বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি) এবং সায়েন্স ফোরাম ২১ এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা, গোপালগঞ্জ, বগুড়া, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ এবং নোয়াখালীতে ‘চিলড্রেন সায়েন্স ওয়ার্ল্ড (সিএসডাব্লিউ)’ এর ১০টি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
গত ১১ মে থেকে শুরু হয়ে ৬ জুন পর্যন্ত চলা এই আয়োজনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, বিজ্ঞানী এবং বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহনকারী এসব জেলার দশটি স্কুলের প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর সামনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তৃতা করেন।
বগুড়ার প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে সিএসডাব্লিউ এর প্রথম পর্বে ‘ইলেকট্রনিক্স: ব্যাকবোন অব দ্য মর্ডান এরা’ নিয়ে বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লেকচারার মোঃ রেজাউল ইসলাম।
বক্তৃতায় ইলেকট্রনিক্সের প্রাথমিক ধারণা, পরমাণু এবং তার শক্তিস্তর, সেমিকন্ডাক্টর, ট্রানজিস্টর, লাইট এমিটিং ডায়োড (এলইডি), কম্পিউটারের লজিক, মেশিন ল্যাংগুয়েজ, প্রোগ্রামি্ং, আগামী দিনে ইলেক্ট্রনিক্সের চ্যলেঞ্জ সহ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বটি অনুষ্ঠিত হয় দিনাজপুরের চেরাডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয়ে। এতে ‘ আইসিটি ইন আওয়ার ডেইলি লাইফ’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আহসান হাবীব।
তৃতীয় পর্বে ঢাকার বারিধারার মার্টিন লুথার কলেজে ‘ন্যানোটিকনোলজিক্যাল: এ ব্রিজ টু দ্য ফিউচার’ নিয়ে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এম নূরুজ্জামান খান। ন্যানোটেকনোলজি কী, প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহার, প্রকৃতি থেকে অনুপ্রাণিত বিভিন্ন ন্যানোটেক, যেমন সেলফ ক্লিনিং ম্যাটেরিয়াল, ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে বর্তমান গবেষণা সহ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে ড. নূরুজ্জামান আলোচনা করেন।
চতুর্থ ও পঞ্চম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় গোপালগঞ্জের শেখ হাসিনা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। ‘দ্য এজ অব আইসিটি রেভুলেশন’ নিয়ে পর্ব দুটিতে কথা বলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক সজল হালদার। বর্তমান যুগে তথ্যপ্রযুক্তির বিস্তৃত ব্যবহার, ইন্টারনেট, সার্চ ইঞ্জিন, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ, সাইবার ক্রাইম, কম্পিউটার এবং মোবাইল ফোনের বিভিন্ন ধরণের অপারেটিং সিস্টেম, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের ধারণাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় আয়োজন দুটিতে।
ময়মনসিংহের জিলা পরিষদ উচ্চ বিদ্যালয় ও মুগালটুলা উচ্চ বিদ্যালয়ে সিএসডাব্লিউ এর ষষ্ঠ ও সপ্তম পর্ব আলোচনা করা হয় ‘সায়েন্টেফিক ইনভেনশন ইন টোয়েন্টিথ সেন্চুরি।
ফ্রিল্যান্স আইটি ল্যাব, ময়মনসিংহের সিইও প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান এতে বক্তা হিসেবে গত শতাব্দীর প্রধান প্রধান বৈজ্ঞানিক আবিস্কারগুলো এবং বিজ্ঞানীদের অবদান নিয়ে এতে আলোচনা করা হয়। এছাড়া আমাদের চারপাশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার, বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা এবং গবেষণা করার পেছনের কারণগুল নিয়ে কথা বলে তিনি।
নোয়াখালীর অরুণ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয় এবং নোয়াখালী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে চিলড্রেন সায়েন্স ওয়ার্ল্ডের শেষ তিন পর্বের বিষয় ছিল ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স: ফিউচার অব দ্য কম্পিউটিং, শেপিং দ্য ফিউচার অব দ্য ওয়ার্ল্ড এবং কম্পিুটারস: এ মেশিন বিয়ন্ড ইমেজিনেশন’।
চিলড্রেন সায়েন্স ওয়ার্ল্ডের প্রতিটি পর্বেই মূল বক্তৃতার পর শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল। বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের জন্য ছিল পুরস্কারের ব্যবস্থা।
পুরো এই আয়োজনের সমন্বয়ের কাজ করেছে টিম এসপিএসবির সদস্যবৃন্দ। পুরো আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল পাই নেট, জাপান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৬
এসজেডএম