মোবাইলভিত্তিক আন্তর্জাতিক রেমিটেন্স সরবরাহের নেটওয়ার্ক টেরাপে’কে প্রধান ‘ডিজিটাল ইনোভেটর’র স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা আইট রিসার্চ (Aite Research)। ‘ক্রস বর্ডার রেমিটেন্স: গ্লোবাল ট্রেন্ডস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই স্বীকৃতির কথা জানায় সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক রেমিটেন্স প্রবাহের অগ্রগতি এবং এর পেছনে ডিজিটালাইজেশনের ভূমিকাকে প্রাধন্য দিয়ে তৈরি প্রতিবেদনে বলা হয়, রেমিটেন্স শিল্প ক্রমশ ডিজিটাল হচ্ছে। কোম্পানিগুলো নিজেদের পরিধির বাইরে এসে ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। বিশ্বব্যাপী রেমিটেন্স প্রেরণের খরচ কমাতেই কোম্পানিগুলো ক্রমশ ডিজিটাল পদ্ধতিতে অগ্রসর হচ্ছে। দ্রুত বিকাশমান এই খাতে গ্রাহকরা নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনে মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন বলেও মনে করে আইট।
আইট বলছে, প্রচলিত রেমিটেন্স সেবা বহুলভাবে এজেন্ট নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু হলে প্রচলিত এই পদ্ধতি গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে সঙ্গে খরচও কমবে।
ডিজিটাল মানি ট্রান্সফারের সুফল তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মোট রেমিটেন্সের ৭ ভাগ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় আদান-প্রদান হয়। বিশ্বের মোট ৫৪ ভাগ দেশে ডিজিটাল মোবাইল ওয়ালেট পদ্ধতি চালু আছে। এর আওতায় ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত বিশাল অংশের এক জনগোষ্ঠী লেনদেনে সক্ষমতা অর্জন করেছেন।
আফ্রিকার ৯০ ভাগ দেশের মানুষ মোবাইল মানি সেবা গ্রহণ করে থাকে, এরপরই এশিয়ার অবস্থান। এখানকার ৭৮ ভাগ দেশের মানুষ এই পদ্ধতিতে সেবা গ্রহণ করেছে।
প্রথাগত রেমিটেন্স ব্যবসায় ২০০ মার্কিন ডলার ট্রান্সফার করতে ২৯ ডলার খরচ হয় যেখানে কেনিয়ার মোবেইল ফোনভিত্তিক মানি ট্রান্সফারের মাধ্যম এমপেসা’য় খরচ হচ্ছে মাত্র ১ থেকে ২ ডলারের মতো এমনও নজির দেখানে হয় এতে।
প্রতিবেদনে ক্রস-বর্ডার ডিজিটাল ট্রানজেকশনের ভবিষ্যত অপার সম্ভাবনার কথা এবং ডিজিটালাইজেশন বাড়াতে কাজ করবে এমন অনেক বিষয় উল্লেখ করা হয়।
আইটের গবেষণার বিষয়ে টেরাপের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমবার সুর বলেন, আমরা এই স্বীকৃতিকে টেরাপের ‘ওয়ান নেটওয়ার্ক’ মডেলের বাণিজ্যিক সক্ষমতা হিসেবে দেখছি। ব্লু-কলার অভিবাসী থেকে শুরু করে গৃহিণী পর্যন্ত সবার কাছে মোবাইল মানি ট্রান্সফার সেবা পৌছানো, তাদেরকে এর সঙ্গে যুক্ত করা এবং ব্যয় কমানোর ক্ষেত্রে টেরাপে যেসব ভ্যালু এনেছে তা আমাদের অংশীদাররা ভালোভাবেই গ্রহণ করে থাকে।
উল্লেখ্য, মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং রেমিটেন্স সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আন্ত:সংযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রেমিটেন্সের পথ তৈরি করাই টেরাপের প্রধান কাজ। একজন গ্রাহক যেখানে মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠান ঠিক একইভাবে টেরাপের মাধ্যমে মোবাইলে টাকা পাঠাতে পারেন।
বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া এবং উপসাগরীয় দেশসমূহে টেরাপ সেবা দিচ্ছে। শিগগিরই আফ্রিকায় সেবা কার্যক্রম শুরু করবে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৬
এসজেডএম