অল্পতে বাজার গরম করে তোলা চাকচিক্যে ভরা অপ্পো নিয়ে এরইমধ্যে নানা গপ্পো শোনা যাচ্ছে! যার অন্যতম হচ্ছে কানে চেপে অপ্পোতে কথা বললে আপনার কান গরম হয়ে যাবে। কারণ অল্পতেই অপ্পো গরম হয়ে যায়।
চিন দেশের ইলেক্ট্রনিক্সে বদনাম বিশ্বজোড়া। ওরা সস্তায় বানায়, দামে বেচে, কম দামেও বেচে। আর বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ক্রেজ দেখে এই বড় বাজারটিকে প্রতারণার বড় জায়গা বলেই ধরে নিয়েছে অপ্পো। আর বাঙালি চাকচিক্যে ভোলে সে বিষয়ে আগেভাগেই ওয়াকিবহাল হয়ে এরই মধ্যে বর্ণিল বিজ্ঞাপনে অপ্পো ক্রেতা প্রতারণা শুরু করেছে। এতে দেশের যেসব কোম্পানি নিজেদের মোবাইল ফোন সেট নিয়ে আসছে তারা পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। দেশের বড় ক্ষতি করে, মুক্তবাজার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে অপ্পো বাজার দখলের পায়তারা করছে। অথচ এর সার্ভিস নিয়ে দুর্নাম রয়েছে সর্বত্র।
একজন গ্রাহকের অভিজ্ঞতা শুনুন। সামাজিক মাধ্যমে তার ইংরেজি পোস্টের বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়- ‘আমি মোটে তিন দিন আগে একটা অপ্পো কিনলাম ওদের বিজ্ঞাপনে ভুলে। এখন দেখি স্ক্রিন আর ছুঁয়েতো দূরের কথা ঠেলেও নড়ানো যায় না। ব্যাটারি খুলে দেখলাম ভালো আছে। কিন্তু সেট গরম হয়ে সিদ্ধডিমের তাপ দিচ্ছে। কানে ধরলে কান গরম। মনে হচ্ছিলো ফোষ্কা পড়ে যাবে। এখন যত দ্রুত পারি এই অপ্পো বাদ দিয়ে অন্য ব্র্যান্ডে যাচ্ছি।
আরেকজন বলছেন: আমি এবার ক্লান্ত! অপ্পোর মূল সমস্যা এর সফটওয়্যার। এ পর্যন্ত তিন দফা রিসেট দিয়েছি। আর আমার মিরর থ্রিকে এবার চতূর্থ দফায় রিসেট দিতে হবে।
অপ্পো কেবল বাইরেই দেখতে সুন্দর। ভেতরটা ফাঁকাই বলা চলে, বলেন ওই ব্যবহারকারী। বার বার ফরম্যাট মারতে মারতে এখন ক্লান্ত! ওদের সার্ভিস সেন্টারে ফ্রি রিসেট করার সুযোগ থাকলেও তাতে কি ই যায় আসে! সময় নষ্ট আর মেজাজ খারাপ।
বিরক্ত ওই ব্যবহারকারী বললেন, ‘অপ্পোকে বলবো, তোমাদের সফটওয়্যার ঠিক করো। এরপর বাজারে ছাড়ো। নইলে কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারবে না। গ্রাহকরাই তোমাদের ছুঁড়ে ফেলবে।
শিগগিরিই নিজেও ব্র্যান্ড পাল্টানোর ঘোষণা দেন এই ব্যবহারকারী।
আরেকজন গ্রাহক বললেন, আগে শুনতাম বছর খানেক গেলে অপ্পোতে নানা ধরনের ঝামেলা হয়। এখন নিজেরটা কিনেই দেখি দুই দিনেই কত সমস্যা- এক. নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যায়, আর আমি চেষ্টা করেও আর চালাতে পারি না। অবশেষে একবার ব্যাটারি খোলো, এবার লাগাও এই পদ্ধতিতে কাজ হলো!
ব্যাটারি চার্জ মোটে টেকেই না। এমনকি ইন্টারনেট কানেকটেড না থাকলেও অল্পতেই ব্যাটারি শেষ হয়ে যায় অপ্পোর।
এছাড়াও হঠাৎ হঠাৎ স্ক্রিনে কিছুই দেখা যাবে না। স্রেফ একটা লেখা উঠবে: ক্যান্ট ডিসপ্লে।
আরেকজন ব্যবহারকারী বললেন, কোথাও ওয়াইফাই জোনে ঢুকলে ওয়াইফাই অন করার সঙ্গে সঙ্গে অপ্পো সেটটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন কি আর করা নতুন করে চালু করলে তবেই ওয়াইফাই সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
আরেকজন অবশ্য অপ্পোর প্রতি একটু বেশিই দুর্বল। বললেন, অপ্পো কিন্তু খুব ভালো। মোটে দুটিই সমস্যা- এক ব্যাটারি দুর্বল আর দুই সিস্টেম স্টোরেজটা যুতসই নয়।
আরেকজনের প্রশ্ন: আচ্ছা বলুনতো যখনই অপ্পো ফোনে কোনও অ্যাপ ইনস্টল করতে যাই তখনই একটা নোটিশ আসে তোমার স্টোরেজে জায়গা নেই, এটা কেন? আমার মোটেই কয়টা অ্যাপস ছিলো। এরপর দুই তিনটা ডিলিট করে দিয়ে নতুনটি যখন ইনস্টল করতে চাইলাম, অপ্পো জানালো আমার সেটে স্টোরেজ নাই। অদ্ভুত!
আজকাল জিপিএস’র তো খুব চল। অনেকেই পছন্দের রেস্টুরেন্টে খেতে যেতে, জরুরি কোথাও যেতে একটু পথটা দেখে নিতে চান। কিন্তু অপ্পোর জিপিএস পদ্ধতি আপনাকে সেক্ষেত্রে ভোগাবেই।
আরেক গ্রাহকের মন্তব্য শুনুন: ‘ক্যামেরা ছাড়া অপ্পো ফোনের বাকি সবকিছু ‘বুলশিট’ ছাড়া কিছুই না!
অন্য গ্রাহক জানালেন তার আরেক অভিজ্ঞতা। বারবারই তার অপ্পো ফোন থেকে কনট্যাক্ট লিস্ট হারিয়ে যায়। খুঁজে পেতে বের করেন আবার হারায়। এটাও বুঝি সেই সফটওয়ার সংক্রান্ত জটিলতা।
৩০০০ এমএএইচ ব্যাটারিতে মোটে তিন ঘণ্টার ব্যাকআপ, বিষ্ময়মাখা প্রশ্ন আরেকজনের। এই ব্যবহারকারী তার অভিজ্ঞতা আরেকটু বিস্তারিত জানিয়েছেন। বললেন ২০১৫’র আগস্টে অপ্পো কিনলাম। কিন্তু গত মাস থেকেই ব্যাটারি ব্যাকআপ দিচ্ছে না। ১০০% চার্জ করার পর ফেলে রেখে দিলেও তিন ঘণ্টার মধ্যে ২৫% এ নেমে আসে।
অতএব অপ্পে সাবধান!
বাংলাদেশ সময় ১১১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
এমএমকে