ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

দক্ষ জনসম্পদ গড়তে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প

সুকুমার সরকার, সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬
দক্ষ জনসম্পদ গড়তে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প

ঢাকা: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তুলতে সরকার বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। পাশাপাশি এখাতে শিক্ষিত তরুণদের আগ্রহী করে তোলা ও তাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে দৃষ্টি দিয়েছে।


 
বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলা। আর এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনার সরকার।
 
এ ভিশন পরিপূর্ণতা অর্জনের জন্য দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প শুরু করতে যাচ্ছে সরকার।

আগামী ২৩ এপ্রিল ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ ক্যারিয়ার ক্যাম্পের যাত্রা শুরু হবে।

দেশের শিক্ষিত তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী করে তোলা ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণে দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প থেকে এ আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প চালু হচ্ছে। দেশের ৬৪ জেলার নির্বাচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আগামী এক বছর ধরে চলবে এ ক্যাম্প।
 
বিসিসি’র একজন কর্মকর্তা জানান, শিক্ষার্থী তরুণদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য দিনব্যাপী ক্যারিয়ার ক্যাম্পের নানা ইভেন্টকে আনন্দদায়ক করে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
 
তিনি বাংলানিউজকে জানান, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা নিয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে আইকন হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্বদের মাধ্যমে তরুণদের উদ্বুদ্ধ ও প্রেরণা জাগানো বক্তৃতা এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আইসিটি বিষয়ক কুইজ ও প্রশ্নোত্তরসহ নানা ইভেন্ট নিয়ে প্রতিদিনের ক্যারিয়ার ক্যাম্প পরিচালিত হবে।

ক্যারিয়ার ক্যাম্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলানিউজকে বলেন, আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্পের মূল লক্ষ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী করে তোলা।
 
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সামনে যদি আইটি খাতের সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরা যায় এবং তাদের প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া যায় তাহলে তারা শিক্ষা জীবন থেকেই আইটিতে ক্যারিয়ার গড়ে তোলার কথা ভাববে।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রায় তথ্যপ্রযুক্তি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও ডিজিটাল অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার দিকে। এজন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তিতে প্রশিক্ষিত দক্ষ মানবসম্পদ। আর দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প চালুর জন্য।
 
পলক বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ আইসিটি রফতানির পরিমাণ ৫ বিলিয়ন (পাঁচশ কোটি) ডলারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং আইটি পেশাজীবীদের সংখ্যা ২ মিলিয়নে (বিশ লাখ) উন্নীত করার জন্য দেশে আইটি শিল্পের প্রসার ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
 
আইটি শিল্পের প্রসার ও কর্মসংস্থানের জন্য সরকার নানা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। দেশে ১২টি হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। যশোরের সফটওয়্যার পার্ক নির্মাণ সমাপ্তির পথে। কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্কের উন্নয়ন জোরেশোরে এগিয়ে চলছে। এটি সমাপ্ত হলে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
 
বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক এস এম আশরাফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আমার বিশ্বাস আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে আগ্রহী করে তুলবে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্থাপিত বিশেষায়িত ল্যাবগুলোতে প্রশিক্ষণ গ্রহণে তারা উদ্বুদ্ধ হবে। অনেকেই জানেন না যে আমাদের দেশে টাইটানিয়াম, স্মাকের মতো বিশেষায়িত ল্যাব রয়েছে। যেখানে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

এলআইসিটি প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প শুরু হলে এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্পের আওতায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির চলমান প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে এলআইসিটি প্রকল্প কর্তৃক নিয়োজিত যুক্তরাজ্যভিত্তিক আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং আগামী তিন বছরে আইটিতে ৩০ হাজার দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এলআইসিটি প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়াও এলআইসিটি প্রকল্প থেকে আরও ১০ হাজার তরুণ-তরুণীকে আউসোর্সিংয়ের প্রশিক্ষণ, ২ হাজার ৫শ’ সরকারি কর্মকর্তাকে ই-গভর্মেন্ট প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন আইটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ আরও প্রায় ২ হাজার ৫শ’ জনকে আইটির বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।