ঢাকা: শুরু হলো পাখির মতো উড়ে উড়ে পাখির চোখে সুন্দরবন দেখা। ইচ্ছেমতো এদিক-ওদিক ছোটাছুটি।
গাছ-গাছালি, সবুজ অরণ্য আর বনের বুকে ছুটে চলা নদী-সব কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষ্যবিহীন যান ড্রোন। নৌকায় বসে ল্যাপটপের স্ক্রিনে দেখা মিলবে টপ ভিউ থেকে সুন্দরবন।
সপ্তাহখানেক আগে একটি গবেষণা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কাজ শেষে এমন অভিজ্ঞতা বাংলানিউজকে জানান শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ড্রোন টিমের প্রধান সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল। সম্প্রতি ড্রোন দিয়ে কম উচ্চতা থেকে সুন্দরবন দেখেছেন তারা।
সঙ্গে ছিলেন শাবিপ্রবির ড্রোন টিমের সদস্য মারুফ হোসেন রাহাত। গবেষণা দলটি ড্রোনের মাধ্যমে সেখানে ছড়িয়ে পড়া তেলের ক্ষতিকর প্রভাবের উপর পর্যবেক্ষণের কাজ করছিল।
শুক্রবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে এসব জানিয়ে নাবিল বলেন, প্রাকৃতিক ও জীববৈচিত্র্যের কোনো ক্ষতি না করে এমন উচ্চতা থেকে বন পর্যবেক্ষণে ড্রোনই সবচেয়ে উপযোগী। ড্রোন ছাড়া হেলিকপ্টার দিয়ে এ কাজ করতে গেলে বণ্যপ্রাণির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
নাবিল বলেন, এভাবে বন গবেষণা, বনের কাঠ চুরি ঠেকানো, বনের জরিপ ও ম্যাপিং করা যেতে পারে। সাধারণত বন প্রহরী যেভাবে বন পাহারা দেন, ড্রোন দিয়ে আরও দক্ষভাবে বন পাহারা দেওয়া সম্ভব।
বনবিভাগ চাইলে দেশের যেকোনো বনের নিরাপত্তায় ড্রোন ব্যবহার করতে পারে। এক্ষেত্রে অটোনোমাস পদ্ধতি অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ছকের মধ্যে ড্রোন দিয়ে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে বন কর্তৃপক্ষ।
নাবিল জানান, বন বিভাগ এ ধরনের কোনো সহযোগিতা চাইলেই তারা দিতে পারবেন। এতে তেমন ব্যয়ও নেই। একটি ড্রোন পরিচালনায় প্রয়োজন হবে শুধু ব্যাটারি চার্জের। টাকার হিসেবে যার মূল্য পড়বে দশ টাকারও কম। তবে এরকম একটি ড্রোনের দাম পড়বে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।
ড্রোন টিম প্রধান রেজওয়ানুল হক নাবিল জানান, এ মুহূর্তে তারা ড্রোনের ফ্লাই টাইম বাড়ানোর কাজ করছেন। অনেক দূরে গিয়ে কাজ করতে সক্ষম হবে এরকম কিছু অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে কাজ করছে টিম।
২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের তত্ত্বাবধানে সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল ড্রোন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি শাবিপ্রবির ড্রোন গবেষণা প্রজেক্ট টিমের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে ড্রোন টিমে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও কাজ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৫