ঢাকা: পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে মোট কর্মসংস্থানের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অংশগ্রহণ থাকবে ১৪ থেকে ১৫ ভাগ। আইটির বাজার নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না, কারণ আইটির বড় বাজার হলো বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৬’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্বিতীয়বারের মতো তিনদিনব্যাপী আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রযুক্তির মেলায় থাকছে প্রযুক্তিনির্ভর নানা পণ্যের প্রদর্শনী।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, তিনটি পরিবর্তন খুব দ্রুত হয়েছে। এগুলো হলো শিল্প, বিদ্যুৎ ও আইসিটি। এরপরই আসবে ডিজিটাল পরিবর্তন। এক সময়ে সকল কাজ হবে মেশিনের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, সব চেয়ে বড় তাক লাগানোর ক্ষমতা রয়েছে আইসিটি খাতের। এক সময়ে দেশের তরুণরা বিশ্বের নামি দামি প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবে। এমনিতেই আমাদের আশেপাশের দেশের চেয়ে সময়ের হিসাবে বাংলাদেশ এ খাতে অনেক এগিয়ে আছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে এখন ১৩ কোটি ৩৩ লাখ মোবাইল সিম কার্ড গ্রাহক রয়েছেন। প্রতি বছর ছয় লাখ ল্যাপটপ, ডেস্কটপ আমদানি হয়ে থাকে। এছাড়া ১০ কোটি মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারী আছেন। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে প্রযুক্তির দিক দিয়ে কত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আইসিটি খাতে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। রপ্তানি (আইসিটি পণ্য) হবে পাঁচ বিলিয়ন ডলার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমেদ তরুণ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিসিএসের সভাপতি মাহফুজুল আরিফ বলেন, মেলার মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তির পণ্যের ভোক্তা থেকে উদ্ভাবকসহ সবার মেল বন্ধনে রূপান্তর হবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডেল এর দক্ষিণ এশিয়ার জেনারেল ম্যানেজার হারজিৎ সিং রেখি, মাইক্রোসফট দক্ষিণ এশিয়ার নিউ মার্কেটের প্রেসিডেন্ট মিশেল সিমনস।
আয়োজকরা জানান, দেশের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাতকে এগিয়ে নিতে আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৬।
আয়োজকরা আরও জানান, এখানে প্রযুক্তি বিষয়ক সভা-সেমিনারের পাশাপাশি এই খাতে যেমন থাকছে বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে তুলে ধরার প্রচেষ্টা, তেমনি হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাতের সার্বিক উন্নয়নে রয়েছে নানা উদ্যোগ। স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে রয়েছে প্রযুক্তি পণ্য সেবায় ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্ভাবনকে আরও বিস্তৃত করার প্রচেষ্টা।
হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার খাতের সম্মিলিত প্রয়াসে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি ‘ইন্টারনেট অব থিংকস’ নিয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ও তরুণ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে মেলায় হার্ডওয়ার ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্পের নান্দনিক উপস্থাপনা তুলে ধরা হবে।
স্বাগত বক্তব্যে আইসিটি সচিব শ্যামসুন্দর সিকদার প্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সম্ভাবনার তথ্য তুলে ধরেন।
ডেল বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুর রহমান, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ কান্ট্রি ম্যানেজার সোনিয়া বশির কবির ও মেলার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম মিলন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার, বেসিসের সভাপতি শামীম আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৬
একে/আরআই