পহেলা সেপ্টেম্বর ছিল অনলাইন শপিং সাইট ব্র্যানো ডটকমের বর্ষপূর্তি। আর এই বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঘোষিত ‘হ্যাপি সেল ডে’তে সর্বোচ্চ বিক্রির রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
অনেকটা আমাজনের ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ অথবা ফ্লিপকার্ট এর ‘বিগ বিলিয়ন ডে’ র অনুরুপে অনলাইনের ক্রেতাদের জন্য দুই সপ্তাহ আগে এই দিনটিকে ‘হ্যাপি সেল ডে’ বলে ঘোষণা করে ব্র্যানো।
বিশ্বের নামকরা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সারা বছরে একবার এ ধরনের সুযোগ নিয়ে আসে গ্রাহকদের জন্য। আর গ্রাহকেরা অধীর আগ্রহ নিয়ে আকর্ষনীয় সব অফারে পণ্য কেনার জন্য দিনটির অপেক্ষায় থাকে।
দেশে এই প্রথমবার অনুরুপ ‘হ্যাপি সেল ডে’তে ৩৫% পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দেয় ব্র্যানো। আর খুশীর খবর সবার মাঝে পৌছে দিতে সোশ্যাল, ব্লগ, অনলাইন মিডিয়া, পত্রিকায় প্রচারনা চালানো হয়।
এর ফলস্বরূপ, মাত্র একটা দিনে ১০ লাখ টাকার অধিক পণ্য বিক্রি করে বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে সর্বোচ্চ বিক্রির ইতিহাস গড়লো তারা।
এই আয়োজন সম্পর্কে ব্র্যানোর অপারেশন হেড সাগর দে বলেন, গ্রাহকদের সহজেই পণ্যের ডেলিভারি দেওয়ার লক্ষ্যে ‘হ্যাপি সেল ডে’র জন্য আগে থেকেই ওয়ারহাউসে পণ্যের মজুদ শুরু করা হয়। “হ্যাপি সেল ডে” সকাল ১০টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ছিলো। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি আগে থেকেই নেয়ার ফলে গ্রাহকদের সাথে লাইভ চ্যাট, ফোন কল, কল ব্যাক, সোশাল মিডিয়ার সকল মেসেজের উত্তর দেয়া থেকে সব কিছুই খুব সহজেই এবং অনেক ভালোভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছি”।
টেকনিক্যাল প্রস্তুতি সম্পর্কে টেকনিক্যাল হেড সজীব বড়ুয়া বলেন, ব্র্যানো সবসময় ১৬টি প্রসেসরযুক্ত ৩২জিবি ৠাম সম্পন্ন সার্ভার ব্যবহার করে। কিন্তু “হ্যাপি সেল ডে” উপলক্ষে বাড়তি সাবধানতা হিসাবে সার্ভার মেমোরি দ্বিগুণ করা হয় এবং সার্ভারকে ২৪X৭ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখা ছিলো যাতে কোন রকমের হ্যাকিং অথবা সার্ভার ডাউনটাইমের শিকার না হতে হয়। সেই হিসাবে আমরা শতভাগ সাফল্য অর্জন করেছি”।
সুত্র মতে, এদিন বিক্রি সকাল দশটা থেকে শুরুর প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যেই ১ লাখ টাকা বিক্রি ছাড়িয়ে যায়। ৩৬ হাজার ৩৫০ জন ভিজিটর, এবং ২,৫৯,৬৫৯ বার পেজ ভিউ হয়।
ব্র্যানোর সিইও মি. রাজীব রায় বলেন, বাংলাদেশের অনেক মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় অনিহা প্রকাশ করে এবং ভরসা করে না । তাই অনলাইনে কেনাকাটায় উৎসাহিত করতে উদ্যেগটি নেয়া হয়।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) প্রেসিডেন্ট রাজীব আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। আশা করি আগামী বছর ব্র্যানো একদিনে এক কোটি টাকা বিক্রি করবে।
তিনি বলেন, আগে শুধু USA, China এবং India তে ই-কমার্স এর জন্য বিশেষ দিন হতো পালন হতো। বাংলাদেশেও এই প্রবণতাটা শুরু হয়ে গেছে, যা ব্র্যানো ডট কম অত্যন্ত সফলতার সাথে পালন করেছে । আমরা আশা করবো ব্র্যানো ডট কম এর মতো অন্যান্য ই-কমার্স সাইটেও এ আয়োজন করা হবে।
তাহলে আমদের দেশের অর্থনীতিকে এবং বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে আমাদের দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ০১ সেপ্টেম্বর আইটি বিশেষজ্ঞ রাজীব রায়ের হাত ধরে ব্র্যানোর বাংলাদেশের ই-মার্কেটে পদার্পণ। অরিজিনাল এবং ব্র্যান্ডেড পারফিউম, কসমেটিকস নিয়ে যাত্রা শুরু করা সাইটটিতে এখন ৮টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাটেগরিতে পাঁচ হাজারেরও বেশি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের গ্রাহকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
ক্যাটেগরিগুলো হচ্ছেঃ পারফিউম, কসমেটিকস, শাড়ি, ঘড়ি, অলঙ্কার, ডিজাইনার পোশাক, ছোটদের সামগ্রী এবং পেইন্টিং।
এখান গ্রাহকরা ‘ট্র্যাকিং’ সিস্টেমের মাধ্যমে অর্ডার ডেলিভারি পাওয়ার আগে সেগুলোর অবস্থানও ট্র্যাক করতে পারেন। ক্যাশ অন ডেলিভারি, মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট পদ্ধতিতে কেনাকাটা করা যায় ব্র্যানোর পণ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৫
এসজেডএম