ঢাকা: হ্যান্ডসেট, মোবাইল ডিভাইসসহ প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে বসা স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলায় অসাধারণ আকর্ষণ ছিলো তরুণ প্রজন্মের।
সর্বশেষ প্রযুক্তি পণ্যটি নিজের হাতে তুলে নিতে আগ্রহের কমতি ছিল না তাদের।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) শনিবার (১৫ আগস্ট) শেষ হওয়া তিন দিনব্যাপী রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপো’তে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি এবং আয়োজন নিয়ে বাংলানিউজের কাছে এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার।
মোবাইল ডিভাইসে ইন্টারনেটের অবিশ্বাস্য ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রযুক্তি বিশ্বে তরুণরাই অগ্রগামী সৈনিক। অন্যান্য বয়সের ব্যবহারকারীরাও মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করছে তুলনামূলক বেশি।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র সর্বশেষ জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক কোটির বেশি বেড়েছে। মোট গ্রাহকের ৯৭ শতাংশই মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।
জুন পর্যন্ত এক বছরে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে এক কোটি ৪ লাখ ৮৭ হাজার। একই সময়ে মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে প্রায় এক কোটি ৩ লাখ ১৩ হাজার।
বর্তমানে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৬৮ লাখ ৯৯ হাজার। আর মোট ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ৮৩ লাখ ৪৭ হাজার।
মোবাইলে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ার বিষয়টির ছাপ ছিল স্মার্টফোন ও ট্যাব মেলায়। তরুণ-তরুণীদের আগ্রহ ছিল কম দামে একটি আপডেট মোবাইল ডিভাইস কেনা।
আর তরুণ-তরুণীদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মেলায় প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি পণ্য বিক্রি করতে পেরেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্যবারের তুলনায় এবার ক্রেতাদের সাড়া বেশি।
একাধিক স্টলের বিক্রেতা জানান, মধ্যম পর্যায়ের স্মার্টফোন ও ট্যাবের চাহিদা ছিল তুলনামূলক বেশি। তবে ক্রেতারা শুধু যে দামের বিষয়টি বিবেচনা করছেন এমন নয়, দাম কম-বেশি হলেও কোনো পণ্য পছন্দ হলেই লুফে নিয়েছেন তারা।
তিন দিনব্যাপী মেলায় ছাড়-উপহার দিয়ে আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়। মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতার তাই ছিলো সন্তুষ্টি।
দর্শকরা আধুনিক প্রযুক্তির সব স্মার্ট ডিভাইস যাচাই বাছাই করে দেখতে ও কিনতে পেরেছেন। পাশাপাশি প্রদর্শনীতে প্রথম দিন থেকেই উন্মুক্ত করা হয় একাধিক ব্র্যান্ডের বেশ কয়েকটি নতুন মডেলের স্মার্টফোন।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান এক্সপো মেকারের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, তিন দিনে প্রায় ৩০ হাজার দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল এই মেলায়। কম বেশি সবাই কিনেছেন মোবাইল, ট্যাবসহ অন্যান্য ডিভাইস।
গত বছরের তুলনায় এবার অনেক বেশি সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
এ বিষয়ে নিজের মূল্যায়ন সম্পর্কে প্রযুক্তিবিদ ও বাংলা লেখার সফটওয়্যার ‘বিজয়’র সত্ত্বাধিকারী মোস্তফা জব্বার বাংলানিউজকে বলেন, এটি একটি সফল মেলা হয়েছে।
তরুণ প্রজন্মসহ অন্যান্য বয়সী মানুষের আগ্রহের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এধরনের আয়োজনের পরিসর ও সময় আরও বাড়ানো উচিত।
শিশুদের জন্য নিজের তৈরি শিক্ষামূলক সফটওয়্যার এবং পাঠ্য পুস্তকের ডিজিটাল ভার্সনের চাহিদাও মেলায় ছিল অনন্য, জানান মোস্তফা জব্বার।
ভবিষতে এ রকম আয়োজনে তরুণ প্রজন্মের জন্য শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরির উপর জোর দেন এই প্রযুক্তিবিদ।
মেলায় স্যামসাং, অ্যাপল, সিম্ফনি, স্টাইলাস, গোল্ডবার্গ, জেডটিই, অপ্পো, হুয়াওয়ে, ম্যাক্সিমাস, সনি, র্যাংগস, এলিট, আসুস, লেনোভো, মাইসেল, টুইনমস, প্রেস্টিজিও, কন্টিগো, শাওমি, জিওনি, ওয়ান প্লাস, এইচটিএস, এডাটা, এইচপিএস, গ্যাজেট গ্যাং সেভেন, মিউজু, আইনল, ডিএক্স জেনারেশন- এমন ব্র্যান্ড অংশ নেয়।
একটি মেগা প্যাভিলিয়ন, ১৩টি প্যাভিলিয়ন, পাঁচটি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং ১০টি স্টলে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান সর্বশেষ প্রযুক্তি ও মডেলের ডিভাইস প্রদর্শনী ও বিক্রি করে।
মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি। সহ-পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল এলিট মোবাইল, গোল্ডবার্গ, হুয়াওয়ে, স্যামসাং, স্টাইলাস, সিম্ফনি ও জেডটিই।
আর এডুমেকার, এলিট ফোর্স, পিপলস রেডিও ৯১.৬ এফএম ও টেকশহর ডটকম ছিল সহযোগী হিসেবে।
শুধুই প্রযুক্তি পণ্য কেনা-বেচা নয়, বাংলাদেশের ইতিহাসকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে ছিল অনন্য এক আয়োজন।
বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে দেখানো হয় তার দুর্লভ চিত্র ও ভিডিওচিত্র। প্রচার করা হয় মুক্তিযুদ্ধ ও দেশাত্ববোধক সংগীত।
তরুণদের আগ্রহ বাড়াতে মেলা উপলক্ষে রবি স্মার্টফোন ও ট্যাব এক্সপোর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে (https://www.facebook.com/STExpo) বিশেষ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
এতে বিজয়ীদের ট্যাব, স্মার্টফোনসহ আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএ