ঢাকা: বাংলাদেশে ডিজিটাল টেকনোলজি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও এর সুফল জনগণ সেভাবে পাচ্ছে না বলা হয়েছে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে।
সোমবার (মে ১৬) রাজধানীর গুলশানে ‘হোটেল আমারই’তে ‘ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট: ডিজিটাল ডিভিটেন্টস ২০১৬’ শীর্ষক রিপোর্টে এ তথ্য প্রকাশ পায়।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট কো-ডিরেক্টর দীপক মিশারা। রিপোর্টে বলা হয়, দেশের ডিজিটাল প্রযুক্তি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু এর সুফল সেভাবে জনগণ পাচ্ছে না। ডিজিটাল প্রযুক্তিই পারে অন্তর্ভুক্তি, গতিশীলতা এবং নতুনত্ব আনতে।
বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং অর্থনীতি গরিবের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক উদ্যোগ। বাংলাদেশে ফোন কল খুবই সস্তা। কিন্তু ইন্টারনেট খরচ অত্যন্ত বেশি। ১০ কোটিরও বেশি মানুষ ইন্টারনেটে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে না। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তি ছাড়া কর্মসংসন্থান সম্ভব নয়। বিশেষ করে আইটি এবং ব্যবসা প্রক্রিয়া, আউটসোর্সিং সেবা, অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং, মোবাইল ব্যাংকিং, ই-কমার্স ও অন্যান্য ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি আয়ের বাজার পোশাক শিল্প ধরে রাখলেও আগামী দিনে আইসিটি রপ্তানি বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বাজারে বড় একটি খাত তৈরি করবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করেছে সরকার। এই লক্ষে তৈরি করা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন এখন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। খুব শিগগিরই এটি মন্ত্রিসভায় উঠবে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
পলক বলেন, দেশে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে আইসিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশে সাত হাজার ইন্টারনেট ভিত্তিক কর্মজীবী রয়েছেন। পোশাক শিল্পের পরেই রপ্তানি আয়ের বাজারে আরেকটি বড় খাত তৈরি করবে আইসিটি। ২০২১ সালের মধ্যে এ খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন রপ্তানি আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। যা জিডিপিতে পাঁচ শতাংশ অবদান রাখবে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের দ্বিতীয় খাত হবে আইসিটি।
পলক আরও বলেন, সত্তর দশকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং নাইজেরিয়া জনসংখ্যার দিক থেকে বোনাস সময় পেয়েছিল। দু’দেশের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। কিন্তু নাইজেরিয়া অনেক পিছিয়ে রয়েছে। আমরা নাইজেরিয়া হতে চাই না। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অনেক দূর যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এসএম আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ খুব দ্রুত ডিজিটালের দিকে এগিয়েছে। এটা খুবই ভালো দিক। তবে সহজভাবে ও কম খরচে ইন্টারনেটের ব্যবহারের দিকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ডিজিটাল উন্নয়নের কৌশলকে আরও ব্যাপক পরিসরে বাড়ানো প্রয়োজন। তাহলে ব্যবহারকারীরা সঠিকভাবে ও কম খরচে ব্যবহার করতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৬
এমআইএস/এমজেএফ/