ঢাকা: ভুলবশত বাসার বৈদ্যুতিক বাতির সুইচ বন্ধ করেননি কিংবা জ্বলছে গ্যাসের চুলা; চলে এসেছেন অফিসে। মনের ভুলে থাকতে পারে বাসার দরজাটিও খোলা, দুশ্চিন্তা চুরি-অপচয়-দুর্ঘটনার।
শুধু বাতি-চুলা-দরজাই বন্ধ করা নয়, মোবাইল অ্যাপস দিয়ে দূর থেকে নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা যাবে বাসা-বাড়ির। এসবই সম্ভব একটি স্মার্ট বিল্ডিংয়ে।
‘ইনোভেশন ফর স্মার্ট গ্রিন বিল্ডিং টেকনোলজি’ নামে এমনই একটি কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের আওতায় একটি ভবনের সব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে মোবাইল ফোনের অ্যাপস দিয়ে; এতে গ্যাস-বিদ্যুতের অপচয় রোধের পাশাপাশি, বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে শতভাগ।
স্মার্ট সিকিউরিটি সিস্টেমে স্মার্ট ফোনের অ্যাপসের মাধ্যমে যে কোনো স্থান থেকেই বাসা-বাড়ির নিরাপত্তা মনিটরিং করা যাবে। অনুপ্রবেশকারী শনাক্ত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঙ্গে সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মালিকের কাছে ছবিসহ বার্তা চলে যাবে।
এই প্রযুক্তিতে আশপাশে মানুষের উপস্থিতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে লাইট অন/অফ হয়। এই স্মার্ট লাইট’র মাধ্যমে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করা সম্ভব।
বাসাবাড়ি অফিসের সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি টাচের মাধ্যমে অন-অফ করা যাবে স্মার্ট সুইচ দিয়ে। যে কোনো স্থান থেকে মনিটর ও নিয়ণ্ত্রণ করা যায়। আছে সহজে প্রতিস্থাপনযোগ্য টাচস্ক্রিন সুইচ বোর্ড।
স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে দূর থেকে স্মার্ট সুইচ, স্মার্ট ম্যাজিক লাইট, স্মার্ট এনার্জি মিটার ছাড়াও স্মার্ট ওয়াটার ট্যাংকের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও পানির অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হবে এই প্যাকেজের আওতায়।
কর্মসূচি বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগের সহযোগী হিসেবে রয়েছে সরকারের নিবন্ধিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘এপলম্বটেক বিডি’।
এছাড়া স্মার্ট পর্দার মাধ্যমে সূযের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার ও স্মার্ট সিকিউরিটি সিস্টেমের মাধ্যমে বাসাবাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।
ইতোমধ্যে আইসিটি বিভাগসহ সরকারের বেশ কয়েকটি ভবনে এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, এতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সম্পদের সঠিক ব্যবহার করা যাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বা কেউ চাইলে তারা সহযোগিতা করবে।
প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এপলম্বটেক বিডি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সায়ফুল্লাহ।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বিদ্যুতের উৎপাদনে ব্যববস্থাপনাও গুরুত্বপূর্ণ। তাদের প্রযুক্তি এই ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করে খরচ কমানো যাবে।
তারাই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা সফটওয়ার, হার্ডওয়ার দিয়ে এসব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে আসছে। সরকার চাইলে পলিসি পরিবর্তন করে ব্যাপকভাবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন মোহাম্মদ সায়ফুল্লাহ।
আইসিটি বিভাগের উপসচিব ও ‘ইনোভেশন ফর স্মার্ট গ্রিন বিল্ডিং’ কর্মসূচির পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে মোবাইল ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, পানির ব্যবহার ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অপচয় রোধ করা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০১ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম