বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে শুরু হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উৎসব ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক’।
স্থানীয় নানকিং বাজারে এই উৎসবের আয়োজন করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ এবং গ্রামীণফোন।
বুধবার সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ইন্টারনেট উইক উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহরিয়ার আলম বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তিতে ঢাকার পরেই রাজশাহীকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সিলিকন ভ্যালির আদলে রাজশাহীতে চালু হচ্ছে বরেন্দ্র সিলিকন ভ্যালি। এসবের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫ উদযাপনে ঢাকার পরেই রাজশাহীতে বড় উৎসব আয়োজিত হচ্ছে।
আমরা এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সকল উপজেলা পর্যায়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌছে দেওয়ার কাজ করছি। এছাড়া ২০১৮ সালের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এই সেবা পৌছে দেওয়া হবে। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকসংখ্যা ৫ কোটি ৭ লাখের অধিক। সরকারের আইসিটি ডিভিশন, বেসিস ও গ্রামীণফোন প্রতিবছর আরও ১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক তৈরির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। জুনাইদ আহমেদ পলক তার বক্তব্যে এসব বলেন।
অনুষ্ঠানে বেসিস সভাপতি বলেন, বিভাগীয় শহর রাজশাহী তথ্যপ্রযুক্তি অনেকাংশে এগিয়ে গেছে। আমরা প্রত্যাশা করি ফেসবুক, গুগল, হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্রতিষ্ঠান বা সেবা রাজশাহীতে তৈরি হবে। তৈরি হবে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ বিপুল জনশক্তি। সেই লক্ষ্য নিয়ে রাজশাহীতে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের বড় আয়োজন করা হয়েছে।
গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বলেন, দেশব্যাপী সবার কাছে ইন্টারনেটের প্রচার ও প্রসারে আমরা সম্প্রতি ইজিনেট সেবা শুরু করেছি। বেসিস ও আইসিটি ডিভিশনের সঙ্গে যৌথভাবে এই আয়োজনে যুক্ত হতে পেরে আমাদের এই কাজ আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এসএম আশরাফুল ইসলাম, বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫ এর আহ্বায়ক রাসেল টি. আহমেদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বেসিসের সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, মহাসচিব উত্তম কুমার পাল, যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, কোষাধ্যক্ষ শাহ ইমরাউল কায়ীশ, পরিচালক ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫ এর সহ-আহ্বায়ক আশ্রাফ আবির, পরিচালক আরিফুল হাসান অপু, নির্বাহী পরিচালক সামি আহমেদ, গ্রামীণফোনের গ্রামীণফোনের ডিরেক্টর (স্টেকহোল্ডার রিলেশনস) ইশতিয়াক হুসেন চৌধুরী প্রমুখ।
নানা উৎসাহ, উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী চলা এই উৎসবের রাজশাহী বিভাগের আয়োজনে বিভিন্ন ই-কমার্স, ওয়েবপোর্টাল, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও সারাদেশের স্থানীয় মোবাইল ভিত্তিক উদ্যোগ প্রচার ও প্রদর্শন করা হচ্ছে। যা স্থানীয়রা সরাসরি দেখতে ও জানতে পারছেন।
এর আগে ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বনানী মাঠে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক আয়োজন করা হয়। ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পর ১১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সিটি ইনডোর স্টেডিয়ামে এই উৎসব পালিত হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে বড় উৎসবের পাশাপাশি ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দেশের সবকটি উপজেলায় এই উৎসব পালন করা হচ্ছে। উৎসবের অংশ হিসেবে প্রায় অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার এবং দেশের গনমাধ্যমগুলোতে অন্তত ৭টি পলিসি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। আর এর মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রবৃদ্ধির হার বাড়িয়ে প্রতিবছর নূণ্যতম ১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়ানো, সাধারণ জনগনকে আরও বেশি অনলাইন সেবার আওতায় আনাসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতকল্পে এগিয়ে যাওয়া এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৫
এসজেডএম