দেশীয় টেকনোলজি-বেজড কোম্পানি ‘ক্লাউডওয়েল লিমিটেড’ দেশব্যাপী তাদের রিটেইল পেমেন্ট সেবা ‘পেওয়েল’র নেটওয়ার্ক বিস্তারে ভারতের মুম্বাইভিত্তিক আভিশকার ফ্রন্টইয়ার ফান্ডের সাথে ২ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করেছে। আর এই চুক্তির মধ্যস্থতা করেছে বাংলাদেশের সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড।
ক্লাউডওয়েলের এটি দ্বিতীয় বিনিয়োগ চুক্তি, ২০১৪ সালে আইআইএম এশিয়া প্যাসিফিক সিঙ্গাপুর লিমিটেডের সাথে প্রতিষ্ঠানটির প্রথম চুক্তি হয়।
এই পার্টনারশিপের ব্যাপারে ক্লাউডওয়েলের সিইও আনিসুল ইসলাম বলেন, আভিশকার থেকে প্রাপ্ত এই বিনিয়োগ আমরা সারা দেশে পেওয়েলের সেবা বিস্তারে ব্যবহার করব। ফলশ্রুতিতে আমাদের বর্তমান সেবার পাশাপাশি এসএমই এবং এন্টারপ্রাইজ মার্চেন্টদের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস পেমেন্ট গ্রহনের সুবিধাও দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে পারবো। আগামি দুই বছরে সারা দেশে ৩০ হাজারের বেশী পেওয়েলের মার্চেন্ট/এজেন্ট স্থাপনের ইচ্ছাও রয়েছে ক্লাউডওয়েলের।
ফাইজুল হামিদ ক্লাউডওয়েল ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, সবার জন্য পেমেন্ট প্রক্রিয়া সহজ করার উদ্দেশেই পেওয়েল একটি ঐকিক বিতরণ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করছে যা খুচরা বিক্রি বাড়ানোরও একটি স্মার্ট উপায়।
এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ সম্পর্কে সঞ্চয়ন চক্রবর্তী, এএফএফ পার্টনার তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ক্লাউডওয়েলে বিনিয়োগ আমাদের জন্য নিশ্চিত রিটার্নের বিকল্প। কেননা ক্লাউডওয়েল একটি অগ্রসরমান ব্যবসা, এখানে রয়েছে দক্ষ উদ্যোক্তার দল। এছাড়া বর্তমানের ক্রমবর্ধমান মোবাইল আর্থিক সেবা এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে ভ্যালু অ্যাডিশনের সুযোগ করে দিচ্ছে তারা। বাংলাদেশে এটা আমাদের প্রথম বিনিয়োগ এবং সামনে বাংলাদেশের স্টার্টআপ এবং এসএমই ইকোসিস্টেমে একটি ভূমিকা পালন করতে পারবো।
ক্লাউডওয়েলে এএফএফ’র বিনিয়োগকে আমরা দুইভাবে যাচাই করতে পারি, প্রথমত পেওয়েল একটি পরীক্ষিত, গ্রহনযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য সমাধান। আর দ্বিতীয়ত বাংলাদেশের ৩০ মিলিয়নের বেশী মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদেরকে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে সেবা গ্রহনের সম্ভাবনা দেখাতে পারে পেওয়েল। আইআইএম এশিয়া প্যাসিফিক লিমিটেডের স্বত্বাধিকারীদয় উপল রহমান এবং শুভ রহমান এই চুক্তি নিয়ে দেশীয় এই টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানকে এভাবেই প্রশংসা করেছেন।
প্রসঙ্গত, পেওয়েল হচ্ছে ক্লাউডওয়েল লিমিটেডের একটি সার্ভিস ডেলিভারি ব্র্যান্ড, যা মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাঠ পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক পেমেন্টের সুবিধা, নির্ভরযোগ্যতা এবং নিরাপত্তাসমুহকে সারা দেশের মানুষের কাছাকাছি নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এই প্ল্যাটফর্মের ব্যাক-এন্ড সফটওয়্যার এবং সব ফ্রন্ট-এন্ড অ্যাপস কোম্পানির নিজস্ব প্রযুক্তিতে বানানো এবং পুরোপুরি স্বত্বের অধিকারী। যে কারণে পেওয়েল সার্ভিস দেশের বিশাল মার্কেটপ্লেসের ভোক্তাদের জন্য পণ্য, সেবা সাশ্রয়ী করতে পারে।
২০১২ সালে যাত্রা করা এ প্রতিষ্ঠানের প্রথম দিকেই লক্ষ্য ছিল পেওয়েলের মাধ্যমে একটি কেন্দ্রীয়ভাবে সংগঠিত রিটেইল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা। যার ফলে দেশের ইউটিলিটি, টেলিকম, ফিনানশিয়াল সার্ভিস, পরিবহন, খুচরা ও ইকমার্স খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহজ লেনদেনের সুবিধা প্রদান করা যায়।
পেওয়েলের বিভিন্ন আউটলেটে অবস্থিত পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) এর মাধ্যমে ক্রেতারা বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস যেমন, মোবাইল এয়ারটাইম টপআপ, ইউটিলিটি বিল পেমেন্ট, বাস কিংবা ট্রেনের টিকেট ক্রয় নগদে অথবা মোবাইল ফিনানশিয়াল সার্ভিস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারে। ইতিমধ্যেই প্রায় দেশের ৩৪ টি জেলায় ৫০০০ এজেন্টের নেটওয়ার্ক বসিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
যার বেশির ভাগই বড় শহর গুলোর বাইরে অবস্থিত। ক্রমবর্ধমান এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারা ক্ষুদ্র বাণিজ্যিক উদ্যোগের অনুঘটক পাশাপাশি গ্রামীণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশীদার হতে চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৬
এসজেডএম