ঢাকা: সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে মেসেজিং অ্যাপ। বিভিন্ন প্লাটফর্মে কোটি কোটি মানুষের মনের অনুভূতি আজ প্রকাশ হচ্ছে মেসেজিং অ্যাপে।
যেখানে ভূমিকা রাখছে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, আইএমও, লাইন, টেলিগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটসহ বিভিন্ন ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং (আইএম) প্লাটফর্ম।
কিন্তু এসব আইএম অ্যাপের বেশিরভাগই পাশ্চাত্যের তৈরি, যাদের ইন্টারফেসও ইংরেজিতে। বিদেশি জীবন-যাত্রার সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি করা এসব অ্যাপে বাঙালি ঢঙে মনের কথা সূক্ষ্মভাবে প্রকাশ সম্ভব নয়। তাই বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম আইএম অ্যাপে ভাষাগত সুবিধা খোঁজেন।
বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই বিশ্বের অন্যতম মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিনর বাংলাদেশি গ্রাহকদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করেছে ইন্সট্যান্ট মেসেজিং (আইএম) অ্যাপ ‘কমোয়ো’।
ইন্টারফেস থেকে শুরু করে কনটেন্ট পর্যন্ত সব কিছুতেই খাঁটি বাঙালিয়ানার ছাপ আছে কমোয়োতে। বলা যায়, ‘কমোয়ো’ই প্রথম বাংলা মেসেঞ্জার।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর লেকশো হোটেলে গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় বাংলাদেশি গ্রাহকদের জন্য কমোয়ো অ্যাপটি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে টেলিনর।
অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস নির্ভর স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা অ্যাপটি গুগল প্লে-স্টোর অথবা অ্যাপলের অ্যাপস্টোর থেকে বিনামূল্যে ইনস্টল করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টেলিনর ডিজিটালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রোডে ই ভেস্টনেস এবং গ্রামীণফোনের ব্যবস্থাপক (ডিজিটাল অ্যান্ড ডিভাইস) মোহাম্মদ মুনতাসির মামুন।
অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুধুমাত্র ইন্টারফেস নয়, অ্যাপটির গ্রুপ ও ভয়েস মেসেজিং ফিচারও বাংলাতে করা হয়েছে। প্রতিদিনের জীবন থেকে বিভিন্ন ইনসাইট নিয়ে দারুণ সব স্টিকার সেট দিয়ে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, সবকিছু খুব সহজেই বলা যাবে এ মেসেঞ্জারে। সম্ভাব্য সব উপায়েই বিশেষ করে তরুণদের জন্য মানানসই করে তৈরি কমোয়ো।
শুধু তাই নয়, দেখতে আকর্ষণীয় কমোয়ো বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গেও মানানসই। এই অ্যাপের মাধ্যমে তরুণরা সম্ভাব্য সব উপায়েই বাংলা ভাষায় নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারবেন। প্রতিদিনের জীবনে কাজে লাগে এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছে এর স্টিকারগুলো।
প্রতিমাসেই বিনামূল্যে নতুন স্টিকার পাওয়া যাবে। নানা প্রবাদ-প্রবচনসহ বাংলা চলিত এবং কথ্য ভাষায় তৈরি করা হয়েছে এর স্টিকারগুলো। তাছাড়া বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে বিষয়ভিত্তিক স্টিকারও রয়েছে কমোয়ো’র স্টিকারশপে।
কমোয়ো’র মাধ্যমে গ্রাহকরা টেক্সট মেসেজ, ভিডিও, অডিও পাঠাতে পারবেন। পাশাপাশি গ্রুপচ্যাট অপশনসহ আরও অনেক ফিচার রয়েছে অ্যাপটিতে।
গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের জন্য বিশেষ সুবিধা রয়েছে কমোয়োতে। গ্রাহকরা বিনামূল্যে কমোয়ো ব্যবহার করতে পারবেন।
অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস নির্ভর স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা কমোয়ো ব্যবহার করতে পারলেও উইন্ডোজ নির্ভর স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
তাছাড়া ব্যবহারকারীদের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে অদূর ভবিষ্যতে কমোয়ো সম্পূর্ণ বাংলা একটি কিবোর্ড আনবে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে টেলিনরের ফ্রোডে ই ভেস্টনেস বলেন, ইন্টারনেটে হাজার হাজার অ্যাপ রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে বাংলাদেশি গ্রাহকদের জন্য উপযোগী অ্যাপ খুবই কম। বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেটকে আরও ফলপ্রসূ, আনন্দময় করে তুলতেই ‘কমোয়ো’ নিয়ে এসেছি আমরা।
গ্রামীণফোনের মোহাম্মদ মুনতাসির হোসেন বলেন, যেকোনো ডিজিটাল উদ্যোগকে সমর্থন ও সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এ সেবা এনেছে। ইন্টারনেটের কোনো খরচ ছাড়াই আমাদের গ্রাহকরা এ সেবা ব্যবহার করতে পারবেন।
‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ নিশ্চিতকরণ প্রতিশ্রুতি পূরণে গ্রামীণফোন যৌথভাবে কমোয়ো’র সঙ্গে কাজ করবে উল্লেখ করে মুনতাসির বলেন, ইন্টারনেটকে সহজে ব্যবহারযোগ্য ও সহজলভ্য করতে গ্রামীণফোন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৩টি দেশে ১৭৬ মিলিয়ন (১৭ কোটি ৬০ লাখ) গ্রাহক রয়েছে বিশ্বের অন্যতম মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান টেলিনর গ্রুপের। এছাড়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ এবং এশিয়ায় টেলিনর মোবাইল, ব্রডব্যান্ড ও টেলিভিশন সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে নর্ডিক অঞ্চলের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। গত বছর প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ছিল নরওয়ের মুদ্রায় ১০৬ মিলিয়ন ক্রোন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫
এমএইচপি/জেডএস