ল্যাপটপ মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: একবার নতুন ল্যাপটপ, আরেকবার সঙ্গে পাওয়া উপহারের ব্যাগের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে হেঁটে যাচ্ছিলেন মো. জহিরুল হক। ল্যাপটপের সঙ্গে আটটি উপহার।
রোববার (১৫ মে) বিকেলে দৃশ্যটি ধরা পরলো রাজধানীর আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গ্রীষ্মকালীন ল্যাপটপ ফেয়ার প্রাঙ্গণে।
জহিরুল জানালেন, বাজারে কিনতে গেলে তো শুধু ল্যাপটপই পাওয়া যেতো। কিন্তু মেলায় মূল্যছাড়ের পাশাপাশি অনেকগুলো উপহার পেয়েছেন। তাই অনেক ভালো লাগছে।
বাসায় গিয়ে সবার সঙ্গে বিষয়টি ভাগাভাগি না করা পর্যন্ত যেন স্থির হতে পারছিলেন না শখের ল্যাপটপ কিনতে পারা ২৭ বছর বয়সী এ তরুণ।
আর মেলার মধ্য স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে প্রযুক্তির বিভিন্ন পণ্যের বিক্রেতারা তো মহাব্যস্ত সময় কাটালেন। পণ্য বিক্রির পাশাপাশি তথ্য তুলে ধরতে গিয়ে বেশ হিমশিমই খেতে হয়েছে। দর্শনার্থীরা যখন ক্রেতা রুপে পরিণত হন তখন যে তাদের সামলাতে কতটা ব্যস্ত থাকতে হয় তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল।
তবে ভালো বিক্রি হওয়ায় খুশি মনে দক্ষতার সঙ্গে সব কিছু সামলেছেন বিক্রেতারা। তিন দিনব্যাপী এ ল্যাপটপ মেলার শেষদিনও জমে ওঠেছিল ভালো বিকিকিনি ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে। সবমিলিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই খুশি মনেই বাড়ি ফিরছেন সে দৃশ্যেও ফুটে ওঠলো মেলায়।
শখ আর প্রয়োজনের নতুন ল্যাপটপের সঙ্গে নানা উপহার ও মূল্যছাড় পাওয়ায় বেজায় খুশি ক্রেতারা। সামর্থের মধ্য মনের মতো ল্যাপটপ ও প্রযুক্তির নানা এক্সেসরিজ কিনে বাড়ি ফিরেছেন তারা।
মিরপুর থেকে রেজাউল করিম পরিবার নিয়ে এসেছেন ল্যাপটপ মেলায়। সবার পছন্দ মতো ডেল’র একটি ল্যাপটপও কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি জানান, ছাড় ও উপহার পাওয়ার কারণেই মূলত তিনি ল্যাপটপটি কিনেছেন। এমন আয়োজনেরও প্রশংসা করলেন তিনি।
এদিকে পণ্য বিক্রেতাদেরও সন্তুষ্টির ঢেঁকুর তুলতে দেখা গেলো। গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড এর লেনোভো’র প্রডাক্ট ম্যানেজার খন্দকার খালেদ বিন আহমেদ জানান, বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। ক্রেতাদের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়াও পাওয়া গেছে। প্রত্যাশা অনেকটাই পূরুণ হয়েছে।
তবে একাধিক বিক্রেতা জানান, প্রথম দিকে তারা মনে করেছিলেন ভালো বিক্রি হবে না। কিন্তু তিনদিনই ক্রেতাদের উপস্থিতি ভালো ছিল। নতুন ও পুরান সব ধরনের পণ্যের প্রতিই আগ্রহ ছিল ক্রেতাদের। ফলে বিক্রি ভালোই হয়েছে।
আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভালো বিক্রি হওয়ায় মেলায় দোকানদাররা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ক্রেতারাও খুশি তাদের এমন উপহার দেওয়ায়।
গত শুক্রবার তিন দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয়। প্রতিদিনই প্রযুক্তিপ্রেমীদের উপস্থিতি ছিলো বেশ ভালো। আয়োজনে ছিল এক্সপো মেকার। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। প্রবেশ মূল্য ছিল ৩০ টাকা।
কেউ বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে, কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেউবা একাই চলে এসেছেন মেলায়। শিশু থেকে সব বয়সীদের পদচারণায় তিনদিনই প্রাণবন্ত থাকে ১৭তম বারের মতো অনুষ্ঠিত ল্যাপটপ মেলা।
এবারের মেলার সহ-পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল এসার, আসুস, ডেল ও এইচপি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এ মেলা।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৬
একে/জেডএস