ঢাকা: রাত বারটার আগেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে মোবাইল আপারেটগুলোর কাস্টমার কেয়ার।
মঙ্গলবার (৩১ মে) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল এবং সিটিসেল কাস্টমার কেয়ার ঘুড়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
এর ফলে নির্ধারত সময়ে কাস্টমার কেয়ারে এসোও নিবন্ধন করতে না পেড়ে হতাশ হয়ে ফেরেন গ্রাহকরা। এতে গ্রাহকরা ও কোম্পানি উভয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
তারপরও নির্ধারিত সময়ের আগেই কাস্টমার কেয়ারগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের পরেও অনেক স্থানে ছাতার নিচে এবং এজেন্টের দোকানগুলোতে সিম নিবন্ধন করতে দেখা গেছে।
সরকার ঘোষিত নিয়ম অনুসারে মঙ্গলবার রাত ১২টা বায়োমেন্ট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করার জন্য কাস্টমার কেয়ারগুলো খোলা রাখার কথা। কিন্তু গুলশানের কাস্টমার কেয়াগুলো রাত সোয়া ১০টার দিকে নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ১১টায় গুলশান ১ এবং ২ নম্বরের মধ্যে অবস্থিত গ্রামীণফোনের কাস্টমার কেয়ারটিতে দেখা যায়, গেইটে দাঁড়িয়েছেন আছেন নিরাপত্তা কর্মী মনিরুজ্জমান মনির ও দিপ্ত। তারা জানান, রাত ১০টার পরই এই কাস্টমার কেয়ার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এসময় এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, দিনে ভিড় থাকার কারণে তিনি রাতে এসেছেন। কিন্তু রাত সাড়ে ১০টায় এসেও তিনি কাস্টমার কেয়ারগুলো কার্যক্রম বন্ধ দেখেন। তিনি বলেন, রাত ১২ টা পর্যন্ত কাস্টমার কেয়ার খোলা থাকবে বলেই এসেছিলাম। এখন কি করবো?
এরপর গুলশান ১ নম্বরের বাংলালিংকের কাস্টমার কেয়ারে দু’জন নিরাপত্তা প্রহরীরকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে নিরাপত্তা প্রহরীদের সুপারভাইজার রেজাউল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১০টায় কাস্টমার কেয়ার বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গুশলান ২ নম্বরে অবস্থিত কাস্টমার কেয়ারটিও বন্ধ দেখা যায়। এখানকার নিরাপত্তা প্রহরী আল আমিন জানান, দিনের বেলা অনেক ভিড় থাকায় রাত ১০টার দিকেই সিম নিবন্ধনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
একই দৃশ্য বনানীতে অবস্থিত দুটি ওয়ারিদ টেলিকমের কাস্টমার কেয়ারেও। এখানকার নিরাপত্তা কর্মী আব্দুর রাজ্জাক জানান, সোয়া ১১টায় দিকে কাস্টমার কেয়ারের স্যারেরা চলে গেছেন।
মহাখালীতে অবস্থিত সিটিসেলের অফিস বন্ধ থাকার বিষয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মী রফিকুল ইসলাম জানান, ১১টায় তাদের অফিস বন্ধ করা হয়েছে। ফলে তামিমের মতো যারা রাতে সিম নিবন্ধন করতে এসেছেন তারা সবাই হতাশ হয়ে ঘরে ফিরেছেন।
এরপর রবি প্রধান অফিসের গিয়ে যেতেই এখানকার নিরাপত্তা কর্মী জানান, প্রধান কার্যালয়ে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম রাত ১০টায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে উদয় টাওয়ারে অবস্থিত কাস্টমার কেয়ারটি খোলা রয়েছে। এখানে গিয়ে কাস্টমার কেয়ারের ম্যানেজার আহমেদ উল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, নিয়ম অনুসারে রাত ১২টা পর্যন্ত তাদের কাস্টমার কেয়ার খোলা রাখবেন তিনি। এর মধ্যে যত গ্রাহক আসবে তাদের সিম নিবন্ধন করা হবে। তিনি বলেন, এই শাখায় দিনে প্রায় ১৩শ সিম নিবন্ধন হয়েছে।
এই শাখায় সিম নিবন্ধন করতে আসা ডা. মোরশেদ আহমেদ ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি মনে করেছিলাম নতুন করে আবারও সময় বাড়ানো হবে। তাই ভিড়ের সময় না এসে এখন এসেছি। খুব অল্প সময়ে সিমটি নিবন্ধন করতে পেরেছি। তবে ১১টায় সিটিসেল কাস্টমার কেয়ারে গিয়েও সিটিসেলের কাস্টমার কেয়ার বন্ধ থাকায় রিমটি নিবন্ধন করতে পারেননি।
তিতুমীর কলেজের বিপরীত পাশে ছাতার নিচে গভীর রাত পর্যন্ত সিম নিবন্ধন করেন রাকিব আহসান। রাত সাড়ে ১২টার পর নিবন্ধন করা মহিউদ্দিন সবুজ বাংলানিউজকে জানান, ব্যবসায়ীক কাজের কারণে দিনে নিবন্ধন করতে না পারায় রাতে নিবন্ধন করেছেন।
উল্লেখ্য, সরকার পক্ষ থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের জন্য ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় সময় ১ মাস বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। শেষ দিনে নিবন্ধন পয়েন্টগুলোতে গ্রাহকদের ভিড় ছিলো চেখে পড়ার মতো।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
এমএফআই/ওএইচ/