ঢাকা: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকে ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনায় অসন্তোষ ছড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষের জেরার মুখে এক কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন।
এই অবস্থায় রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে কর্মীরা প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এসময় তাদের ঘিরে রাখে পুলিশ।
টানা অবস্থানের মধ্যে বিকেলে গুলশানে প্রধান কার্যালয়ের সামনে বাংলালিংকের একাধিক কর্মী বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ধরনের নিয়মের তোয়াক্কা না করে এক কর্মকর্তাকে ছাঁটাই করা হয়েছে। এই নিয়ম অন্যদের উপরেও প্রয়োগ করা হতে পারে।
চাকুরি নিয়ে এ অবস্থায় আশঙ্কায় ভুগছি- বলেন বাংলালিংকের একাধিক কর্মী।
তারা জানান, কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ ছাড়াই গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের কন্ট্রাকশন বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম ভুঁইয়াকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর জের ধরে কর্মীরা ওই দিন বাংলালিংকের প্রধান টেকনিক্যাল অফিসার (সিটিও) পেরিয়েন এলহেমিকে সন্ধ্যা থেকে প্রায় রাতভর প্রধান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে অবরুদ্ধদশা থেকে মুক্তি পান পেরিয়েন।
বাংলালিংক কর্মীরা আরও বলেন, মানসিক হেনস্তা করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ সেলে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, এটা রিমান্ডের থেকেও ভয়ংকর। টেকনিক্যাল বিভাগের কর্মকর্তা মোশতাক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তিনি হাসপাতালে ভর্তি, এখন কাউকে চিনতে পারছেন না।
বাংলালিংকের কয়েকজন কর্মকর্তা মোশতাক নামের ওই কর্মকর্তাকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মোশতাক বাংলালিংকের প্রস্তাবিত এমপ্লয়েজ ইউনিয়নের সাংগাঠনিক সম্পাদক।
রোববার বিকেলে বাংলালিংকের প্রধান বাণিজ্য কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বরখাস্ত হওয়া শরিফুল ইসলামকে ফেরত নেয়ার সুযোগ নেই। তবে তার জন্য ‘ভোলান্টিয়ারি স্কিম’ বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের বেতন নিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে।
কর্মীদের ‘ভোলান্টিয়ারি স্কিম’ ঘেষণা করা হলেও এখন আন্দোলনের জেরে অনেককে ছাঁটাই করা হতে পারে- বলে আশঙ্কা তাদের।
বিকলে সাড়ে ৫টার পর কর্মীরা প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে যান। এরপর পুলিশও প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে সরে এক পাশে অবস্থান নেয়।
শনিবার রাত ১১টার পর মেইল দিয়ে অফিস সময় এক ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয় বলে জানান কর্মীরা। এ অবস্থায় সোমবার কী হবে- তা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে কর্মীদের মধ্যে।
এর আগে, বিকেলে প্রস্তাবিত বাংলালিংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি উজ্জল পাল বাংলানিউজকে জানান, কর্মীকে জেরার প্রতিবাদে এবং নিরাপত্তাহীনতায় কর্মীরা গুলশানে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
তার বক্তব্য অনুযায়ী, কাস্টমার কেয়ার সেন্টার, কল সেন্টার ও রোস্টার ডিউটি ছাড়া অন্য সব বিভাগে ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কর্মীদের মোবাইলে এসএমএস করে ‘আনঅ্যাভেইলেভল সারকামস্টেন্সে’র কারণ দেখিয়ে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানান উজ্জল পাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬/আপডেট ১৯০৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এইচএ