ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার নতুন প্রজন্মকে তথ্য প্রযুক্তিতে সক্ষম করে তুলতে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫‘র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা তার সরকারের অঙ্গীকার। এর মধ্য দিয়ে ধনী-গরিব, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নির্বিশেষে প্রযুক্তি বিভেদমুক্ত দেশ গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও জনগণের ক্ষমতায়নে তথ্য প্রযুক্তির লাগসই ব্যবহার নিশ্চিত করা। মানুষের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার সহজলভ্য করা।
কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল ফোন, বেতার, টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটের মতো মাধ্যমের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে তার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০১৮ সাল নাগাদ আইটি সেক্টরে ১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় হবে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ফ্রি-ল্যান্সিং এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে সাবলম্বী করতে সরকার আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছে। এ জন্য তরুণদের প্রশিক্ষণ দেয়ার উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।
বাংলাদেশের মানুষের মেধার কোনো অভাব নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষকে শুধু মেধার বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আর সরকার সে জন্য কাজ করছে।
সারা দেশে ৫ হাজারের অধিক ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের কাছে সেবা সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সরকার তথ্য প্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দিয়েছে। ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ২০০ রকমের সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
দেশে মুঠোফোনের ব্যাপক ব্যবহারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা ভেঙে দিয়েছি। এর ফলে এখন দেশের সাধারণ মানুষ মোবাইল ফোনের সুবিধা পাচ্ছে। অল্পদামে তাদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এই যোগাযোগ মাধ্যমটি। এখন ১৬ কোটি মানুষের দেশে ১২ কোটি সিম ব্যবহার হচ্ছে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন ইন্টারনেটের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জমিতে ফসল ফলাতে কৃষকের সমস্য হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। দেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো এখন ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগ করে নিয়ে নিচ্ছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ।
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ‘মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাঝে মাঝে ঝড় ঝাপটা আসবে। বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থা এমন, এখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগও যেমন মোকাবেলা করতে হয়, তেমনি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও মোকাবেলা করতে হয়।
তিনি বলেন, গত এক মাসে কিছু মানুষের দ্বারা সৃষ্টি করা দুর্যোগের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি। ইনশাল্লাহ এই দুর্যোগ আমরা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা কোনো আন্দোলন হতে পারে না। এ ধরনের অমানবিক কাজ কোনো মানুষ করতে পারে, তা আমার বিশ্বাস হয় না। যারা এমন করছে, তারা জনগণের শত্রু, দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু।
দেশবাসী চলমান সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে আশা করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা দেশের উন্নয়ন চোখে দেখেন না, চোখ থাকতেও যারা অন্ধ, যারা দেশকে উন্নয়নের পথ থেকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চান, দেশবাসী তাদের বিষয়ে সজাগ থাকবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৪/ আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা
** ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রশংসায় কংগ্রেসম্যান মাইক হন্ডা (ভিডিও)
** গার্মেন্টের আয়কে ছাড়িয়ে যাবে আইটি সেক্টর