ঢাকা: ইন্টারনেট ব্যবহার করে অপরাধ ঠেকাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন সংশোধনের পাশাপাশি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তায় নতুন আইন করছে সরকার।
প্রস্তাবিত এ আইনে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এবং সাইবার অপরাধ প্রতিকার,প্রতিরোধ,দমন,শনাক্তকরণ,তদন্ত ও বিচারে যথাযথ ব্যবস্থা থাকবে।
প্রস্তাবিত সাইবার আইন-২০১৫ খসড়ায় জাতীয় সাইবার নিরাপত্তায় থাকবে ‘সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট’। কন্ট্রোলার অব সার্টিফায়িং অথরিটি’ অফিসের নাম হবে ‘সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট’। এই ডিপার্টমেন্ট’ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্র হিসাবে পরিচালিত হবে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে- ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা নামের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ গঠন করতে পারবে সরকার। সংস্থার আওতায় থাকবে ‘সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট।
এ কর্তৃপক্ষের প্রধান থাকবেন মহাপরিচালক। সরকার প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক, উপ-পরিচালক এবং সহকারী পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। নতুন এই দপ্তর থাকবে ঢাকায়। তবে সরকার প্রয়োজনে দেশের যে কোন স্থানে নির্ধারিত সময়ের জন্য বা স্থায়ীভাবে শাখা কার্যালয় স্থাপন করতে পারবে।
মহাপরিচালকের কার্যালয়ে থাকবে ‘সাইবার ইলেকট্রিক রেকর্ড সংরক্ষণ কক্ষ’। এ কক্ষে ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা হবে। এছাড়া সাইবার নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হলে এর প্রতিকার বিধানে প্রয়োজনে অন্য কোন ল্যাব কক্ষে স্থাপন করতে পারবে।
‘সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট’ এর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে। ‘সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট’ বাংলাদেশের সাইবার নিরাপত্তা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হবে।
সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট এর অধীনে বাংলাদেশ সাইবার ইমারজেন্সি রেসপন্স টিম গঠন করা হবে। বাংলাদেশের কোথাও সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে বা সাইবার হামলা হলে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ব্যবস্থা নেবে এই টিম।
সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে ‘জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিল’ থাকবে। এই কাউন্সিলের সভাপতি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া এই কাউন্সিলের সদস্য থাকবেন অর্থমন্ত্রী,শিক্ষামন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী মনোনীত মন্ত্রী সমমর্যাদার একজন সদস্য।
এই কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে থাকবেন তথ্য সদস্য সচিব। আর সাইবার সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের ‘মহাপরিচালক থাকবেন সদস্য সচিব। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত দুইজন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সদস্য থাকবেন সাইবার নিরাপত্তা কাউন্সিলে।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়া এবং ব্লগার হত্যাসহ নানা ঘটনার পর এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগ আইনের খসড়াটি প্রস্তুত করে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন,আগামী আগস্ট মাসেই খসড়া আইনটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর আইন হিসেবে পাসের জন্য উত্থাপন করা হবে জাতীয় সংসদে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৫
এসএমএ/আরআই
** গোপনে ব্যক্তিগত ছবি তুললেই ১০ বছর কারাদণ্ড
** আইনের জালে আটকা পড়বে সাইবার সন্ত্রাসীরা