বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) থেকে: ভূমিকম্প হওয়ার আগেই সতর্কবার্তা পাওয়ার উপায়, রোবটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পরিচালনা কিংবা দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় রোবট পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি-এমন সব নানা উদ্ভাবনে উদ্ভাসিত তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো-২০১৫।
রাজধানীর আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের এই মেলা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবাইকে মুগ্ধ করে রেখেছিল।
দর্শনার্থীদের মুগ্ধতার পাশাপাশি তরুণদের এসব উদ্ভাবনের পুরস্কারও মিলেছে। ৫০টি গ্রুপে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে মেলায় অংশ নেন বিভিন্ন
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৭ জুন) মেলার শেষ দিনে তিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট দেওয়া হয়।
এরমধ্য ভূমিকম্পের সতর্কবার্তার পদ্ধতি উদ্ভাবন করে প্রথম হয়েছে বেসরকারি আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এআইইউবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় দলটিতে ছিলেন রায়হানুল হক, সোয়াইব হাসান, আসাদুল্লাহিল গালিব ও আক্তার সাদাফ। আর সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন তাহিয়া ও ফাহরিন।
প্রতিক্রিয়ায় রায়াহানুল হক বলেন, আর্থকোয়াক মনিটরিং অ্যান্ড ওয়ার্নিং প্রজেক্ট’র মাধ্যমে আমরা দেখিয়েছি ঢাকা শহরে ভূমিকম্প হওয়ার ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ড আগেই একটা সতর্কবার্তা সবার কাছে পৌঁছে যাবে।
‘দূরবর্তী জায়গায় একটি সেন্সর নোট রাখা হবে। আর ঢাকা শহরের মধ্যে একটি ল্যাপটপসহ মনিটরিং রুম। ভূমিকম্প শুরু হওয়ার ২০ থেকে ২৫ সেকেন্ড আগে এসএমএস’র মাধ্যমে সবাইকে সতর্ক করা যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
অন্যদিকে চালক ছাড়া প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পরিচালনার পদ্ধতি আবিষ্কার করে দ্বিতীয় হয়েছে বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এই দলে ছিলেন আবুল আল আরবি ও খালেদ বিন মুঈন উদ্দিন।
‘স্মার্ট অটোমেটেড গাইডেড ভেহিক্যাল প্রজেক্টে’র মাধ্যমে তারা উদ্ভাবন করেছেন কীভাবে প্রতিষ্ঠানের সব গাড়ি চালক ছাড়া পরিচালনা করা সম্ভব।
আবুল আল আরবি জানান, তাদের প্রজেক্টে দেখানো হয়েছে রোবটের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠানের গাড়ি পরিচালনার পদ্ধতি। সিসি ক্যামেরা থেকে ভিডিও ফুটেজ
দেখে কম্পিউটারের মাধ্যমে গাড়ির মধ্য থাকা রোবট পরিচালনা করা হবে।
আর দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় রোবট পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি আবিষ্কার করে তৃতীয় হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। দলে ছিলেন মাইনুল হাসান, আমানুল রিয়াদ ও মো. আবির।
চুয়েট শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন করেছেন দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় যেখানে মানুষ যেতে পারবে না সেখানে রোবট পাঠিয়ে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি।
দলটির সদস্য আমানুল রিয়াদ বলেন, অনেক বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা নিয়ে বিপদে পরতে হয়। এ চিন্তা মাথায় রেখেই এই উদ্ভাবন করা হয়েছে।
তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীদের আগ্রহের অন্যতম মূল কেন্দ্র ছিল উদ্ভাবন কেন্দ্রটি। তরুণদের চমক লাগানো এসব উদ্ভাবন প্রদর্শন করে খুশি দর্শনার্থীরাও।
মিরপুর থেকে আসা কলেজ ছাত্র মুজিবুর রহমান বলেন, মেলার ইনোভেশন সেন্টারে অনেক নতুন জিনিস দেখেছি। এটা নতুন অভিজ্ঞতাও বটে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এবং সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত প্রদর্শনী শুরু হয় গত ১৫ জুন সোমবার।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা উপভোগ করেছেন নতুন উদ্ভাবনী আর পণ্যের সমহার এই প্রদর্শনী। বুধবার রাতে সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা নামে প্রযুক্তিপ্রেমীদের এ মেলার।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৫ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৫
একে/এমএ