ঢাকা: অনিবন্ধিত সিম আগামী ১ মে থেকে তিন ঘণ্টা বন্ধ রেখে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রি-ভেরিফিকেশনের জন্য বার্তা পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
সিম রি-ভেরিফিকেশনের জন্য নির্ধারিত সময় আগামী ৩০ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত মোবাইল অপারেটরদের কাস্টমার কেয়ার সেন্টার এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের (এনআইডি) অফিস খোলা রাখা হবে।
একই সঙ্গে সিম পুনঃনিবন্ধনের সময় বাড়বে কিনা- তা জানা যাবে আগামী ৩০ এপ্রিল।
বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দফতরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে সিম নিবন্ধনে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া দেখছি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বুধবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭ কোটি ৭৯ লাখ সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে, আরও ১ কোটি ২১ লাখ গ্রাহক এসেছিলেন, ফিঙ্গার প্রিন্ট না মেলা বা ভুলভাবে নম্বর দেওয়ার কারণে ম্যাচ করেনি। ধরে নিচ্ছি তারা জেনুইন এবং তারা রি-ভেরিফিকেশনে এসেছিলেন।
‘প্রথম দিন থেকে বলে আসছি রি-ভরিফিকেশনের শেষ তারিখ ৩০ এপ্রিল এবং পহেলা মে থেকে সিমগুলো কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে; যেন তারা দ্রুত রি-ভেরিফিকেশন করে নেন। ১ মে থেকে অধিকাংশ অনিবন্ধিত সিম তিন ঘণ্টা বন্ধ রাখছি এই বার্তাটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে- তাদের দ্রুত গিয়ে রি-ভেরিফিকেশন করে নেওয়া প্রয়োজন’।
‘ইঙ্গিতটা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়, মাথায় রাখতে হবে যে সময়টা অনেক কম’।
গ্রাহকদের সুবিধার জন্য অপারেটরদের সব কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ও রিটেইলার পয়েন্ট বায়োমেট্রিক ডিভাইসসহ সিম-রিম নিবন্ধন কার্যক্রম ৩০ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে বলে জানান তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এনআইডি’র আগারগাঁও প্রধান কার্যালয় এবং ৫১৪টি আঞ্চলিক কেন্দ্র রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। যাদের এনআইডি’র কোনো সমস্যা হবে সেখানে গেলে সমাধান দেওয়া হবে। সব মোবাইল অপারেটরদের বলেছি যেন এনআইডিতে ডিভাইস নিয়ে প্রস্তুত থাকে, আবার গ্রাহকদের মিসম্যাচ না হলে ফেরত আসতে না হয়।
পুনঃনিবন্ধনের সময় বাড়োনো হবে কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, আমরা আজকে (বৃহস্পতিবার) মিটিং করবো। এনআইডি, বিটিআরসি এবং অপারেটররা থাকবেন। মিটিংয়ের পর প্রকৃত চিত্রটি কী সেটি বিবেচনা করবো এবং ৩০ এপ্রিল আপনাদের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি জানাবো।
‘বার বার বলেছি অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সুযোগ থাকবে না। অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সুযোগ রাখলে অনেক ফাঁক-ফোকর সৃষ্টি হতো এবং অনেকে আসবেন, অনেকে করবেন না। যে কারণে তাগাদা রাখতে চাই। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কতখানি এগোতে পারছি ফলাফলটা দেখতে চাই’।
প্রতিমন্ত্রী জানান, কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রেখে একটি সিমে কোনো সাড়া পাওয়া না গেলে তখন বুঝে নেবো মালিকানা স্বীকার করতে চাইছেন না। সেই সিমগুলো তখন বাদ হয়ে যাবে।
১ কোটি ২১ লাখ সিম যাদের আঙ্গুলের ছাপ ম্যাচ করেনি তারা সচেতন নাগরিক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের বিষয়টি আলাদা করে ভাবার সুযোগ আছে এবং ভাবতে চাই।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সর্বশেষ মার্চ মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার।
সিম পুনঃনিবন্ধনে জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোটামোটি ৮ কোটি হয়ে যাওয়াটা ছোট কাজ মনে করছি না, এটি একটা বিশাল কাজ। যেহেতু লম্বা সময় ধরে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে আশা করি, গ্রাহক ভোগান্তি কম হবে এবং ৩০ এপিলের মধ্যে করে ফেলতে পারবো।
ডাক ও টেলিযোগাগে বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী বলেন, ১ কোটি ২১ লাখ সিমের গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ পুরোপুরি না মেলায় আংশিক সম্পূর্ণ হয়েছে। এসব সিম জেনুইন, বিশেষ করে নারীদের সমস্যা যারা বাটাবাটির কাজ করেন এবং বয়স্ক লোকদের আঙ্গুলের রেখার সমস্যা। তবে এই ১ কোটি ২১ লাখ আমাদের হাতে আছে। তারা নিবন্ধনের জন্য এসেছেন এবং ঘাপলাগুলো মেটানোর চেষ্টা করছি।
গত সপ্তাহে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ সিম পুনঃনিবন্ধিত হচ্ছে বলে জানান টেলিযোগাযোগ সচিব।
মোবাইল সিমের পরিচিতি নির্ধারণ এবং অপরাধ কমাতে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধরে উদ্যোন নেয় সরকার।
***৩০ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত সিম নিবন্ধন
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৬
এমআইএইচ/আইএ