ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিজের নামে কোনো মোবাইল সিম নিবন্ধিত নেই বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
সাধারণ জনগণ কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করলেও একটি বড় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন হিসেবে সিম নিবন্ধিত না করায় দুঃখ পেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী তারানা।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে রোববার (০৫ জুন) সচিবালয়ে মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
গত ৪ জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে ১১ কোটি ৬০ লাখ সিম পুনঃনিবন্ধিত হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, লাইনে দাঁড়িয়ে দিনের পর দিন কষ্ট করে সাধারণ জনগণ তাদের সিম নিবন্ধন করেছেন।
‘আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনঃনিবন্ধন করেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছেন, তিন বাহিনীর প্রধান করেছেন, সব মন্ত্রী করেছেন, প্রতিমন্ত্রী করেছেন, মাননীয় স্পিকার করেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা (সজীব ওয়াজেদ জয়) করেছেন, সব সচিব করেছেন, সেনা বাহিনীর সদস্যরা করেছেন। ’
বিএনপি চেয়ারপারসন বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন না করায় খালেদা জিয়ার সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তারানা হালিম।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তারানা হালিম বলেন, একটা দেশের বড় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন, তার কাছে আরও বেশি সচেতনতা আশা করে জনগণ। ১১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ যে কষ্টটা করেছেন, সে কষ্টটা উনি কেন করতে পারেননি, এটা একটু হতাশ করেছে।
‘আমরা আশা করেছিলাম একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন হিসেবে খালেদা জিয়া বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করে একজন সচেতন নাগরিকের ভূমিকা পালন করবেন। এখানে আমরা একটু কষ্ট পেয়েছি, একটু হতাশ হয়েছি যে যেহেতু তিনি করেননি, তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তিনি করলে আমরা খুশি হতাম। ’
তারানা হালিম বলেন, তিনি এখনও পুনঃনিবন্ধন করিয়ে নিতে পারেন, সেক্ষেত্রে নিয়ম সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাকে সিমটি কিনে নিতে হবে। যথাযথ ট্যাক্স দিয়ে নিতে হবে, অথবা অপারেটররা যে সুযোগ দিয়েছিলেন ৪ জুন, সেই সময়ে করলে বিনা পয়সায় করতে পারতেন। বোধ হয় সেই সুযোগটিও তিনি গ্রহণ করেননি, তিনি সিম কিনে নিতে পারেন। নিয়ম সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য।
‘ব্যক্তিক ইনফরমেশন দিতে চাই না, সেজন্য একটু ‘ভেগভাবে’ বলে রাখি, যেহেতু ওনার নিজস্ব নামে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করা নেই, নিয়ম সবার ক্ষেত্রেই সমভাবে প্রযোজ্য। এখানে যদি কোনো মন্ত্রীও থাকতেন, এ নিয়মই প্রযোজ্য হতো। পুনঃনিবন্ধন না করায় সিমটি ডিঅ্যাক্টিভ হয়ে যাবে। তার সুযোগ থাকছে তিনি টাকা দিয়ে সিমটি কিনে নিতে পারেন এবং আবার বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনঃনিবন্ধনের মাধ্যমে সিমটি চালু করতে পারেন। ’
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩১ মে আঙুলের ছাপ দিয়ে পুনঃনিবন্ধনের কার্যক্রম শেষ হয়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ১১ কোটি ২১ লাখ সিম পুনঃনিবন্ধিত হয়েছে। ৩১ মে’র পর সব অনিবন্ধিত সিম বন্ধ হয়ে গেছে। অপারেটররা নিজেরা সরকারকে অর্থ পরিশোধ করে বন্ধ সিম পুনঃনিবন্ধন করে চালু করে দিচ্ছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি’র সর্বশেষ এপ্রিল মাসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মোট গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৪৯ হাজার।
টেলিযোগাযোগ সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, ভাইস-চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিনিধি এবং টেলিযোগাযোগ বিভাগের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
**বায়োমেট্রিকে ১১ কোটি ৬০ লাখ সিম নিবন্ধিত, তারানার ধন্যবাদ
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৬
এমআইএইচ/জেডএস