ঢাকা: রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আণবিক শক্তি করপোরেশন রসাটমের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স অ্যান্ড অটোমেশন (নিটফা) বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় বেশ সফলতা অর্জন করেছে।
এরমধ্যে বইপত্র, চিত্রকর্ম, কাপড়-চোপড়সহ অন্যান্য বস্তুর সুরক্ষায় আণবিক রেডিয়েশন ব্যবহারে সাফল্য অর্জন করেছে।
শনিবার (২১ মার্চ) রসাটমের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিভিন্ন মূল্যবান সামগ্রী রক্ষার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হল ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও পোকামাকড়। বর্তমানে এ সমস্যা মোকাবেলায় রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাতকরণ, তাপমাত্রা ও আদ্রতা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধী আবরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে এগুলোর কোনোটাই দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা দিতে সক্ষম নয়।
ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক থেকে সুরক্ষায় বেশ কার্যকরী পদ্ধতি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে তেজস্ক্রিয় রশ্মির ব্যবহার। এ রশ্মি বস্তুর অনেক গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
নিটফার গবেষণায় দেখা যায়, কাগজপত্র ছত্রাকমুক্ত করতে ১৫ কিলো গ্রে মাত্রার রেডিয়েশনই যথেষ্ট। তিনটি ভিন্ন ধরনের কাগজের ওপর পরিচালিত পরীক্ষণে দেখা যায়, রেডিয়েশনের ফলে কাগজের ভৌত গুণাগুণের কোনো পরিবর্তন হয় না।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যসামগ্রী সুরক্ষার কাজে নিটফা কোবাল্ট ৬০ আইসোটোপ ব্যবহার করেছে। প্রযুক্তিটি নিরাপদ বলেও প্রমাণিত হয়েছে।
রেডিয়েশনের পর বস্তুতে ‘রেসিডিউয়াল’ তেজস্ক্রিয়তার কোনো প্রমাণ মেলেনি। রেডিয়েশন প্রয়োগের পরপরই যে কোনো ব্যক্তি বইটি নিরাপদে হাতে নিয়ে পড়তে পারেন।
রেডিয়েশন যন্ত্রটি বন্ধ করার পর কক্ষটিতে কোনো রেডিয়েশনের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ কর্তব্যরত লোকজন ও পরিদর্শনকারীদের জন্য স্থানটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
বর্তমানে বিশ্বে রেডিয়েশনের ব্যবহার মূলত মেডিসিন, কৃষি, পানি পরিশোধন ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ। প্রায় ৪০টি দেশ খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণে রেডিয়েশন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে রসাটম ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) রেডিয়েশন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত করার তাগিদ দিয়ে আসছে। রেডিয়েশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইউরোপের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আর্টিফ্যাক্ট রক্ষায় বিশেষ প্রকল্পও হাতে নিয়েছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৫