সম্প্রতি হুয়াওয়ে তার নতুন স্মার্টফোন মেট৬০প্রো উন্মোচন করেছে, যেটিতে একটি ৫জি চিপ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ফোনের কিরিন৯০০০এস প্রসেসরটি হুয়াওয়ের ৭ ন্যানোমিটার (এন+২) চিপ দ্বারা পরিচালিত।
হুয়াওয়ের ৫জি চিপ উৎপাদনের খবর পশ্চিমা মিডিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েছে, ভড়কে দিয়েছে। কারণ ২০২২ সালে চীনে চিপ সরবরাহ সীমিত করার লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার পর পশ্চিমা মিডিয়া গুলো উন্নত চিপ উৎপাদনে চীনের সক্ষমতা হ্রাস পাবে এমন পর্যবেক্ষণ প্রচার করেছিল।
ধারণা করা হচ্ছে ভাল চিপের র্যাংকিংয়ে তাইওয়ানের বিশ্বসেরা সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি টিএসএমসি এবং স্যামসাংয়ের উৎপাদিত সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি চিপের পরপরই হুয়াওয়ের ৭ এনএম (এন+২) জায়গা করে নেবে। যদিও পশ্চিমা সরঞ্জাম ছাড়াই হুয়াওয়ে ব্যাপক আকারে এই চিপ তৈরি করার কার্যকর দক্ষতা এবং অ্যাপলের সমতুল্য ৫জি সক্ষমতা দেখাতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়ে গেছে।
কিভাবে চীন এত উন্নত চিপ উৎপাদন করলো তার বিশ্লেষণে পশ্চিমা পণ্ডিতরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র উচ্চ প্রযুক্তির চিপ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও, পুরানো প্রযুক্তিতে তৈরি এনভিডিয়া-এর এইচ৮০০চিপস অথবা নিম্নমানের যেমন ২৮ এনএম চিপস তৈরির সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগ এখনও চীনের রয়েছে। চীনা নির্মাতা সেই পুরানো প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সহায়ক প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে এই অসাধ্য সাধন করেছে বলে তারা ধরণা করছেন।
পুরানো এআরএম ইন্সট্রাকশন সেট আর্কিটেকচার, ইডিএ সরঞ্জাম এবং গত প্রজন্মের ‘ডিপ আল্ট্রাভায়োলেট’ (ডিইউভি) লিথোগ্রাফি মেশিন ব্যবহার করে হুয়াওয়ে তার নতুন মোটামুটি প্রতিযোগিতামূলক চিপসেটটি তৈরি করেছে। চীনের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের বিশেষজ্ঞ ডগলাস ফুলার বলেছেন, চীনা নির্মাতারা ‘চরম অতিবেগুনি’ (ইইউভি) প্রযুক্তির অভাব মেটানোর জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় ডিইউভি ব্যবহার করছে যদিও এর ফলাফল আশাব্যঞ্জক নয়। ডিইউভি মেশিনে ৭ এনএম চিপ তৈরি করার জন্য তিন থেকে চার রাউন্ড প্যাটার্নিংয়ের প্রয়োজন হয়।
তাই প্রশ্ন ওঠছে পুরোনো প্রযুক্তির কৌশলী বব্যবহারের মাধ্যমে হুয়াওয়ের ব্যাপক আকারে এই নতুন চিপের বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে সক্ষম হবে কিনা। তা সত্ত্বেও বলা যায় প্রযুক্তি বিশ্বে পশ্চিমা শাসন অস্বীকার করে ৭ এনএম চিপ তৈরির অর্জনে হুয়াওয়ের পুনরুত্থিত সাফল্য অবশ্যই চীনা চিপ উৎপাদনকারীদের উৎসাহ বাড়িয়ে দেবে।
সূত্র: দ্য ডিপলোমেট
এমএম