<<আগের অংশ
তবে প্রশিক্ষণে নিজেদের সক্ষমতাও তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশেরই কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান এখন আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
আরও কি করছেন? সে প্রশ্ন করতে হলো না। প্রসঙ্গান্তরে পলকই জানালেন, সরকার নিজেও তার সক্ষমতা ও আইটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারে বিভিন্ন কাজ করছে। তিনি বলেন, এখন আমরা বিশ্ব পর্যায়ের প্রতিটি আইটি ফেয়ারে যাচ্ছি। জাপান আইটি উইকে এই প্রথম যোগ দিয়েছি অামরা, যেখানে ভিয়েতনাম ও ভারত ১৫ বছর ধরে যাচ্ছে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে প্রমোট করছি সর্বত্র।
ভেঞ্চার কোম্পানিগুলো আগ্রহী হয়েছে। এরা বিনিয়োগ করতে চায়। বাংলাদেশে আমরা গাইডলাইন তৈরি করেছি তাদের জন্য, যা আগে ছিল না। ভারত যা তিনবছরে করেছে, আমরা করেছি ছয় মাসে, বলেন পলক।
এই যে এত এত গ্রাজুয়েট প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, আর প্রশিক্ষক তারা কোথায় কাজ করবে? বাংলাদেশে তাদের কর্মক্ষেত্র তৈরির সুযোগ কতখানি? সে প্রশ্নে জুনাইদ আহমেদ পলক জানালেন হাইটেক পার্কের কথা। গাজিপুরের কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জায়গায় তৈরি এ হাইটেক পার্ক আইটি প্রফেশনালসদের গন্তব্য হবে।
আমাদের আরও দরকার আইটি ইকোসিস্টেম। সে লক্ষেও আমরা এগিয়েছি।
আইটি খাতে বিনিয়োগকারীদের সুবিধায় স্পেশাল প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ১২টি বিশেষ ইনটেনসিভ রয়েছে তাদের জন্য। যার অন্যতম হচ্ছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তারা কর মওকুফ পাচ্ছে। এছাড়াও এখানে যাবতীয় সুবিধায় তারা কাজ করবে। এতে বিদেশিরাও চিন্তা করছে, এখানে বিনিয়োগ করলে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তারা করমুক্ত ব্যবসা করতে পারবে।
এছাড়াও কনসাল্টিং ফার্ম ও থিংক ট্যাঙ্কগুলো এখন গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারাবিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বর্নণায় এখন বাংলাদেশ নানাভাবে স্বীকৃত হচ্ছে। টপ ৫০ আইটি ডেস্টিনেশনে বাংলাদেশ আগে ছিলো ২৬ নম্বরে, এখন আর চারধাপ এগিয়ে ২২-এ। আউটসোর্সিংয়েও অামরা এগিয়ে।
বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী, কিন্তু কম টাকায় তাদের পাওয়া যায়। এটি আমাদের সবচে বড় ফিন্যান্সিয়াল অ্যাট্রাকটিভনেস, বলেন পলক।
প্রশ্ন ছিলো, বাংলাদেশকি তাহলে কম টাকায় খাটার জন্যই? তার উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমে এভাবেই তাদের আকৃষ্ট করতে হবে। আর পরে যখন বাংলাদেশের এই মেধাবী তরুণ প্রজন্ম তাদের দক্ষতার প্রমাণ রাখতে পারবে তখন তারাও বিশ্বমানের উপার্জন করবে। যার প্রমাণ এখনি আমরা দেখতে পাই।
এবার বাংলাদেশের উদারহরণ টানলেন তিনি। জানালেন ‘হিরোজ অব ৭১’ নামে একটি গেমস তৈরির খবর। বললেন, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবীরা এই গেমস বানিয়েছে। যা এরই মধ্যে ৬ লাখ ডাউনলোড হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর তৈরি এই গেমস মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিটি বাঙালির জন্য আগ্রহের হবে। আর কেবল বাংলাদেশ কেন বিশ্বব্যাপীও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই গেমস।
এমন মেধাবীদের রাষ্ট্র কতটা পৃষ্ঠপোষকতা করবে? অতীতের অভিজ্ঞতায় অনেক মেধাবীই তাদের অভিনব আবিষ্কার নিয়ে এলেও সরকারের যথেষ্ট নজর পায়নি। বাংলানিউজের এমন মন্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, অতীতের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক নয়। এখন দেশের প্রতিটি মেধাবীর মেধার যথার্থ চর্চা নিশ্চিত করতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
‘একটি অদম্য বাঙালি জাতি আইসিটি খাতেও বিশ্ব পর্যায়ে একদিন তার অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিতে পারবে। সেদিনই হবে আমাদের এই ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল অর্জন,’ বলেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
বাংলাদেশ সময় ১৯৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৬
এমএমকে