বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টার থেকে: বিদেশি ডিভাইসে দেশের বিশাল বাজার দখল হয়ে যাচ্ছে। নিজেদের বাজারে নিজেদের দখল রাখতে এবার ডিভাইস বানাতে হবে নিজস্ব কনটেন্টে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশেষ অবদান রাখা এবং বিজয় বাংলা কী-বোর্ড ও সফটওয়্যার আবিষ্কারক মোস্তাফা জব্বার বলছেন এসব কথা।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে শুরু হওয়া তিনদিনের ‘রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপো-২০১৫’তে স্টল নিয়েছেন তিনিও। সফটওয়্যার বিষয়ক শিক্ষামূলক নানা পুস্তকে সাজিয়েছেন তার স্টলটি।
শুক্রবার (১৪ আগস্ট) মেলার দ্বিতীয়দিন বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন তিনি।
মেলার প্রশংসা দিয়েই আলাপ শুরু করেন মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেন, গোছানো হয়েছে। স্বল্প পরিসরে সুন্দর আয়োজন। গোছানো পরিপাটি লোকজন আসছেন। যারা ডিভাইস বোঝেন। মেলা আমার ভালো লাগে।
এরপর বলেন, অনেকের কাছেই ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক। কিন্তু ফেসবুক তো ভবিষ্যৎ হতে পারে না।
এ মেলায় বলুন বা বাজারে বলুন, ডিজিটাল ডিভাইস, ট্যাব, স্মার্টফোন কোনটি আমাদের নয়, অন্যদেশের। বাইরের দেশ থেকে এনে বিক্রি করা হচ্ছে সব। কিন্তু এভাবে চলতে পারে না। সারাজীবন অন্যদের কাছ থেকে এনে পণ্য বিক্রি সুখকর নয়’- বলেন তিনি।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ক্যাসিন, কী-বোর্ড দিয়ে শুরু হতে পারে। এভাবে বিভিন্ন ডিভাইস আমরা বানাতে পারি।
নিজেদের কনটেন্টের বিষয়টিতে বারবারই জোর দিচ্ছিলেন তিনি। বলেন, কনটেন্টের খুব অভাব দেখি। কিন্তু কারও যেন মাথাব্যথা নেই। কাউকে না কাউকেতো দায়িত্ব নিতে হবে। ইনভলভ হতে হবে পণ্য তৈরিতে। কাউকে বিনিয়োগ করতে হবে।
এক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলোকে এগিয়ে এলে ভালো মনে করছেন তিনি। জব্বার বলেন, মোবাইল অপারেটরগুলো রিং-টোন বিষয়ে যত ব্যস্ত, কনটেন্ট নিয়ে কোনো ব্যস্ততা নেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো জয় করতে হবে। তা নাহলে অন্যের ডিভাইস বিক্রি করেই সারাজীবন চলতে হবে।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা এক্ষেত্রে আশির্বাদ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন জব্বার। তিনি বলেন, আমাদের যে পরিমাণ জনসংখ্যা, এত বড় বাজার, তাহলে কেন উৎপাদন করতে পারবো না- বুঝি না। নিজেদের বাজারে নিজেদের দখল রাখতে হবে।
এ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, লোকাল ব্র্যান্ড আছে। কিন্তু লোকাল ব্র্যান্ড মানে কেবল লোগো, ভিতরের বস্তু অন্যেরই। আমাদেরকে লোগোর বাইরে আসতে হবে।
তবে মোটেই নিরাশ নন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির (বিসিএস) এ সভাপতি। তিনি বলেন, আমি তবু আশাবাদী। এ অবস্থার পরিবর্তন হবে। স্বাধীনতার পর আমাদের অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। এখনো সেভাবে উদ্যোগ নেই, ছোট ছোট প্রচেষ্টাগুলো ধোপে টেকেনি। কিন্তু চেষ্টা করলে পাওয়া যাবে।
‘এটি গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্প্রতি বলেছেন, শুধু তৈরি নয়, আমরা রফতানিও করবো। সরকার প্রধানের আগ্রহ থাকলে এবং কেউ এগিয়ে এলে হবে- বলেন তিনি।
জব্বার বলেন, সিমেন্ট, গায়ে মাখা সাবান একসময় আমদানি করতে হতো। বাচ্চার গুড়ো দুধ আনতাম বাইরে থেকে। এখন সেসব অতিক্রম করেছি। দেশেই ভালো পণ্য রয়েছে।
‘তাই ডিভাইস তৈরির বিষয়টি সময় থাকতেই সিরিয়াসলি নিতে হবে’- বলেন মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মেলায় উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট কম্পিউটার নিয়ে দেশে এটি চতুর্থ আয়োজন।
এতে একটি মেগা-প্যাভিলিয়ন, ১৩টি প্যাভিলিয়ন, ৫টি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং ১০টি স্টল রয়েছে। যার যার সর্বশেষ প্রযুক্তি ও মডেলের ডিভাইস নিয়ে অংশ নিয়েছে স্যামসাং, সিম্ফনি, স্টাইলাস, গোল্ডবার্গ, জেডটিই, অপ্পো, হুয়াওয়ে, ম্যাক্সিমাস, সনি, র্যাংগস, এলিট, আসুস, লেনোভো, মাইসেল, টুইনমস, প্রেস্টিজিও, কন্টিগো, শাওমি, জিওনি, ওয়ানপ্লাস, এইচটিএস, এডাটা, এইচপিএস, গেজেট গ্যাং সেভেন, মিউজু, আইনল, ডিএক্স জেনারেশন প্রভৃতি ব্র্যান্ড। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত মেলার প্রদর্শনী ও বিক্রি চলবে।
এবারের মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেড। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মেলায় বিশেষ একটি প্যাভিলিয়ন রাখা হয়েছে।
** মেলায় বিক্রেতাদের মুখে হাসি
** মেলায় সাড়ে ৪ হাজারে ট্যাব
** স্টাইলাস ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট নিয়ে মেলায় এসিআই
** ওকাপিয়া’র ফোন-ট্যাবে পাওয়ার ব্যাংক ফ্রি
** প্রথমবারের মতো ‘ওয়ানপ্লাস টু’ আনলো ডিএক্স জেনারেশন
** বৃষ্টিভেজা সকালে মেলার শুরুতেই লম্বা লাইন
** স্মার্টফোন মেলার আকর্ষণ বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন
** বিক্রির শীর্ষে সিম্ফনি এক্সপ্লোরার পি৬
** মেলায় মোবাইল কিনে সিঙ্গাপুর!
** প্রথম দিনেই জমজমাট রবির স্মার্টফোন-ট্যাব মেলা
** প্রযুক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশ একটি মডেল
** রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপোর পর্দা উঠলো
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৪, ২০১৫
এসকেএস/এসএইচ