ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫

বিস্মিত করলো প্রযুক্তিপ্রেমীদের!

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫
বিস্মিত করলো প্রযুক্তিপ্রেমীদের! ছবি:দেলোয়ার হোসেন বাদল/ বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড, বিআইসিসি থেকে: ‘ফিউচার ইজ হেয়ার’ স্লোগানে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চলছে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’।

এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে প্রদর্শনীস্থল।

তথ্যপ্রযুক্তির বিভিন্ন তথ্য জেনে ও দেখে অবাক হয়েছেন প্রযুক্তিপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা। কেউ কেউ রীতিমতো বিস্মিত হয়েছেন ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির কথা জেনে।

দীর্ঘসারিতে দাঁড়িয়ে মেলার প্রবেশ করতে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের। বেলা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনস্রোতে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীদের সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয় কর্তৃপক্ষের। এ জন্য তাদের দফায় দফায় পুলিশের সাহায্য নিতে হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা উপস্থাপনে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’ শীর্ষক এ আয়োজনে রয়েছে চারটি পৃথক মেলা। এর মধ্যে রয়েছে বেসিস সফট এক্সপো, ই-গভর্নেন্স এক্সপো, মোবাইল ইনোভেশন এক্সপো এবং ই-কমার্স এক্সপো।

পাশপাশি ই-কমার্স জোন, বিপিও ফোরাম, ডেভেলপার্স ফোরাম, আইটি ক্যারিয়ার কনফারেন্স এবং আউটসোর্সিং ফোরামের মতো নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগের পসরা নিয়ে হাজির থাকছেন তরুণ প্রযুক্তিবিদরা।

ডিজিটাল বাংলাদেশে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কতটুকু এগিয়েছে, তা জানা যাচ্ছে মেলার ই-গভর্নেন্স এক্সপোতে। এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের সেবামূলক কার্যক্রমের বিষয়টি দর্শনার্থীদের জানাতে পারছেন।

মেলায় বাংলাদেশ পুলিশ স্টলের সামনে পাওয়া গেল তরুণ মফিজুল ইসলামকে। অনলাইনে জিডি করাসহ পুলিশের বিভিন্ন অনলাইন সেবার বিষয়টি জেনে খানিকটা অবাক তিনি। তার মতো অনেকই মেলায় এসে অনলাইনে সরকারি দফতরের সেবাপ্রাপ্তির কথা জানতে পারছেন।

পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সায়েম ইউসুফ বলেন, মেলার মাধ্যমে সহজে দর্শনার্থীদের অনলাইনভিত্তিক সরকারি সেবার বিষয়ে জানানো যাচ্ছে। এতে করে মানুষ এসব বিষয়ে আরো আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মজিলা ফাউন্ডেশনের জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার মজিলা নিয়েও নানা জিজ্ঞাসার উত্তর মিলছে মেলায়।

মজিলা ফাউন্ডেশনের সদস্য আশিকুর রহমান বলেন, ফায়ারফক্স ব্রাউজার ছাড়াও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে তথ্য দিচ্ছেন তারা।

ই-কমার্স এক্সপোতে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিজেদের সেবা তুলে ধরতে নানা আয়োজন রেখেছে। সম্মেলন কেন্দ্রের দ্বিতীয়তলায় শহীদ আবদুস সালাম জোনে চলছে বেসিস সফট এক্সপো। এখানে বেসিস সদস্যভুক্ত কোম্পানিগুলো তাদের তৈরি সফটওয়্যার প্রদর্শন করছে।

মেলায় রিভ সিস্টেমের স্টল থেকে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সেলস ম্যানেজার তৌহিদ রহমান চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, তাদের তৈরি অধিকাংশ সফটওয়্যারেরই বিদেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দেশেও তাদের সফটওয়্যার জনপ্রিয়।

মেলায় আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আশরাফুল ইসলাম বলেন, দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারের চাহিদা বিদেশে বাড়ছে, এটি জেনে তিনি গর্ববোধ করছেন। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ একদিন অন্যতম শীর্ষ দেশ হিসেবে নিজেদের পরিচয় বিশ্বদরবারে তুলে ধরবে এমন প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন তিনি।

সফটওয়্যার ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান লিডসফট মেলায় তাদের পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি নিজেদের প্রতিষ্ঠানের জন্য দক্ষ কর্মী খুঁজছে। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার চৌধুরী মহিবুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এবার আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে সল্যুশন নিয়ে এসেছি। এ বিষয়টিতে অনেকেই আগ্রহী। আশা করছি, ভালো ফিডব্যাক পাবো।
 
মেলা সম্পর্কে বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বাংলানিউজকে জানান, প্রথম দুইদিনে মেলায় তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের যে ঢল নেমেছে, তা আমাদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। আশা করছি, আগামী দুইদিনেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

মেলায় আজ নানা আয়োজনের মধ্যে ছিল তিনটি কনফারেন্স। এর মধ্যে সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়, মিনিস্ট্রিরিয়াল কনফারেন্স। এতে বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা অংশ নেন। এছাড়া ছিল ছয়টি সেমিনার ও চারটি টেকনিক্যাল সেশন।

মেলার তৃতীয় দিন বুধবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে রয়েছে, সাতটি সেমিনার, চারটি কারিগরি সেশন ও তিনটি কর্মশালা। এর মধ্যে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে রয়েছে চিফ এক্সিকিউটিভদের নিয়ে সিএক্সও নাইট।

ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার
মেলায় অনুষ্ঠিত সেমিনার, কর্মশালা এবং কারিগরি সেশন ছাড়াও বিভিন্ন আয়োজন ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’ এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫ এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে (www.facebook.com/DigitalWorldBangladesh) মেলার সব ধরনের আপডেট পাওয়া যাবে।

ইউটিউবেও পাওয়া যাবে এসব আয়োজনের ভিডিও লিংক। এর ওয়েব ঠিকানা: www.digitalworld.org.bd

আরো যা থাকছে-
প্রদর্শনীতে অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে থাকছে, এক্সপেরিয়েন্স জোন। এখান থেকে গুগল বাস, ই-ব্রেইল ছাড়াও ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি বিষয়ে জানা যাবে। থাকছে সেলফি বুথ ও বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা, এলইডি স্ক্রিনে মেলার উল্লেখযোগ্য আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার এবং ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে মেলার সর্বশেষ তথ্য জানার সুবিধা।

মেলায় তিন স্তরের নিরাপত্তা
উৎসবে আগত দর্শনার্থী এবং অংশগ্রহণকারীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে থাকছে, তিন স্তরের সিকিউরিটি ব্যবস্থা।

মূল আয়োজক
বর্ণাঢ্য এ মেলার যৌথ আয়োজক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।

আয়োজন সহযোগী
তথ্যপ্রযুক্তি মিলনমেলায় আয়োজন সহযোগী হিসেবে রয়েছে- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রকল্প ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি)।

পার্টনার
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি), টাই বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্য), বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটি (বিডব্লিউআইটি), সিটিও ফোরাম এবং বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) মেলায় পার্টনার হিসেবে রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।