ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ডেস্কটপ কম্পিউটারের যত্ন নেবেন যেভাবে

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
ডেস্কটপ কম্পিউটারের যত্ন নেবেন যেভাবে

অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা-বাড়িতে কম্পিউটার ছাড়া চলে না। পেশার তাগিদে অনেকে বেশির ভাগ সময়ই কম্পিউটারে কাজ করেন।

তাই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাই ব্যবহারের পাশাপাশি এর যত্ন নেওয়া খুব জরুরি।

সময় মতো সঠিক যত্নের অভাবে কম্পিউটার, ল্যাপটপসহ দামি জিনিসপত্র ঘন ঘন নষ্ট হয়। এতে যেমন কাজের ক্ষতি হয়, তেমনি আর্থিক ক্ষতি হয়। এদিক থেকে বিবেচনা করলেও এর যত্ন নেওয়া উচিত। নিচে কম্পিউটারের যত্ন ও এর রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দেওয়া হলো-

কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণে কম্পিউটারের যত্ন নেওয়া উচিত। সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ আপনার কম্পিউটার দীর্ঘ দিন ভালো থাকবে। নিয়মিত পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণ ধুলো-বালি কম জমে। ফলে অতিরিক্ত গরম হওয়া রোধ করে। ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণের কারণে এর পারফরম্যান্স ভালো থাকে। কম্পিউটার সিস্টেম পরিষ্কার রাখা সফটওয়্যার অপ্টিমাইজ করা হার্ডওয়্যার ভালো থাকার নিশ্চয়তা দেয়।

কম্পিউটারে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বা মূল্যবান ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ফাইল ব্যাকআপ, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত ঘটনার থেকে আপনার কম্পিউটারকে রক্ষা করতে পারে।

এটা নিশ্চিত করা বলা যায়, সঠিক কম্পিউটারের যত্ন পরোক্ষভাবে আপনার অর্থ বাঁচাতে পারে। আপনার কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং সমস্যাগুলোকে প্রাথমিকভাবে সমাধান করে, আপনি বড় ধরনের খরচ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করা হার্ডওয়্যারের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। ৎ

যা যা করবেন

১) ত্রুটি মুক্ত বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য আর্থিং যুক্ত থ্রি-পিন সকেট থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হবে।
২) আলো-বাতাস আছে এমন ঘরে কম্পিউটার স্থাপন করা।
৩) রান্না ঘরের কাছে কম্পিউটার স্থাপন করা উচিত না।
৪) সিপিইউ বক্স ফ্লোরে না বসিয়ে টেবিলের ওপর বসানো ভালো। এতে ধুলাবালি থেকে অনেকটা রক্ষা পায়।
৫) কম্পিউটার দেয়াল থেকে অন্তত ৮-১০ ইঞ্চি দূরে স্থাপন করতে হবে।
৬) কম্পিউটার কেসিংয়ের ওপর ভারী কিছু না রাখা।
৭) কম্পিউটার ঢেকে রাখা।
৮) চলন্ত অবস্থায় কম্পিউটার না ঢেকে রাখা।
৯) মনিটরে অযথা হাত, পেন্সিল, কলম বা শক্ত কোনো জিনিস দিয়ে স্পর্শ না করা।
১০) মনিটরে ময়লা জমলে নরম কাগজ, কাপর বা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলা।
১১) কম্পিউটার সঠিক উপায় চালু ও বন্ধ করা।
১২) মাউস ব্যবহারের আগে মাউস প্যাড অথবা মাউস ব্যবহারের স্থানটুকু পরিষ্কার করে নেওয়া।
১৩) কাজ শেষে কিবোর্ড দাঁড় করিয়ে বা উল্টিয়ে (কী-যুক্ত দিক নিচের দিকে) রাখা।
১৪) ১ মাসের অধিক সময় ধরে কম্পিউটার বন্ধ না রাখা।
১৫) কম্পিউটার টেবিলে পান-আহার থেকে বিরত থাকা।
১৭) কিবোর্ডের ওপর কোনো প্রকার স্প্রে না করা, প্রয়োজনে ব্রাশ দিয়ে পরিস্কার করা।

তা ছাড়া কম্পিউটারের যত্ন বলতে মূলত এর হার্ডওয়্যারের পরিচর্যাকেই বুঝোয়। আপনার কম্পিউটারের এই হার্ডওয়্যার পরিষ্কারের জন্য কিছু টুকিটাকি যন্ত্রপাতি দরকার। যেমন-

আঁশবিহীন নরম কাপড়: কম্পিউটারের বাহ্যিক যন্ত্রপাতি যেমন কম্পিউটারের কিবোর্ড, মাউস, মনিটর, সিপিইউ বক্স ইত্যাদি মোছার জন্য এরকম একটা কাপড় হাতের কাছেই রাখবেন। প্রত্যেক বার ব্যবহারের সময় আপনার কম্পিউটার মুছে ফেলুন।

কমপ্রেসড এয়ার বা ব্লোয়ার: কম্প্রেসড এয়ার বা ব্লোয়ার হল সিপিইউ বক্সের ভিতরে ও বাহিরে ধুলা-বালি অপসারণের একটি কার্যকরী হাতিয়ার। এটি সাধারণত বাসা বাড়িতে ব্যবহার হয় না। আজকাল হ্যান্ড ব্লোয়ার পাওয়া যায়। এটিতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। হাতের সাহায্যে পাঞ্চ করে বাতাস বের করা হয়। প্রয়োজনীয় স্থানে বাতাস প্রয়োগ করে সহজেই ধুলা-বালি পরিস্কার করা যায়।

নরম ব্রিস্টেড যুক্ত ব্রাশ: ১ ইঞ্চি সাইজের নরম ব্রিস্টেড যুক্ত একটি ব্রাস ধুলো অপসারণ করতে ব্যবহার করাতে পারেন। কেসিংয়ের ভেতরে ও বাইরে কিবোর্ডের ফাঁকে ও মনিটরের বিভিন্ন অংশে ধুলাবালি পরিষ্কারের জন্য এটি খুব ভালো কাজ করে।

আইসোপ্রোপাইল লিকুইড বা গ্লাস ক্লিনার: আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল বা গ্লাস ক্লিনার জাতীয় স্বল্প মাত্রার ক্ষার যুক্ত লিকুইড দ্বারা কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ পরিস্কার করা যায়। পরিষ্কারের আগে একটি কাপড়ে প্রয়োগ করে প্রয়োজনীয় স্থানে পরিস্কার করতে পারেন।

কটন বাডস: ছোট জায়গা বা যেখানে হাত বা ব্রাস পৌঁছানো কঠিন তা পরিষ্কার করার জন্য এটি খুব দরকারি। এগুলোকে ক্লিনিং লিকুইডে ভিজিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডিসপোজেবল গ্লাভস ও ফেস মাস্ক: কম্পিউটার হার্ডওয়্যার পরিষ্কার করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে ভুলবেন না। পরিষ্কারের সময় ধুলো-বালি থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে এগুলো ব্যবহার করুন।

স্ক্রু ডাইভার: কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার খোলা ও বন্ধ করার জন্য একটি স্টার স্ক্রু ড্রাইভার দরকার।

এসব থাকলে আপনি নিজেই নিয়মিত কম্পিউটারের যত্ন নিতে পারবেন। তবে এটা মনে রাখবেন পরিষ্কার করার আগে আপনার কম্পিউটারের পাওয়ার বন্ধ করুন এবং সকল পাওয়ার কেবল আনপ্লাগ করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।