ঢাকা: সরকারি তথ্য নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
ফলে এখ থেকে মোবাইল ফোন থেকে কল করেও জাতীয় তথ্য বাতায়নের যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন নাগরিকরা।
মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সভা কক্ষে এটুআই ও বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর রবির মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক ও প্র্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার এবং রবি’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মতিউল ইসলাম নওশাদ নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ও সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তি অনুযায়ী, জাতীয় তথ্য বাতায়নের ভয়েস এক্সেস বাস্তবায়নের জন্য একটি কল সেন্টার স্থাপন করা হবে। এতে যে কোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকরা ভয়েস কল, এসএমএস, আইভিআর (ইন্টারঅ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স), সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ই-মেইল ব্যবহার করে জাতীয় তথ্য বাতায়নের সব সেবা তথ্য পাবেন।
এছাড়া নাগরিক কেন্দ্রিক ই-সেবা, মোবাইল অ্যাপস বাস্তবায়ন এবং এসব উদ্যোগ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারে রবি এটুআইকে সহায়তা দেবে।
এটুআই’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, জাতীয় তথ্য বাতায়নে ৪০০ সরকারি সেবা প্রাপ্তির বিস্তারিত বিবরণ ও এক হাজার ৪০০ এর বেশি সরকারি ফরম রয়েছে। এই ফরমের তথ্যও পাবেন গ্রাহকরা।
ভয়েস কলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান চার্জ কাটা হবে বলে জানিয়েছেন রবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মতিউল ইসলাম নওশাদ।
তিনি জানান, পাঁচ ডিজিটের একটি শর্ট কোডে ফোন করে তথ্য পাওয়া যাবে। শিগগির বিটিআরসি’র কাছ থেকে এ শর্টকোডটি পেয়ে যাবো। তখন তা জানানো হবে।
বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠী এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করছে জানিয়ে মতিউল ইসলাম নওশাদ বলেন, এই উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে বাকি ৬০ শতাংশ জনগণকে ডিজিটাল কানেকটিভিটির মধ্যে নিয়ে আসা।
কবির বিন আনোয়ার বলেন, আমাদের পলিসি হচ্ছে, আমরা শিকড় থেকে উপরে আসতে চাই। সেজন্য প্রথম উদ্যোগ হিসেবে ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
‘বাংলালিংক ও টেলিটকের মাধ্যমে আমরা কাজ করছি, রবির সঙ্গে এবার যাত্রা শুরু হলো। ’
এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে ২৫ থেকে ৩০ রকম সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় ৫০ থেকে ৬০ ধরনের অনলাইন সেবা পাচ্ছেন মানুষ।
এটুআই প্রকল্পের পরিচালক বলেন, ডিজিটাল সেবা সহজ করা ও মানুষের কাছে পৌঁছানোর কাজ সরকার একা করতে পারে না। এজন্য সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আমরা মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এমওইউ করছি। এর মাধ্যমে সর্বস্তরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় তথ্য বাতায়নে ২৫ হাজার ওয়েবসাইট যুক্ত রয়েছে, যার মাধ্যমে ৬১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, ৩৫১টি অধিদফতর ও অন্যান্য অফিস, ৮টি বিভাগ, ৬৪টি জেলা, ৪৮৯টি উপজেলা, ৪ হাজার ৫৫০টি ইউনিয়নের সব সরকারি অফিসসহ ৪৩ হাজারেরও বেশি সরকারি অফিসের কার্যক্রমের তথ্য বিস্তারিত পাওয়া যায়।
এটুআই এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে জাতীয় তথ্য বাতায়ন পরিচালিত হচ্ছে, যা শুরু হয়েছিলো সাড়ে ৪ বছর আগে। ২০১৪ সালের জুন মাসে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
২০১৫ সালের পোর্টালটি প্রথমবার জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যান্ড ইনফরমেশনে পুরস্কৃত হয়। দ্বিতীয়বারের মতো গত বছর এই পুরস্কার পায় জাতীয় তথ্য বাতায়ন।
জাতীয় তথ্য বাতায়নের পোর্টালটি প্রতিদিন ৩০ লাখ হিট হয়। প্রায় ২০ লাখ তথ্য আছে এবং প্রতিদনই এ সংখ্যা বাড়ছে। ইলেক্ট্রনিক সেবা দেড়শ’র বেশি আছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এমএম জিয়াউল আলম, রবি’র কোম্পানি সেক্রেটারি শাহেদুল আলম, ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশনস অ্যান্ড করপোরেট রেস্পনসিবিলিটি) ইকরাম কবিরসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৬
এমআইএইচ/এমএ/