ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাড়া দেবে ফেসবুক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাড়া দেবে ফেসবুক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম

ঢাকা: নারীর প্রতি সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ জানালে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাড়া দেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।
 
সিঙ্গাপুর সফরকালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।


 
রোববার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণ ছাড়াও সব ধরনের সাইবার থ্রেট রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে ফেসবুক।
 
বাংলাদেশে আপাতত ফেসবুকের অ্যাডমিন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকল অনুরোধের ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম সময়ের মধ্যে সাড়া দেবে।
 
অর্থাৎ নারীর প্রতি সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত ইউআরএল সরবরাহ করলে সে বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তারা কী পদক্ষেপ নিলে বা তাদের কী মতামত তা জানাবেন।
 
এজন্য নির্দিষ্ট মুখপাত্রের (বিটিআরসি’র বিডি সিএসআইআরটি’র) মাধ্যমে ফেসবুকের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে, এরইমধ্যে বেশকিছু অভিযোগের সাড়া পাওয়া গেছে বলেও জানান তারানা হালিম।
 
সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সফরে গত ১১ জানুয়ারি দেশ ছাড়েন প্রতিমন্ত্রী, সফরকালে ফেসবুক ছাড়াও সিঙ্গাপুরে গুগল ও মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন তারানা হালিম। ফেসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের তিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিমন্ত্রী।
 
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে দেশে ফিরে রোববার সংবাদ সম্মেলনে তারানা হালিম জানান, পর্নপেজের তালিকা দিলে সে বিষয়ে ফেসবুক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। জীবনের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সংশ্লিষ্ট (যেমন: জিম্মি, সন্ত্রাসী আক্রমণ ইত্যাদি) কনটেন্ট ও তথ্যের ক্ষেত্রে ফেসবুক জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে, এক্ষেত্রে যথাযথভাবে চাহিদা প্রদান করতে হবে।
 
লিখিত বক্তব্যে তারানা হালিম বলেন, ফেসবুকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমানে বিরাজমান পারস্পারিক সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ উন্মুক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে ফেসবুক ও বাংলাদেশ সরকার বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একযোগে কাজ করতে পারবে।
 
সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে ফেসবুক অত্যন্ত কঠোর এবং এ সংক্রান্ত কনটেন্টসমূহ নজরে আসা মাত্র ফেসবুক কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
 
তারানা হালিম জানান, বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তাদের স্পেশাল পয়েন্ট অব কনট্যাক্ট (এসপিওসি) মডেলে প্রশিক্ষণ দেবে ফেসবুক।
 
এছাড়া নিরাপদে ফেসবুক ও ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তরুণদের জন্য ‘নিরাপদ ইন্টারনেট’ বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা হলে ফেসবুক প্রতিনিধি পাঠাবে।
 
বাংলাদেশে ফেসবুকের অ্যাডমিন প্যানেল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তাদের অ্যাডমিনসমূহ কেবল দৈনন্দিন কার্যক্রম ও প্রচারণার কাজ করে থাকে। অ্যাডমিন প্রতিষ্ঠা না করেও তারা নারীর প্রতি হিংসা, অশ্লীল ছবি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ইত্যাদি বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।  
 
‘ফেসবুক জানিয়েছে, আপনারা নিশ্চিত হোন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিডব্যাক জানাবো। ’
 
এক্ষেত্রে কোনো অর্থ বিনিয়োগ করতে হচ্ছে না বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
মাইক্রোসফট সমঝোতা স্মারকে আগ্রহী
তারানা হালিম জানান, সাইবার আক্রমণের পূর্বাভাস মূল্যায়ন ও এ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময়ে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মাইক্রোসফট।
 
প্রতিষ্ঠানের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তারানা হালিম। তারা বাংলাদেশকে সাইবার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি নিরূপণে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়াও ইন্টারনেটে শিশুদের সুরক্ষার বিষয়েও সহযোগিতায় রাজি হয়েছেন।
 
মাইক্রোসফটের বিভিন্ন প্রযুক্তি স্থাপনা ও সেগুলোর কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তারানা হালিম।
 
আপত্তিকর বিষয় সরাবে গুগল
তারানা হালিম জানান, গুগল ডটকম ডটবিডিতে সার্চিংয়ে আপত্তিকর বিষয় থাকলে তা সনাক্ত করে অপসারণ করবে গুগল। জীবনের নিরাপত্তার হুমকি সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট (অপহরণ, জিম্মি, সন্ত্রাসী আক্রমণ ইত্যাদি) ও তথ্যের ক্ষেত্রে গুগল জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
 
ইউটিউবের সেক্সুয়াল ও সহিংসসহ ক্ষতিকারক কনটেন্ট এবং শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত কনটেন্ট সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকার আপত্তি জানালে গুগল সেগুলোর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
 
প্রতিমন্ত্রী সিঙ্গাপুরের সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিএসএ) পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রী সিএসএ কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানালে তারা ইতিবাচক সম্মতি জানান।
 
সফরকালে তারানা হালিম সিঙ্গাপুরের যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী ড. ইয়াকুব ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় ড. ইয়াকুব সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করার বিষয়ে আশ্বাস দেন।

আর মালয়েশিয়া সফরকালে তারানা হালিম দেশটির যোগাযোগ ও মাল্টিমিডিয়া মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।
 
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসি’র ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস ডিভিশনের ডিরেক্টর জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী, বিএসসিসিএল’র এমডি মনোয়ার হোসেনসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬/আপডেট ১৭৪০ ঘণ্টা
এমআইএচ/এমএ/বিএস

** রোববার ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনার কথা জানাবেন তারানা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।