বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এশিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বড় সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিকটা) এর কার্যনির্বাহী কমিটির সভা।
শুক্রবার (০১ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে বেসিস কার্যালয়ে দুই দিনব্যাপী এই সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অ্যাপিকটার কার্যনির্বাহী কমিটির ৫১তম এই সভায় বাংলাদেশসহ সংগঠনটির ১২টি দেশের “অস্ট্রেলিয়া, চীন, চাইনিজ তাইপে, জাপান, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, হংকং ও ভিয়েতনাম” শীর্ষস্থানীয় ১৮ জন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ অংশ নিয়েছেন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বেসিস আমাদের সক্রিয় অংশীদার। গত বছর এই সময়ে বেসিস অ্যাপিকটার সদস্যপদ লাভ করে। মাত্র এক বছরেই বাংলাদেশ অ্যাপিকটার নির্বাহী কমিটির সভার আয়োজক হতে পেরেছে যা নি:সন্দেহে আনন্দের।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প নিয়ে কাজ করছে। এই সময়ের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানী আয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যার লক্ষ্য শুধু ইউরোপ আমেরিকা নয়, বরং এশিয়ার দেশসমূহ বিশেষ করে অ্যাপিকটার সদস্য দেশগুলো থেকেও ৫০ ভাগ অর্জিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
সরকারের ইতোমধ্যে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অর্জনের কথা তুলে ধরেন তিনি।
অ্যাপিকটার চেয়ারম্যান ড. দিলীপা দি সিলভা বলেন, আমি মনেকরি সরকারের সাথে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের শীর্ষ সংগঠন বেসিস যেভাবে একাত্ম হয়ে কাজ করছে তা অ্যাপিকটা সদস্যদেশগুলোর প্রতিনিধিদের জন্য একটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। অ্যাপিকটার ৫১তম কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের জন্য বাংলাদেশের আতিথেয়তার ভূয়ষী প্রশংসা করেন তিনি।
বেসিস সভাপতি বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো অ্যাপিকটা ইভেন্ট আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত। আরো বলেন, বেসিস সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআই প্রকল্পের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। জাতীয় তথ্যপ্রযুক্তি নীতিমালা প্রণয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় ২০২৪ সাল পর্যন্ত আয়কর অব্যহতি প্রদান, বিশ্বব্যাংক ও এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক এবং সরকারের উদ্যোগে দক্ষ জনবল তৈরিতে বিপুল অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানী আয় নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাজার উন্নয়নে অন্তত ২ বিলিয়ন ডলার অর্থ বিনিয়োগের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
শামীম আহসান জানান, এটিকার্ণির গ্লোবাল সার্ভিস লোকেশান ইনডেক্সের র্যাংকিংয়ে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় আইটি আউটসোর্সিং স্থান পেয়েছে। এশিয়ার বৃহত্তম আইটি প্ল্যাটফর্ম অ্যাপিকটার যেকোনো উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার সার্বিক সহেযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছে বলেও জানান বেসিস সভাপতি।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী, বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
বেসিসের সহ-সভাপতি এম রাশিদুল হাসান, মহাসচিব উত্তম কুমার পাল, যুগ্ম-মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল এতে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাসেল টি আহমেদ।
উল্লেখ্য, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনের এই জোট মূলত সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে নিজ নিজ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরের কাঠামো গঠন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এছাড়া নিজস্ব তথ্যপ্রযুক্তিকে বিশ্ববাজারে তুলে ধরা, তথ্যপ্রযুক্তির সক্ষমতা উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি ইনোভেশনগুলোকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষে কাজ করে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৬
এসজেডএম