধ না করে বিড়ির ওপর সহনীয় পর্যায়ে কর আরোপ করা হোক।
অধ্যাপক মেসবাহ কামাল অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেন, আপনি দুই বছরের মধ্য দেশ থেকে বিড়ি তুলে দিতে চাইছেন। বিড়ি যদি ক্ষতিকর হয়, তাহলে সিগারেট কেনো নয়? বন্ধ করতে হলে দুইটাই বন্ধ করুন।
বিড়ি শিল্প সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া চিঠি শ্রমিকদের উদ্দেশে পাঠ করে মেসবাহ কামাল বলেন, অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশ থেকে বিড়ি শিল্প বন্ধ করতে মালিকরা সম্মত হয়েছেন। তাই দুই বছরের মধ্যে বিড়ি বিদায় করা হবে। ’ অর্থমন্ত্রী ডাহা মিথ্যা কথা বলেছেন। বিড়ির মালিকরা এই সিদ্ধান্ত নেননি। তাছাড়া ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন ‘আগামী ২০ বছরের মধ্যে দেশ থেকে সিগারেট কোম্পানির ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সময় দেওয়া হচ্ছে। ’ আর তাদের সবকিছু গুটিয়ে নিতে আরও দুই বছর অর্থাৎ সিগারেটকে ২২ বছর সময় দেওয়া হচ্ছে আর বিড়িকে মাত্র দুই বছর।
তিনি বলেন, দেশীয় শিল্প ধ্বংস করে বহুজাতিক ব্রিটিশ টোব্যাকো কোম্পানির ‘দালালি’ করছেন অর্থমন্ত্রী। তার কথায় মনে হচ্ছে সিগারেট কোম্পানি তার ‘ভাসুর’ আর বিড়ি তার ‘শত্রু’। এই বৈষম্যমূলক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। আগামী ৭ জুন বাজেট পেশ করার পর যদি দেখা যায় বিড়ির ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপানো হয়েছে, তাহলে সারাদেশের বিড়ি শ্রমিকরা নিজ নিজ কারখানার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করবেন। আর আমরা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে ঈদের পর কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এসএম/টিএ