ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

অবৈধ কব্জায় আন্তর্জাতিক কল, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৬
অবৈধ কব্জায় আন্তর্জাতিক কল, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

ঢাকা: ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়েগুলো (আইজিডব্লিউ) এক তরফাভাবে আন্তর্জাতিক কলরেট বাড়িয়ে দেয়ায় বেড়েছে অবৈধ কল। এতে বৈধপথে কল আসা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।


 
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, অবৈধ ইনকামিং কলের ফলে সরকার যাতে রাজস্ব না হারায় সেজন্য তারা সচেষ্ট।
 
বর্তমানে বিটিসিএল এবং অপর ২২টি আইজিডব্লিউ অপারেটর রয়েছে। বিটিআরসি’র হিসেবে এখন প্রতিদিন দেশের বাইরে (ইনকামিং) থেকে প্রায় ৮ কোটি মিনিট বৈধ কল আসছে।
 
অথচ কলরেট কম থাকলে বৈধ কলের পরিমাণ বেশি থাকে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
আইজিডব্লিউ অপারেটরগুলোর মধ্যে কল আদান-প্রদানে সাতটি অপারেটরের সংগঠন আইজিডব্লিউ অপারেটর ফোরাম (আইওএফ) গত বছরের ১৬ আগস্ট কলরেট দেড় সেন্ট থেকে বাড়িয়ে দুই সেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর ২৪ আগস্ট থেকে এক টাকা ১৭ পয়সা (এক সেন্ট) থেকে বাড়িয়ে এক টাকা ৫৬ পয়সা (দুই সেন্ট) কার্যকর রাখে।
 
নিয়মানুযায়ী, দেড় থেকে সাড়ে তিন সেন্ট পর্যন্ত কলরেট বাড়াতে পারে অপারেটরগুলো।  
 
তবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং বিটিআরসিকে না জানিয়ে একতরফাভাবে কলরেট বাড়ানোয় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার কথা ওই সময় জানিয়েছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
 
গত ১ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, মন্ত্রণালয়কে অবহিত না করে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে অপারেটরগুলোর (আইজিডব্লিউ) কলরেট বাড়ানোয় সরকারের যে রাজস্ব ক্ষতি হবে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ভিওআইপি বাড়লেও এর ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হলে তা মেনে নেওয়া হবে না।

প্রতিমন্ত্রী অবৈধ ভিওআইপি বন্ধে কর্মকর্তাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়ে এ বিষয়ে কোনো প্রকার শৈথিল্য মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন।
 
বিটিআরসি’র কর্মকর্তারা জানান, বিদেশ থেকে প্রতিটি কল আইজিডব্লিউ’র মাধ্যমে প্রবেশ করে। এরপর আইসিএক্সের মাধ্যমে তা সংশ্লিষ্ট অপারেটর বা এএনএসে যায়। অপারেটরগুলো গ্রাহকের ফোনে কল-সংযোগ দেয়।
 
প্রতি মিনিট কল থেকে যে আয় হয় তার ৪০ শতাংশ বিটিআরসি, ১৭.৫ শতাংশ আইসিএক্স, ২২.৫ শতাংশ মোবাইল অপারেটর এবং বাকী ২০ শতাংশ পায় আইজিডব্লিউ কোম্পানি।
 
সরকার যেহেতু কলরেট বাড়ায়নি, সেহেতু সরকার রাজস্ব ভাগাভাগির টাকা আগের দেড় সেন্ট থেকেই প্রাপ্য হচ্ছেন। আধা সেন্টের অর্থ পুরোটাই পায় সাতটি আইজিডব্লিউ অপারেটর। প্রভাবশালীদের তত্ত্বাবধানে গঠিত টায়ার-২ এ থাকা সাতটি অপারেটর অঅন্তর্জাতিক কল পরিচালনা করে আসছে।
 
আর বিদেশ থেকে যারা দেশে কল করবেন, বেশি খরচ গচ্চা যাচ্ছে তাদের।
 
বিটিআরসি’র আগস্ট মাসের হিসেবে কলরেট বাড়ানোর আগে প্রতিদিন ১০ কোটি মিনিট বা তারও বেশি কল আসতো। ডিসেম্বরের শেষেও এক হিসেবে দেখা যায়, গড় ইনকামিং কল ৯ কোটি মিনিট।
 
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কলরেট বাড়ানোয় বৈধপথে কল আসা কমে যচ্ছে। এতে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। বাড়তি খরচ যাচ্ছে প্রবাসীদের।
 
বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ রোববার রাতে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই বৈধ ইনকামিং কলের মাধ্যমে রাজস্ব সরকারের কাছে জমা হোক। এজন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।
 
অবৈধ ভিওআইপি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও দাবি করে বিটিআরসি প্রধান বলেন, এজন্য সবার সচেতনতা দরকার।
 
এদিকে, অবৈধ ভিওআইপি কল ঠেকাতে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। টেলিযোগাযোগ বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এতে অবৈধ ভিওআইপি কমে যাবে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৫
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।