ঢাকা: গুগল ট্রান্সলেটে বাংলা শব্দ সংযোজন করে বিশ্ব রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ‘বাংলার জন্য ৪ লাখ’ কর্মসূচি নির্ধারণ করলেও এই সংখ্যা লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে দিনব্যাপী কর্মসূচিতে একথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
জুনাইদ আহমেদ বলেন, সারা দেশে ৮১টিসহ সারা বিশ্বে ১৫০টি স্থানে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। বিসিসিতে ৪০০ তরুণ এক সঙ্গে কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ভোর পর্যন্ত এই গতিতে কাজ করলে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ অর্জন করতে পারব।
তিনি জানান, সকাল ১১টার দিকে এক সঙ্গে ১০ হাজার লগিং ছিল। ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে গুগল ট্রান্সলেট সাইট দুই বার ক্র্যাশ করেছিল।
লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ বাংলা শব্দ সংযোজনের আশা করলেও মোট কতো শব্দ সংযোজন হলো তা প্রকাশ করেননি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে গুগলের তথ্য নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
কর্মসূচিকে সফল করতে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক সাড়া পাওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৪৮ হাজার আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। বাংলা ভাষার প্রতি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের যে ভালবাসা, এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তা আবারও প্রমাণ হয়েছে। এ জন্য বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী ৩০ কোটি মানুষকে অভিনন্দন জানান পলক।
ভাষাভাষীর দিক দিয়ে বাংলা ভাষার অবস্থান সপ্তম স্থানে হলেও গুগল ট্রান্সলেটে ততোটা সমৃদ্ধ নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলা শব্দ সংযোজন হলে বিশ্বে এই ভাষার মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।
আগামী পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত গুগল ট্রান্সলেটে বাংলা শব্দ সংযোজনের কাজ চলবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ শব্দ সংযোজনকারীকে গুগল তার সিংগাপুরে অফিস পরিদর্শনে নিয়ে যাবে।
আর এক হাজারের বেশি শব্দ সংযোজনকারীকে গুগল ছাড়াও আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকেও ইলেকট্রনিক সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), গুগল ডেভেলপার্স গ্রুপ-বাংলা (জিডিজি বাংলা) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সহযোগিতায় গুগল ট্রান্সলেটে বাংলা শব্দ সংযোজন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিসিসির নির্বাহী পরিচালক এসএম আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তরুণরা অনন্য সাধারণ কাজ করেছে।
ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান বলেন, বাংলা শব্দ সংযোজনের এই কর্মসূচি প্রথম জাপানে শুরু হয়েছিল। তারা ১০ হাজারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করলেও ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, গুগলে বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে আমরা এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই, যাতে আর কেউ এই রেকর্ড ভাঙ্গার সাহস না করে।
বিসিসি ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শহীদ মিনার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী, কুষ্টিয়ায় কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গুগল ডেভলপমেন্ট গ্রুপের কমিউনিটি ম্যানেজার জাবেল সুলতান পিয়াস।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ছাত্র সালমান আবির ৪৮ হাজারের বেশি শব্দ সংযোজন করেন। সালমান আবিরসহ অনুষ্ঠানে ১১ জনকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।
তারা হলেন- মোখলেসুর রহমান, সুমাইয়া নাজনীন, শাকিল মিয়া, নজরুল ইসলাম, বিপাশা আমিন, সকিবুল ইসলাম, তামান্না ইয়াসমিন, সুমাইয়া বিনতে জামাল, মিনহাজুল ইসলাম, দীবাকর সাহা দ্বীপ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৫