ঢাকা: গাদা গাদা ইমেইল এসেছে স্যামসাংয়ের মোবাইল ফোন ব্যবহারে ভোগান্তি নিয়ে। এক-দুটো ভালো অভিজ্ঞতাও এসেছে।
এদের মধ্যে তানশেদ আরাফাতের কষ্টটা অনেক বেশি। ম্যালা দামে কিনেছেন স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট-থ্রি। কিন্তু মাস তিনেক পার না হতেই এখন তার ফোনসেটটি যখন তখন হ্যাং হয়ে যায়। ফোন অফ অন করলেই যে সে সমস্যা মিটবে তা নয়। প্রতিবারই তাকে সেট থেকে ব্যাটারি আলাদা করতে হয় এবং নতুন করে ব্যাটারি লাগিয়ে অন করলে ফোন কাজ করে। স্যামসাং কিনে এখন রীতিমত বিরক্ত তানশেদ।
শিপ্লব শর্মার খেদটাও একই। বললেন, ভীষণ রাগ হয় এই ফোন ব্যবহার করে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় হ্যাং হয়। দিনে ৫-৬ বার রিস্টার্ট দিতে হয়। এত টাকা দিয়ে সেট কিনলাম এখন মনে হচ্ছে টাকাগুলো নষ্টই করলাম, কষ্টের অভিব্যক্তি শিপ্লব শর্মার।
তানিম চৌধুরী স্যামসাং ব্যবহার করছেন আট মাস ধরে। কিন্তু এই সেটে তার ভোগান্তির বয়স এখন পাঁচ মাস। অর্থাৎ ১৮,৫০০ টাকা ব্যয়ে সেট কেনার তিন মাসের মধ্যেই ভোগান্তি শুরু। অনেক সমস্যার মধ্যে অন্যতম যখন তখন হ্যাং হয়ে যায়। কখনো স্ক্রিন সাদা হয়ে যায়।
শান্তনু দাস জানালেন তিনি জিটিএস ৫৭৮২ মডেল ব্যবহার করছেন। এই ফোন সেটের চার্জ কম থাকে, গেমস খেললে সেট গরম হয়ে যায়, তাছাড়া সেট হ্যাং হওয়া নিয়মিত ঘটনা। ছয় মাসের আগেই ব্যটারি ড্যামেজড।
মজিবুল হক মুরাদের ফোন যখন তখন হ্যাং হয় না, তবে ছবি তুলতে গেলেই হ্যাং হয়ে যায়। এরপর রিস্টার্ট দিয়ে ফের ছবি তুলতে গেলে আবারও হ্যাং হয়। ১০/১২ মাস আগে কেনা ফোন চালু রাখতে ক্যামেরা বন্ধ করে রাখতে হয়। বড় পিক্সেলের কনফিগারেশন দেখে দামি ফোন সেট কিনলেন মুরাদ। কিন্তু এখন ছবি তোলাই বড় সমস্যা। ফোন চালু রাখতে হলে ক্যামেরা বন্ধ রাখাই এখন শর্ত।
সালাউদ্দিন বাপ্পীর আকুতি, আমি স্যামসাং গ্রান্ড টু ব্যবহার করি, কিছুক্ষণ নেট ব্যবহার করার পর আমার সেটটা অনেক গরম হয়ে যায়, গরম হয়ে হ্যাং হয়ে যায়... এর সমাধান কি জানাবেন?
শত শত অভিযোগ, অনুযোগ, হতাশার গুটিকয় উদাহরণমাত্র।
স্যামসাং কেনো হ্যাং হয়? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাইলে তাদের অনেকেই বলেন, ব্যবহারের ত্রুটির কারণেই এটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে সেটের কারিগরি ত্রুটিও দায়ী হতে পারে। যখন গ্রাহকরা ফোন কেনার অল্প সময়ের মধ্যেই ফোন হ্যাংয়ের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন, তখন ধরেই নিতে হবে সেটের কারিগরি ত্রুটি রয়েছে।
অভিযোগগুলোও হরেক রকম কেউ ক্যামেরা চালাতে গিয়ে, কেউ সাউন্ড বাড়াতে কমাতে গিয়ে, কেউ ভিডিও চালালে, কেউ অডিও বাজালে, কেউ দ্রুততায় দুবার টাচ করলে হ্যাংগিংয়ের ঝামেলায় পড়েন। এগুলোর অধিকাংশই কারিগরি ক্রুটির কারণেই হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
আলম রওশন নামে এক গ্রাহক জানিয়েছেন, তার ফোনে একটি কল করার পর আরেকটি করার আগে একবার রিস্ট্যার্ট দিতে হয়।
এমএম হাসানের অভিজ্ঞতায় তিনি জীবনে যত ফোন সেট ব্যবহার করেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ স্যামসাং।
সোহেল আলম চৌধুরীর মতে, যতটাকা ব্যয়ে স্যামসাং কেনা হয়, তার তুলনায় এর সার্ভিস অত্যন্ত নিম্ন মানের।
অপর এক গ্রাহকের অভিজ্ঞতা আরও অভিনব। তার স্যামসাং সিম ছাড়া খোলা যায় কিন্তু সিম ঢোকালেই বন্ধ হয়ে যায়।
দাম দিয়ে ব্র্যান্ডেড ফোন সেট কিনেও কেন এসব সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সে প্রশ্ন গ্রাহকদের। এসব সমস্যার সমাধান কোন পথে তার উত্তর স্যামসাং কর্তৃপক্ষেরই জানা।
বাংলাদেশ সময় ১৫৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৫
এমএমকে