ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ

ঢাকা: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নানা আইন-কানুনে বস্তুগত সম্পদের মালিকানাটা নিজের রাখতে পারছি।

কিন্তু মেধাস্বত্ব আমরা এখনও নিজের করে রাখার ব্যাপারে যত্নশীল না। কপিরাইটের ব্যাপারে নিজেদের অনেক অনাগ্রহ লক্ষ্য করছি। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।  

ইনোভেশন ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইনোভেশন সংরক্ষণের বিকল্প নেই।  

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীল গুলশানে রবি আজিয়াটা প্রধান কার্যালয়ে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোটার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এবং দেশের অন্যতম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড আয়োজিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের গুরুত্ব শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রবির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, মেধাসম্পদ সংরক্ষণে সংশ্লিষ্টদের হয়রানি কমাতে এবং আগ্রহ বাড়াতে সংস্কৃতি ও শিল্প মন্ত্রণালয় নয়, একক আইপি অফিস থাকা উচিত। যেখানে এক সঙ্গে কপিরাইট ও প্যাটেন্ট সনদ নেওয়া যাবে।  

তিনি বলেন, বই, নাটক, সিনেমা ছাড়া ১৯৯৮ সালে ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও) কাউকে খুঁজে পাচ্ছিলো না মেধাসম্পদের। যারা মনে করছেন মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের ফলে তারা কোনো সুবিধা পাবেন না- তা ঠিক নয়। যেমন রবি এতোদিন যে পরিশ্রম করে নিজেদের ভেল্যু দাঁড় করালো, তার কোনো ট্রেড মার্ক থাকবে না, তা তো না। এই ট্রেড মার্কটা তাদের পরিচয় বহন করে।  

মন্ত্রী বলেন, মনুষ্যসৃষ্ট মেধা স্বত্ব দিচ্ছি, কিন্তু আর্টিফিশিয়াল মেধার অনুমোদন নেই। এ জায়গায়ও কাজ করা জরুরি। কপিরাইট আইন এখন সংশোধন হচ্ছে, এ সময়েই আর্টিফিশিয়াল বা রোবটিক্স মেধার কপিরাইটটা কি হবে তা-ও ঠিক করে নিতে হবে। মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের বিষয়গুলো নিয়ে মিডিয়াকে আরও আলোচনার সুযোগ করে দিতে হবে, এক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
 
তিনি বলেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্মসহ যেকোনো প্ল্যাটফর্মেই যা তুলে ধরবেন, তার দায় আপনাকে নিতেই হবে।  

মোস্তফা জব্বার বলেন, মানুষ এবং যন্ত্র দুটোর সমন্বয় করেই পঞ্চম শিল্প বিপ্লব সামলে নিতে হবে। মানুষের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকেই অগ্রগণ্য রাখতে হবে। তবে যন্ত্রের সক্ষমতাকেও গুরুত্ব দিতে হবে। ইন্টারনেট ব্যবহারে মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে গ্রাহককেও বুঝতে হবে, সে কী কাজে ব্যবহার করবে।  

অনুষ্ঠানে রবি সিইও রাজীব শেঠী বলেন, করোনাকাল থেকে এখন পর্যন্ত ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো হলো সবচেয়ে লাভজনক খাত। তাদের আইপিআর খুব শক্ত।

টেকনোলজির ওপর গুরুত্বারোপ করে রাজীব শেঠী বলেন, কপিরাইট, প্যাটেন্ট আইনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে; যাতে অন্যরা আমাদের স্বত্ব নিয়ে নিতে না পারে।  

রবির চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, শুধু কানেক্টিভিটি নিয়েই মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে না। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের কপিরাইট, ট্রেড মার্ক, প্যাটেন্টের দিকে একটু মনোযোগ দিতে হবে।  

টিআরএনবির সভাপতি রাশেদ মেহদেীর সঞ্চালনায় সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।

তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে এখন অবস্থান করছি। সেখান থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে সরকারকে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। আমাদের প্রযুক্তিগত ও তথ্যগত ডাটা বিশ্লেষণ করে জনগণের বিশেষ করে তরুণদের জন্য সরকার যেসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে, সেখান থেকেই স্মার্টনেসের উদ্ভব হবে।  

গোলটেবিল আলোচনায় কপিরাইট নিরীক্ষক সৈয়দা নওরীন জাহান নিশা বলেন, গত পাঁচ বছরে ডিজিটাল কনটেন্ট রেজিস্ট্রেশন চলছে। কিন্তু যখন আর্থিক বিষয়টি আসে, তখনই দ্বন্দ্বের শুরু। বর্তমান কপিরাইট আইন দিয়ে এগুলো কাভার দেওয়া সম্ভব নয়। তাই আগের আইনটি সংশোধন করে ইতোমধ্যে কেবিনেটে পাঠানো হয়েছে।

ই-ক্যাব এর সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন শিপন বলেন, মেম্বারদের মেধাস্বত্ব যাতে হারিয়ে না যায়, তা নিয়ে কাজ করছেন তারা। এ সময় স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে ই-কমার্সের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি কিছু সমস্যার আলোকপাত করেন।  

বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, কপিরাইট নিয়ে কথা হলেও প্যাটেন্ট নিয়ে তেমন কথা হয়ই না। আইপিআর নিয়ে তেমন পরিষ্কার কোনো ধারণা দেওয়া হচ্ছে না। এ সময় তিনি কিছু প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে কপিরাইট কেন নয়? কপিরাইট শুধু গান, নাটকের জন্য কেন? কেন আমার প্রোডাক্টের জন্য নয়?

এমটব মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, মোবাইল অপারেটরদের অন্যতম চ্যালেঞ্জ গ্রাহকদের ডাটা সংরক্ষণ করা। ওটিটি ও ভাস- নিয়ে কথা হচ্ছে। এগুলো নিয়েও টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ করতে হবে।  

সভা শেষে রবির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে টিআরএনবি সদস্যদের হাতে সম্মাননা স্মারক হিসেবে ক্রেস্ট তুলে দেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ও রবির সিইও রাজীব শেঠী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।