ঢাকা: ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১৭টি সফল আয়োজনের পর ল্যাপটপ মেলা এবার বিভাগীয় শহরগুলোতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন আয়োজকরা।
দেশের সর্বপ্রথম ল্যাপটপ মেলা বসে ২০০৮ সালে।
শুক্রবার (১৩ মে) রাজধানী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) কার্নিভাল ও হারমোনি হলে সর্বশেষ এবং ১৭তম ল্যাপটপ মেলার আয়োজন করে এক্সপো মেকার। মেলা সমাপ্ত হয় রোববার (১৫ মে) রাত আটটায়।
গত তিনদিনে সারাদেশ থেকেই প্রযুক্তিপ্রেমীরা বিআইসিসিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। মূলত, এবারের মেলায় দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতাই বেশি ছিলো বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে দুর-দুরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা বলছেন, একটি ল্যাপটপ কেনার জন্য ঢাকায় আসাটা সত্যিই একটু বেমানান। তাই ঢাকার বাইরেও এমন আয়োজন করা উচিত।
সিলেট থেকে আগত শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান চয়ন বাংলানিউজকে বলেন, মেলা থেকে ল্যাপটপ নিলে দেখেশুনে নেওয়া যায়। এছাড়া বিক্রেতাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকায় অপেক্ষাকৃত ভাল পণ্য পাওয়ায় যায়। তবে একটি ল্যাপটপ কেনার জন্য সেই সিলেট থেকে ঢাকায় যাওয়া-আসা নিয়ে দু’দিন চলে যায়। প্রযুক্তির যুগে এমনটা হওয়া উচিত নয়। বিভাগীয় শহরগুলোতেও এ ধরণের মেলা বসানো হলে ভাল হতো।
চট্টগ্রাম থেকে আগত ব্যবসায়ী জুয়েল শিকদার জানান, ২০১০ সালের দিকে চট্টগ্রামে এ ধরণের মেলা হয়েছিল। তখন কিনতে পারিনি। তবে লোকাল মার্কেট থেকে একটি ল্যাপটপ কেনার পর তা বেশিদিন টেকেনি। কিন্তু মেলা থেকে তখন যারা কিনেছিল, তাদেরগুলো এখনো ভাল রয়েছে। তাই ঢাকাতে মেলায় এসেছি।
এদিকে চাঁদপুর থেকে ল্যাপটপ মেলায় এসেছেন শিক্ষক আসাদুজ্জামান নাহিদ। তিনি বলেন, বড়বড় জেলা শহর কিংবা বিভাগীয় শহগুলোতে এমন মেলা হলে প্রযুক্তি পাগল মানুষদের জন্য বড় সুবিধা হতো।
এ বিষয়ে মেলার আহ্বায়ক ও এক্সপো মেকারের হেড অব অপারেশনস নাহিদ হাসনাইন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, এবারসহ মোট ১৭টি সফল আয়োজনের পর বিভাগীয় শহরগুলোতেও ল্যাপটপ মেলা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এরপর তা ধীরে ধীরে জেলা শহরগুলোতেও নিয়ে যাওয়া হবে।
তবে ঢাকার বাইরে এমন উদ্যোগ নেওয়ার আগে মার্কেট রিসার্চ করতে হবে। অনেকটা সার্ভের মত করে ক্রেতাদের আগ্রহ জেনে নেওয়া আরকি। গবেষণায় ভাল ফলাফল এলে শিগগিরই ল্যাপটপ মেলা ঢাকার বাইরে যাবে। এক্ষেত্রে রিসার্চের কাজ আমরা সাম্প্রতিক সময়েই করবো।
২০০৯ ও ২০১০ সালে চট্টগ্রামেও ল্যাপটপ মেলার আয়োজন করা হয়েছিল বলে জানান নাহিদ। তিনি বলেন, সে মেলা থেকে তেমন ফিডব্যাক না আসায় আর করা হয়নি। তবে এরমাঝে অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। তাই আবার সে উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
১৭তম আয়োজনে তিন দিনই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভালো সাড়া ছিল বলে জানান এক্সপো মেকারের কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম সার্থক। তিনি বলেন, মোট কত টাকা বিক্রি হয়েছে এটা হিসেব করতে কয়েকদিন লেগে যাবে। তবে অন্য সময় তিন দিনের মেলায় ৬ থেকে ৭ হাজার ল্যাপটপ বিক্রি হয়। এবার তার চেয়ে বেশিই হয়েছে।
বিআইসিসিতে আয়োজিত এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে মোট ৫৪টি স্টল সাজানো হয়েছিল। এগুলোরই একটি ডিএক্স জেনারেশন। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার লিটন বিশ্বাস বলেন, এবার ভাল বিক্রি হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে মোবাইল ফোন মেলা হলেও ল্যাপটপ মেলা হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
ইইউডি/বিএস