ঢাকা: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করছে সরকার। আগামী বছরের মধ্যে চুক্তি করার বিষয়টি মাথায় রেখেই অগ্রসর হচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
চুক্তির আগ পর্যন্ত আপত্তিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে থেকে একটি ফোকাল পয়েন্ট থেকেই অভিযোগ জানাবে সরকার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আমরা চাই এখানে ফেসবুকের একটি অ্যাডমিন অফিস হোক। তাহলে আপত্তিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।
চুক্তির বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চেষ্টা করছি আগামী বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, জানুয়ারি মাসে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফরের কথা রয়েছে প্রতিমন্ত্রীর। সে সময় ফেসবুকের আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন তারানা হালিম, এরআগে বিএনপি শাসনামলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ চুক্তির জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সরকারের সাড়া পায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি দিয়ে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নারী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে হয়রানি করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে তা বেড়ে গেছে।
চুক্তির জন্য আলোচনা করতে গত ৩০নভেম্বর নিজেই চিঠি দেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। পর দিন জবাব দিয়ে ৬ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেসবুক কর্তদৃপক্ষের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন সরকারের তিন মন্ত্রী। ফেসবুকের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের কর্মকর্তা দিপালী লিবার হেন (দক্ষিণ এশিয়ার পলিসি ম্যানেজার) ও বিক্রম লাংয়ের (রাজনৈতিক ও আইন উপদেষ্টা) বাংলাদেশে এসেছিলেন।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, এরপর নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। ভারতে গিয়েও আলোচনা হবে, তারাও এখানে এসে আলোচনা করবে।
চুক্তির আগে আপত্তিকর বিষয়ে অভিযোগের দ্রুত রেসপন্স করার জন্য বলেছেন তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী জানান, চুক্তি না থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইসিটি বিভাগ থেকে অভিযোগ জানানো হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ পেলে তারাও বুঝতে পারে না। বিটিআরসি থেকে একটা ফোকাল পয়েন্ট ঠিক করে দেয়া হবে। তাহলে বোঝা যাবে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ।
এতে দুই পক্ষের কাজ করার সুবিধা হবে বলে মনে করেন তারানা হালিম। বন্ধ হওয়ার ২৩ দিনের মাথায় ১০ ডিসেম্বর ফেসবুক খুলে দেয় সরকার। ১৮ নভেম্বর সরকার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপস ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপসহ কয়েকটি অ্যাপস বন্ধ করে দিয়েছিলো।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চুক্তির আলোচনা অনগোয়িং প্রসেস। চুক্তি হওয়া না হওয়ার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ বা খুলে দেওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বন্ধ করার ক্ষেত্রে শুধু আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি ছিলো।
সরকারের ভাষ্য, ফেসবুক বন্ধ থাকায় এবার দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির পর নাশকতা ও অপরাধ কম হয়েছে।
বিটিআরসি জানায়, ফেসবুকে একজনের অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হলেও অন্য মাধ্যমগুলোতে তা কঠিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৫
এমআইএইচ/আরএইচএস/জেডএস