ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড, বিআইসিসি থেকে: মস্তিষ্ক সচল, কিন্তু শারীরিক অক্ষমতার কারণে বিছানায় শুয়ে কাটাতে হচ্ছে দিনের পর দিন। ইচ্ছা থাকলেও এক ঘর থেকে অন্য ঘরে, এমনকি বারন্দায় গিয়েও একটু বাইরে তাকানোর সুযোগ নেই।
শারীরিকভাবে অক্ষম এমন সব মানুষের জন্য ‘ব্রেইন কন্ট্রোল হুইল চেয়ার’ তৈরি করেছেন বেসরকারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থী।
‘ফিউচার ইজ হেয়ার’ স্লোগানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত চার দিনব্যাপী (৯-১২ ফেব্রুয়ারি) ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫-এ হুইল চেয়ারটি প্রদর্শন করেছেন উদ্ভাবক প্রীতম চৌধুরী। সঙ্গে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী এসএস কিবরিয়া শাকিম।
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে প্রীতম বলেন, শারীরিকভাবে অক্ষম এমন ব্যক্তিদের কথা মাথায় রেখেই আমরা এ হুইল চেয়ারটি তৈরি করেছি।
হুইল চেয়ারটির বিশেষত্ব কী ও এর কাযর্কারিত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে শারীরিক অক্ষম ব্যক্তি সামনে, পেছনে, ডানে, বামে যেকোনো দিকে যেতে পারবেন।
কীভাবে সম্ভব? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হুইল চেয়ারে বসে কেউ চিন্তা করলেন সামনের দিকে যাবেন। এসময় মাথায় লাগানো হেডফোনের সঙ্গে সংযুক্ত ইলেক্ট্রোড সেন্সর ওয়্যারলেস ব্লুটুথের মাধ্যমে এ বার্তা পৌঁছে দেবে সফটওয়্যারে। মাইক্রো কন্ট্রোলারের মাধ্যমে ব্যাকআপের আরো তিনটি সফটওয়্যার এ বার্তা ফিল্টারিং করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে হুইল চেয়ারকে সামনের দিকে নিয়ে যাবে।
এভাবে পেছনে, ডানে, বামেও নেওয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশে এ ধরনের চেয়ার প্রথম আমরাই তৈরি করেছি দাবি করে প্রীতম বলেন, তবে এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এর উন্নয়নে কাজ চলছে।
ভবিষ্যতে হুইল চেয়ারটিতে রোবোটিক হ্যান্ড সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোবোটিক হ্যান্ড’র বিষয়ে জানতে চাইলে প্রীতম বলেন, হুইল চেয়ারে বসা ব্যক্তিকে খাবার তুলে দিতে সাহায্য করবে ওই হ্যান্ড।
১২ ভোল্টের ৮ অ্যাম্পিয়ারের এক বা দু’টি ব্যাটারির মাধ্যমে চলবে এ ‘ব্রেইন কন্ট্রোল হুইল চেয়ার’। রিচার্জেবল সুবিধাসম্পন্ন এ চেয়ার পরিপূর্ণ চার্জে চলবে ৭-৮ ঘণ্টা। তবে চার্জিং সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে চলতে পারে একদিনও।
এ ধরনের হুইল চেয়ার তৈরিতে ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করলে খরচ আরো ১৫-২০ হাজার টাকা কমে আসবে, যা একটি ইলেক্ট্রিক হুইল চেয়ারের অর্ধেক।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া অ্যাওয়ার্ড নাইটে প্রথমবারের মতো দেওয়া হবে ‘ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড’। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদান রাখায় সরকারি পর্যায়ে ৪৭টি, বেসরকারি পর্যায়ে ৭টি এবং বিশেষ ক্যাটাগরিতে ৪টি সহ মোট ৫৮টি সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হবে।
এর মধ্যে দেশের ৭টি বিভাগ থেকে একটি করে সেরা জেলা প্রশাসক, সেরা ওসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা ডিজিটাল সেন্টার, ডিজিটাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি করে সেরা ডিজিটাল সিটি, ডিজিটাল পৌরসভা, ডিজিটাল হাসপাতাল, ব্যাংক এবং ই-ইনিশিয়েটিভ ও ই-উদ্যোগকে পুরস্কৃত করা হবে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইটিতে সেরা ৫টি উদ্ভাবন, একজন নারী ও একজন প্রযুক্তি বন্ধুকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে।
এছাড়া মেলার শেষ দিন এ পুরস্কার দেওয়া হবে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে ৪টি প্রতিষ্ঠানকেও।
গত সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫
** সফল সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সেমিকন
** স্পিকার-ফেসবুক দক্ষিণ এশিয়া প্রধানের সাক্ষাৎ
** বাজেটের ৪০ শতাংশ ব্যয়ই হবে অনলাইন মার্কেটিংয়ে
** ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডে ‘একুশের বই’
** ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড’র সময় বাড়লো ২ ঘণ্টা