সিলেট: রাস্পবেরি পাই দিয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মত ক্লাস্টার কম্পিউটার (মিনি-সুপার কম্পিউটার) তৈরি করেছেন সিলেটের মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী। ক্লাস্টার কম্পিউটার মূলত গবেষণা কাজে ব্যবহৃত হয়।
শিক্ষার্থীদের কম খরচে শিক্ষা দিতেই এটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গবেষক দলটি।
রাস্পবেরি পাই এক ধরনের কমমূল্যের ক্রেডিট কার্ড সাইজের সিঙ্গেল বোর্ড কম্পিউটার। এ কম্পিউটারের প্রসেসর, ৠাম এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি একটি বোর্ডের মধ্যেই থাকে। এর অপারেটিং সিস্টেম লিনাক্স’র মতো।
কম্পিউটার শিক্ষাকে সহজলভ্য করার জন্য ইংল্যান্ডের রাস্পবেরি পাই ফাউন্ডেশন এটি তৈরি করে। বর্তমান বিশ্বে এটি খুবই জনপ্রিয়।
রাস্পবেরি পাই দিয়ে ক্লাস্টার কম্পিউটার তৈরি প্রজেক্টের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেকচারার সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল। ড্রোন নিয়ে গবেষণায় ইতোমধ্যে তিনি খ্যাতি পেয়েছেন।
তার অধীনে এ প্রজেক্টে কাজ করছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থী স্বজন, প্রিনন, শাকিল, লুতফুর, জয় এবং আশিক।
ক্লাস্টার কম্পিউটার তৈরিতে সফলতার খবর জানিয়ে সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল বলেন, দেশে এর আগেও ক্লাস্টার কম্পিউটার তৈরি করা হয়। কিন্তু রাস্পবেরি পাই দিয়ে ক্লাস্টার কম্পিউটার এটিই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, রাস্পবেরি পাই এক ধরনের সিঙ্গেল বোর্ড কম্পিউটার, যা বর্তমান বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় এবং দামে সস্তা। ক্লাস্টার কম্পিউটার ব্যয়বহুল হওয়ায় দেশের খুব কম শিক্ষার্থীই এটি ব্যবহার করার সুযোগ পান। অথচ গবেষণা কাজের জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ক্লাস্টার কম্পিউটার সুপার কম্পিউটারের ছোট রূপ।
দেশের বাইরে রাস্পবেরি পাই ক্লাস্টার কম্পিউটার অনেক জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশে এর ব্যবহার নেই। এসব বিবেচনা করে এবং প্যারালাল কম্পিউটিংকে জনপ্রিয় করার জন্য এ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করা হয়। এখন একটি পোর্টেবল ক্লাস্টার কম্পিউটার নির্মাণের কাজ চলছে জানান গবেষক দলের তত্ত্বাবধায়ক নাবিল।
মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলটি স্বল্প খরচে ক্লাস্টার কম্পিউটার তৈরি করেছে। এখানে ৪টি রাস্পবেরি পাই কম্পিউটার একত্রিত করে ক্লাস্টার কম্পিউটারটি বানানো হয়েছে। তবে চাইলে ৩২টি কম্পিউটার একসঙ্গে করা যাবে।
নাবিল জানান, রাস্পবেরি পাই দিয়ে ক্লাস্টার কম্পিউটার তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
মূলত গবেষণা কাজে যেখানে অনেক বেশি প্রসেসিং পাওয়ার প্রয়োজন হয় সেখানে ব্যবহৃত হয় ক্লাস্টার কম্পিউটার। আমাদের বানানো ক্লাস্টার কম্পিউটারের প্রসেসিং স্পিড খুব বেশি না হলেও, কিভাবে ক্লাস্টার কমিপউটার কাজ করে, তা কম খরচে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য বানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
কম্পিউটারটি বর্তমানে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন ল্যাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এটি একটি ওপেন সোর্স প্রজেক্ট। তাই কেউ এটি তৈরি করতে চাইলে www.facebook.com/Nabilphysics যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া হবে বলে জানান প্রজেক্টের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৩ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৫
এএএন/জেডএস